শিরোনাম
◈ ড. ইউনূসকে নিয়ে ১০ বছর আগে যা বলেছিলেন নরেন্দ্র মোদি ◈ জামায়াত কাদের সঙ্গে জোট করবে, জানালেন সেক্রেটারি গোলাম পরোয়ার ◈ ৫৩ বছর দেখেছি, আমরা আরও দু-এক বছর ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারকে দেখতে চাই:  নুরুল হক (ভিডিও) ◈ নবীনগরে বিপনী মার্কেটে আগুন, পুড়ে ছাই ১২ দোকান ◈ ‘ওরেশনিক’ রাশিয়ার নতুন ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে যা জানা গেল ◈ ফেসবুকে দাবি ‘মুগ্ধ ও স্নিগ্ধ একই ব্যক্তি’, যা বলছে ফ্যাক্ট চেক ◈ মাগুরায় উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগ সভাপতি গ্রেপ্তার ◈ জয়নাল থেকে বনে গেছেন ডা.আরিফ, নেই কোনো শিক্ষাগত যোগ্যতা (ভিডিও) ◈ গুমের বিচার ও গুম বিলুপ্ত করা আমাদের টপ প্রায়োরিটি : প্রেস সচিব ◈ ঢাকা মহানগরীতে মহাদুর্ভোগ

প্রকাশিত : ০১ অক্টোবর, ২০২৪, ০৪:২৭ দুপুর
আপডেট : ২০ নভেম্বর, ২০২৪, ০১:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ করার পক্ষে-বিপক্ষে যুক্তি

এম এইচ বাচ্চু : সরকারি চাকরিতে প্রবেশে আবেদনের বয়সসীমা ৩৫ বছর করা নিয়ে আবারও শুরু হয়েছে আলোচনা। বৃদ্ধির বিষয়ে একটি কমিটি গঠন করেছে সরকার। এই কমিটির প্রধান করা হয়েছে সাবেক সচিব আব্দুল মূয়ীদ চৌধুরীকে, যিনি জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান। কমিটির সদস্য সচিব জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব। এই কমিটি আগামী ৭ দিনের মধ্যে পরামর্শ দেবে।

চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর করার দাবিতে দীর্ঘ দিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন একদল চাকরিপ্রত্যাশী। ছাত্রজনতার আন্দোলনের মুখে দেশে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর কয়েক দফায় কর্মসূচি পালন করেছেন তারা। সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কয়েক শত চাকরি প্রত্যাশী শাহবাগে সমবেত হন। এক পর্যায়ে তারা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে এসে অবস্থান নেন। দুপুরে তাদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে পুলিশ। এরপর গঠন করা হয় কমিটি।

চাকরিপ্রত্যাশীদের পাশাপাশি শিক্ষাবিদ, বিশ্লেষকরাও এ নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে দেখাচ্ছেন নানা যুক্তি। গত বছরের ১১ মে আন্দোলনকারীদের এই দাবি প্রসঙ্গে তৎকালীন জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন সংসদে জানিয়েছেন, সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা বাড়ানোর বিষয়টি সরকারের নীতিগত সিদ্ধান্তের বিষয়। আপাতত বয়সসীমা বাড়ানোর কোনো সিদ্ধান্ত সরকারের নেই। তবে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এ বিষয়ে আরও আলাপ-আলোচনা করা হবে। আলোচনা-পর্যালোচনা করে ভবিষ্যতে বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে। 

চাকরিপ্রত্যাশীরা বলেন, ১৯৯১ সালে দেশে চাকরির আবেদনের বয়সসীমা ২৭ বছর থেকে ৩০ বছরে করা হয়। তখন গড় আয়ু ছিল ৫৭ বছর। এখন গড় আয়ু বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৩ বছরে। গড় আয়ু বাড়লেও চাকরিতে আবেদনের সর্বোচ্চ বয়সসীমা বাড়েনি। 

ভারতে রাজ্যভেদে ও চাকরির ধরন অনুযায়ী অবশ্য বয়সসীমা ভিন্ন। তবে প্রশাসনিক চাকরির ক্ষেত্রে ন্যূনতম বয়স ২১ বছর এবং সর্বোচ্চ বয়স ৩২ বছর। শারীরিক প্রতিবন্ধীদের ক্ষেত্রে বয়সসীমা ৪২ বছর। আবার অনগ্রসর শ্রেণির প্রার্থীদের ক্ষেত্রে বয়সের সর্বোচ্চ সীমা ৩৫ বছর।

শ্রীলঙ্কায় আগে সর্বোচ্চ বয়সসীমা ছিল ৩৫ বছর। ২০২০ সালে দেশটিতে বয়সসীমা বাড়ানো হয়েছে। বর্তমানে ৪০ বছর পর্যন্ত সরকারি চাকরিতে আবেদন করতে পারেন শ্রীলঙ্কানরা। নেপালে ন্যূনতম বয়স ১৮ বছর এবং সর্বোচ্চ ৩৫ বছর পর্যন্ত সরকারি চাকরিতে আবেদনের সুযোগ রয়েছে। তবে নারী ও প্রতিবন্ধীরা ৪০ বছর পর্যন্ত আবেদন করতে পারেন।

তবে পাকিস্তানে বাংলাদেশের মতোই সরকারি চাকরিতে বয়সের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩০ বছর। বিশেষ কোটার ক্ষেত্রে ৩২ বছর বয়সীরাও পাকিস্তানে সরকারি চাকরিতে আবেদন করার সুযোগ পান।

চাকরির বয়সসীমা বৃদ্ধির বিষয়ে মতামত জানতে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসের অফিসিয়াল ফেসবুক গ্রুপে একটি পোলের আয়োজন করা হয়েছিল। এতে দেখা যাচ্ছে, ৮৮ শতাংশ পাঠক চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ বছর করার পক্ষে। এর বিপক্ষে মত দিয়েছেন মাত্র ৩ শতাংশ।

