মুনির হোসেন : অস্থির সময় পেরিয়ে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। ছাত্ররাজনীতির আঁতুড়ঘর মধুর ক্যান্টিনে নেতাকর্মীদের ভিড় নেই। ক্লাস-পরীক্ষার সময় উচ্চশব্দের রাজনৈতিক স্লোগান নেই। নবাগত শিক্ষার্থীদের জোর করে নেতাকে প্রটোকল দেয়া ও রাজনৈতিক কর্মসূচিতে নিয়ে যাচ্ছে না কোনো ছাত্রসংগঠন। হলগুলোতে বন্ধ গেস্টরুম ও গণরুম কালচার। শিক্ষাসূচি চলছে স্বাভাবিক গতিতে। সব মিলিয়ে নতুন এক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দেখছেন শিক্ষার্থীরা।
এতদিন অপরাজনীতির যে শৃঙ্খল তাদের বন্দি রেখেছিল সেই দৃশ্য থেকে মুক্ত তারা। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরই এভাবে বদলে গেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চিত্র। তবে সংকট রয়েছে কোথাও কোথাও। বিগত সরকারের সুবিধাভোগী ও অনিয়মের সমর্থনকারী অর্ধশতাধিক শিক্ষককে বয়কট করেছেন শিক্ষার্থীরা। তাই কোনো কোনো কোর্সে পাঠদানে বিঘ্ন ঘটছে। এ ছাড়া যাদের প্রত্যক্ষ মদতে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা হয়েছে সেসব শিক্ষক ও হামলাকারী ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে নেয়া হয়নি কোনো ব্যবস্থা। অন্যদিকে ছেলেদের হল থেকে মেয়াদোত্তীর্ণ ও বহিরাগতদের বের করে দেয়ায় আবাসন সংকট অনেকটা কেটে গেলেও মেয়েদের হলে বরাবরের মতোই প্রকট রয়েছে আবাসন সংকট।
ছাত্ররাজনীতি থাকবে কি থাকবে না সে বিষয়ে ব্যাপক আলোচনা হলেও শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া ও শিক্ষক রাজনীতির বিষয়ে আলোচনা নেই। এ ছাড়া নতুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন কী হবে তা নিয়েও তেমন কোনো আলোচনা হচ্ছে না। এ নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। অন্যদিকে ফজলুল হক মুসলিম হলে তোফাজ্জল হোসেন নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা দেশব্যাপী ব্যাপক আলোচনা সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছেন, তারা শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রমকে সবচেয়ে গুরুত্ব দিচ্ছেন। শিক্ষার পরিবেশ বজায় রাখতে সব ধরনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। একইসঙ্গে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে সম্পর্ক বৃদ্ধির লক্ষ্যে কাজ করছে প্রশাসন। শিক্ষার্থীরাও পড়া-লেখায় মনোযোগী হচ্ছে। নতুন হল নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। ছাত্ররাজনীতির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে গঠন করা হবে কমিটি।
পহেলা জুলাই সর্বজনীন পেনশন স্কিম নিয়ে আপত্তি জানিয়ে শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কর্মবিরতিতে গেলে বন্ধ হয়ে যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম। এরপর ৫ই জুলাই থেকে কোটা নিয়ে উচ্চ আদালতের দেয়া রায়ের প্রতিক্রিয়ায় শিক্ষার্থীরাও অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে। অচলাবস্থা সৃষ্টি হয় দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠে। পরবর্তীতে উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে ১৫ই জুলাই শিক্ষার্থীদের ওপর নির্বিচারে হামলা চালায় ছাত্রলীগ। ক্যাম্পাসে মোতায়েন হয় পুলিশ। ১৬ই জুলাই রংপুরে আবু সাঈদসহ সারা দেশে পুলিশের গুলিতে ৬ শিক্ষার্থীকে হত্যার পর আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। ওইদিন রাত থেকে পরদিন সকাল পর্যন্ত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থীরা ছাত্রলীগকে হলছাড়া করে। ভাঙচুর করা হয় সংগঠনটির নেতাদের কক্ষ। ক্যাম্পাসে মোতায়েন করা হয় কয়েক হাজার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় ১৭ই জুলাই সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের জরুরি সিন্ডিকেট সভায় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেয়া হয় বিশ্ববিদ্যালয় ও হলগুলো।
ওইদিন পুলিশের সঙ্গে কয়েক দফা সংঘর্ষে অনেকটা কোণঠাসা হয়ে পড়ে শিক্ষার্থীরা। সন্ধ্যার মধ্যে হল ছাড়তে বাধ্য হয় শিক্ষার্থীরা। ছাত্র-জনতার রক্তস্নাত বিপ্লবে ৫ই আগস্ট পতন হয় শেখ হাসিনা সরকারের। এরপরই খুলে দেয়া হয় হলগুলো। যদিও আগ থেকেই হলগুলোতে কিছু শিক্ষার্থী থাকা শুরু করে। পদত্যাগ করেন ভিসি প্রফেসর ড. এএসএম মাকসুদ কামাল। প্রফেসর ড. নিয়াজ আহমেদ খানের নেতৃত্বে দায়িত্ব নেয় নতুন প্রশাসন। কয়েক দফায় ডায়ালগ শেষে দীর্ঘ বিরতির পর ২২শে সেপ্টেম্বর প্রথম বর্ষ ব্যতীত অন্যসব শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর ৩০শে সেপ্টেম্বর প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদেরও ক্লাস চালু হয়। একে একে অনুষ্ঠিত হতে থাকে আটকে থাকা বিভিন্ন মিডটার্ম ও ইনকোর্স পরীক্ষা।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব হলে থাকা গণরুম বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। তাড়ানো হয়েছে বহিরাগতদের। মেয়াদোত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদেরও নোটিশ দিয়ে হল ছাড়ার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী ছেলেদের হল থেকে ২০১৬-১৭ সেশন পর্যন্ত হলে থাকা শিক্ষার্থীরা হল ছেড়ে দিয়েছেন। আর ২০১৭-১৮ সেশনকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় দেয়া হয়েছে কোনো কোনো হলে। হলে সবার জন্য পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখা বাধ্য করা হয়েছে। এলোটেড শিক্ষার্থীদের ডাটাবেজ তৈরি করা হয়েছে। কেন্দ্রীয়ভাবেও এটি মনিটরিং করা হচ্ছে। আবাসিক শিক্ষকদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালনের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। ভিসিসহ প্রশাসনের শীর্ষ ব্যক্তিরা হলে হলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের কথা শুনছেন। তাদের সমস্যা সমাধানে উদ্যোগী হয়েছেন। ভিসি নিজেও সকাল সকাল হলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের খোঁজ নিতে দেখা গেছে। ক্যান্টিনগুলোতে খাবারের মান বাড়ানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। রিডিংরুমকে আরও আধুনিকায়নের পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে।