অনেকে মনে করেন চাকরির বয়সসীমা বৃদ্ধি করলে বেতন-ভাতা বা খরচ খুব বেশি বাড়বে না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বয়সসীমা বাড়ালে সরকারের ব্যয় তো বাড়বেই। সেই সাথে প্রশাসনের কার্যক্রমেও অনেক জটিলতা তৈরি হতে পারে।
যারা বছরের পর বছর চেষ্টা করেও সরকারি চাকরিতে যোগদান করতে পারেননি বা যাদের সরকারি চাকরির বয়সসীমা প্রায় শেষের দিকে বা রাজনৈতিক কারণে যারা সরকারি চাকরির বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন, বয়সসীমা বাড়ানোটা আপাতদৃষ্টিতে তাদের জন্য একটা সুযোগ।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বাংলাদেশের তরুণদের সরকারি চাকরির প্রতি ঝোঁক এখন বেশি। চাকরিতে প্রবেশের বয়স আরও বৃদ্ধি করা হলে এই বিশাল কর্মক্ষম তরুণদের অনেকে ‘একদিন না একদিন সরকারি চাকরি হবে’ আশায় শেষ পর্যন্ত চাকরির প্রস্তুতি নিবে।

যদিও অর্থনীতিবিদ মোস্তাফিজুর রহমান এও মনে করেন, “সবাই সরকারি চাকরির আশায় বসে থাকে না। একটা চাকরির পরীক্ষা দিয়ে চাকরি না হলে তারা অন্য কোথাও হয়তো কাজ করে।”

ফেসবুকে  চাকরির বয়স ৩৫ নিয়ে অনেকেই মন্তব্য করেছেন, অনেকেই মনে করছেন চাকরিতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ হলে চাকরির বাজারে আপনাদের প্রতিযোগিতা বেড়ে যাবে, এটা সম্পূর্ণ ভুল,  কারণ আমরা জানি এবং মানি, আপনারা বাংলাদেশের সর্বোচ্চ মেধাবী,  আপনারা চাকরি করবেন পুলিশ, প্রশাসন ক্যাডারে,  ৩৫ এর আন্দোলন মূলত আমাদের মত পিছিয়ে পড়া ছাত্র সমাজের আন্দোলন, যাদের স্বপ্ন ছোটখাটো একটা সরকারি চাকরি। আপনারা দেশের সর্বোচ্চ মেধাবী আপনারা হবেন বি সি এস ক্যাডার, ৯ম গ্রেডের কর্মকর্তা, তাই ৩৫ হলে আপনাদের উপর কোনো প্রভাব পড়বে না।

বর্তমানে চাকরিতে আবেদনের বয়সসীমা ৩০ বছর, আপনারা লক্ষ্য করবেন যে ২৮ বছরের পর বিসিএস ক্যাডার হয় মাত্র ৪%।  একটা বয়সের পর  মাথা আর আগের মত কাজ করে না।তাই চাকরির  বয়স বাড়লেও ২৮ এর পরে ক্যাডারের সংখ্যা খুব বাড়বে না। তাই ঢাবির মেধাবী ভাইদের বলবো আমাদের বিরোধিতা না করে, আমাদের মতো অসহায়দের স্বপ্ন নিয়ে বাঁচার সুযোগ করে দিন, আপনাদের অসহায় ভাইদের পাশে থাকুন।

জাহিদ হাসান নামে একজন ফেসবুকে লিখেছেন, ধরে নিন চাকরির বয়স ৩৫ করা হলো কিন্তু ৩৫ এর বিতরে চাকরি না হলে পরে কি হবে সেটা কি যারা ৩৫ চাইতেছেন তারা কখনো ভেবেছেন? আর ৩৫ করলে যে শুধু আপনিই মাঠে থাকবেন তা কিন্তু না যারা সদ্য পাশ করে বের হবে তারাও কিন্তু থাকবে তাই সদ্য পাশ করাদের সাথে চাকরি যুদ্ধে পেরে উঠবেন কিনা সেটাও ভেবে দেইখেন ?

ফয়সাল জন নামে একজন ফেসবুকে লিখেছেন, ৩৫ বছর বয়সে এরা চাকরি চায়। ৩৪ বছর বয়সে আমি দুই বাচ্চার বাপ, বড় বাচ্চা ৮ বছর বয়স ক্লাস টু তে পরে। যেই লোক ৩৫ বছরে চাকরি চায় তার চাকুরির যোগ্যতাই নাই।  যদি বয়স বেশী নির্ধারিত করে বেকার তত বেশী হবে বয়স কম হবে বেকার কম হবে। 

সারমিন বিথি নামে নামে একজন ফেসবুকে লিখেছেন,  চাকরির বয়স যদি ৩৫ করা হয় তাহলে যে আপনি চাকরি পাবেন তার কি গ্যারান্টি আছে এসব আজাইরা দাবি না করে বাড়ির মালিকদের বাসা ভাড়া কমানোর জন্য আন্দোলন করেন। 

মিয়া সুজান নামে নামে একজন ফেসবুকে লিখেছেন,  সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ করা হোক। কারণ বিগত ১৬ বছরে যোগ্য মেধাবীদের বাদ দিয়ে শুধু দলীয় লোকদের চাকরি দেওয়া হয়েছে।

অ্যাড. সোমরাত পাহেলী নামে একজন ফেসবুকে লিখেছেন, সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ করা হোক। কারণ বিগত ১৬ বছরে যোগ্য মেধাবীদের বাদ দিয়ে শুধু ছাত্রলীগকে চাকরি দেওয়া হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়