অন্যদিকে ছাত্ররাজনীতি চলবে কি চলবে না সে বিষয়ে রয়েছে নানা মত। এমতাবস্থায় ছাত্ররাজনীতির ধরন কী হবে তা নির্ণয়ে একটি কমিটি গঠন করা হচ্ছে। যে কমিটির পরমর্শের ভিত্তিতে ছাত্ররাজনীতির বিষয়ে রূপরেখা দেয়া হবে। ভারসাম্য আনা হচ্ছে ভিসিসহ প্রশাসনের অন্য দায়িত্বশীলদের ক্ষমতার। এদিকে ১৫ই জুলাই শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারী শিক্ষক ও ছাত্রলীগ নেতাদের বিরুদ্ধে এখনো কোনো ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন। একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হলেও তার অগ্রগতি নিয়েও সন্তুষ্ট নয় শিক্ষার্থীরা। এরইমধ্যে বিভাগগুলোতে ক্লাস পরীক্ষায় অনেক অপরাধী অংশ নেয়ায় ক্ষোভ রয়েছে শিক্ষার্থীদের মধ্যে। কিছুটা অস্থিরতা রয়েছে প্রশাসনিক ভবনেও।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি, প্রো-ভিসি (প্রশাসন), প্রো-ভিসি (শিক্ষা) এবং ট্রেজারাররা প্রশাসনিক দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি নিজ নিজ বিভাগ/ ইনস্টিটিউটে ক্লাস নিতে পারবেন। শিক্ষা কার্যক্রমে এ ধরনের অংশগ্রহণ প্রশাসন এবং শিক্ষার্থীদের মধ্যে আন্তঃসম্পর্ক উন্নয়নের পাশাপাশি জ্ঞানচর্চার প্রক্রিয়াকে উৎসাহিত করতে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সেশনজট নিরসন ও একাডেমিক কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার স্বার্থে ১৭ দিন কমিয়ে আনা হয়েছে শীত ও গ্রীষ্মকালীন ছুটি।
শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের প্রভোস্ট ড. ফারুক শাহ বলেন, হলে আবাসন সংকটই ছিল আমাদের প্রধান সমস্যা। এর মূলে ছিল মেয়াদ উত্তীর্ণ ও বহিরাগতদের হলে অবস্থান। এখন সেটি নেই বললেই চলে। বৈধ ছাত্রদের সিট দিতে পেরেছি। খাবারের দোকানে তালিকা করে দিয়েছি। বৈচিত্র্যতা যেন তাদের খাবার তালিকায় থাকে। সতর্ক করার পরও মানসম্মত খাবার পরিবেশনে ব্যর্থ হওয়ায় দুটি ক্যান্টিনের পরিচালনার দায়িত্ব থাকা প্রতিষ্ঠান পরিবর্তন করা হয়েছে। রিডিংরুমগুলোকে ঠিক করা হয়েছে। পুরো হলকে ২০টা সিসিটিভির মাধ্যমে সার্ভিলেন্স করা হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের বৈধ আইডি কার্ড দেয়া হয়েছে। মসজিদ সংস্কার, ফ্লোরে ফ্লোরে পানির ফিল্টার স্থাপন, অবকাঠামোগত সংস্কারসহ এক্সট্রাকারিকুল্যাম এক্টিভিটিস বাড়ানোর চেষ্টা করছি। সব মিলিয়ে হলকে পরিবেশগতভাবে বাসযোগ্য করে তোলার চেষ্টা করছি আমরা।
সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর রাশেদা ইরশাদ নাসির বলেন, আমার অনুষদের ১৬টি বিভাগেই ক্লাস শুরু হয়েছে। কোনো কোনো বিভাগে পরীক্ষাও চালু হয়েছে। কিছু বিভাগে যেসব ক্রাইসিস আছে সেগুলো সম্মিলিতভাবে সমাধানের উদ্যোগ নিয়েছি। কোনো কোনো বিভাগে দ্বন্দ্ব নিরসনে কমিটিও করে দেয়া হয়েছে। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় সে গ্যাপ হয়েছে তা বিভাগ ও কেন্দ্রীয়ভাবে পূরণ করার চেষ্টা করে যাচ্ছি। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা যে ট্রমার মধ্যদিয়ে গিয়েছে সেগুলো রিকভারই আমাদের প্রায়োরিটি। সেক্ষেত্রে কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে তাদের এই ট্রমাটাইজড সিচ্যুয়েশন থেকে আমরা বের করে আনতে চাই। প্রয়োজনে খেলাধুলা, শরীর চর্চার মতো কাজে তাদেরকে যুক্ত করতে চাই।
বাংলাদেশ কুয়েত-মৈত্রী হলের শিক্ষার্থী আরিফা আক্তার আশা বলেন, মেয়েদের হলে আবাসন সংকট নতুন বিষয় না। বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে ছাত্রী সংখ্যা ছাত্রদের তুলনায় কম নয়, বরং বেশি। অথচ তাদের জন্য হল মাত্র ৫টি। এর মধ্যে বাংলাদেশ কুয়েত-মৈত্রী হলে ৩য়, ৪র্থ বর্ষেও রেফারেন্স ছাড়া সিট পাওয়া যায় না। অন্য হলে যখন সিটের জন্য ১ম কল, ২য় কল হতে থাকে তখন মৈত্রী হলে আবেদনের নোটিশই দেয়া হয় না। কুয়েত-মৈত্রী, বঙ্গমাতা, শামসুন্নাহার হলের অধিকাংশ মেয়ে অন্যান্য হলে গণরুমে থাকতো। অন্য হলে থাকার একটি কারণ হলো সেইসময়ে নিজ হলে রাজনৈতিক দখলদারিত্বের গণরুমে থাকলে সে বৈধ সিট পাওয়ার পরও রাজনীতি করতে হতো। জুলাই বিপ্লবের পর গণরুমে থাকা ছাত্রীরা তাদের মাথাগোঁজার জায়গাটুকুও হারিয়েছে। যার সংখ্যা একদমই কম না, প্রতি হলে ৫০০-৬০০ করে মেয়ে গণরুমে ছিল। এই মেয়েদের ২০%কে হলে জায়গা দেয়ার মতো সিট প্রশাসনের কাছে নেই। তিনি বলেন, আমরা গণরুম সংস্কৃতিতে আর ফিরে যেতে চাই না। আমরা চাই মেয়েদের সিট সংকট দূর হোক, যাতে মেয়েদের অসহায়ত্বকে কাজে লাগিয়ে কোনো ক্ষমতাসীন দল মেয়েদের না খাটাতে পারে। হল নির্মাণ সময়সাপেক্ষ ব্যাপার কিন্তু ভবন ভাড়া করে সমস্যা আপাতত সমাধানের জন্য বলেছি। প্রশাসন রাজি হয়নি। তারা ৩০০ সিট বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।
বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের ২০২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী অনন্যা বলেন, আন্দোলনের আগে অনেকে পলিটিক্যালি গণরুমে থাকতো, কিন্তু সেই সিটগুলো এখন নাই। অনাবাসিক অনেক মেয়ে আছে যারা নিজে নিজের খরচ চালায় একইসঙ্গে ফ্যামিলির খরচও চালায়। তারা যে দুয়েক মাস অপেক্ষা করবে সেই সিচুয়েশনটাও নাই। ইমিডিয়েট সিটের জন্য আমরা প্রশাসনের কাছে প্রস্তাবনা দিয়েছি।
বর্তমান প্রশাসনের কার্যক্রম নিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও কবি সুফিয়া কামাল হলের আবাসিক ছাত্রী উমামা ফাতেমা বলেন, নতুন প্রশাসন শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে আন্তরিক মনে হচ্ছে। তবে তাদের কাছে বর্তমানে ছাত্ররাজনীতি থাকবে কি থাকবে না এ বিষয়টা যে রকম মুখ্য বিষয় হয়ে উঠেছে সেভাবে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া বা শিক্ষক রাজনীতি কী রকম হবে সেসব বিষয়ে আলোচনা নেই। শিক্ষকরা কতোটুকু নিজেদের রাজনীতিকীকরণ করবেন তার ওপরই নির্ভর করে ক্যাম্পাসে শিক্ষার পরিবেশ কেমন হবে। এ ছাড়াও ১৫ই জুলাইয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি হলেও এখনো তার অগ্রগতি দেখছি না। হামলাকারীদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। আবার যে সকল শিক্ষক এসব হামলায় মদত দিয়েছেন তাদের ব্যাপারেও কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। হামলাকারীরা নতুনভাবে ফিরে আসছে। তারা ক্লাস করছে, পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। প্রশাসন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়ে আন্তরিক নয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি (প্রশাসন) প্রফেসর ড. সায়মা হক বিদিশা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস-পরীক্ষা পুরোদমে শুরু হয়েছে। ছাত্র-শিক্ষকদের সঙ্গে সম্পর্ক বৃদ্ধির জন্য কাজ করছি। সেক্ষেত্রে আমরা সিনেটে তাদের সঙ্গে বসেছি। এ ছাড়া বিভাগ ও হল পর্যায়েও কথা শোনার উদ্যোগ নিয়েছি। যেটি আমরা সারা বছর জারি রাখতে চাই, যে শিক্ষার্থীরা তাদের সমস্যাগুলো আমাদের জানাতে পারে। শিক্ষার্থীরা তাদের যেসব প্রত্যাশা আমাদের জানিয়েছে আমরা সেগুলো হল প্রভোস্টদের দিয়েছি। তারা যেন সেগুলো সমাধান করেন বা যেসব বিষয়ে আমাদের সহায়তা লাগবে সেসব বিষয়ে অবহিত করেন।
সুত্র : মানবজমিনে প্রকাশিত কলাম
আপনার মতামত লিখুন :