জাবেদ আখতার এর ফেইসবুক পোস্ট থেকে নেয়া : এই ছবিটা গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর থেকে ভাইরাল হয়েছে। নামাজে ইমামতি করছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩০তম উপাচার্য হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত নতুন উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান। উনার নামাজে ইমামতি করা নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে ফেসবুকে পোস্ট দিচ্ছেন অনেকেই।
সব পক্ষই তাদের পোস্টে লিখছেন মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে মাগরিবের নামাজে ইমামতি করলেন নতুন উপাচার্য। সম্পূর্ণ ভুল তথ্য।
প্রকৃত বিষয়টি হচ্ছে, মাগরিবের নামাজে জামায়াতের সাথে নামাজ আদায় করতে পারেননি অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান। তিনি দেরিতে পৌঁছেছেন মসজিদে। ততক্ষণে জামায়াত শেষ হয়ে গেছে।
এখানে জামায়াত হচ্ছে মসজিদের বারান্দার শেষের দিকে। নিয়াজ স্যারের নেতৃত্বে সর্বোচ্চ ৩০ জন নামাজ আদায় করছেন। যেখানে বেশিরভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। স্যার যেহেতু নামাজ কালাম পড়া মানুষ, দাঁড়িও আছে, তাই সম্মান দেখিয়ে উপস্থিত অনেকেই তাঁকে ইমাম হিসেবে নামাজ পড়ানোর অনুরোধ জানিয়েছেন, স্যারও সরল মনে পড়িয়েছেন।
এখানে যারা নামাজ পড়ছেন, তাদের মধ্যে কোনো কুরআনের হাফেজ, মাওলানা বা মুফতি থাকলে, আমার ধারণা নিয়াজ স্যার ইমামতি করতেন না।
এই প্রথম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো উপাচার্য নামাজে ইমামতি করছেন। বিষয়টি ভিন্ন, এমন ঘটনা অস্বাভাবিক, তাই আগ্রহ নিয়ে মসজিদে উপস্থিত কেউ হয়তো ছবি তুলে ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন। জাস্ট এতটুকুই।
আরে ভাইরে, উনি তো মুসলিম, নামাজ পড়বেন বা পড়াবেন এটাই তো স্বাভাবিক। লোক দেখানোর জন্য ইমামতি করছেন অথবা তিনি জামায়াত লাইনের লোক, এসব কথা বলা একেবারে অযৌক্তিক।
নামাজ পড়লেই জামায়াত ইসলামীর আদর্শের মানুষ, এটাই যদি হয়, তাহলে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা ছিলেন জামায়াতের আমীরদের আমীর। কারণ, উনার এবং উনার দলের নেতাদের ভাষ্যমতে ৫ ওয়াক্তের পাশাপাশি তাহাজ্জুদ নামাজও আদায় করতেন তিনি।
মন্দির পাহারা দিয়ে ক্রেডিটও নিবেন, আবার নামাজে ইমামতি করলে বা নামাজ আদায় করলে, জামায়াতে ইসলামীর ট্যাগ দিবেন, এটা তো ঠিক না মুরব্বি।
এটা তো বৈষম্যমূলক আচরণ ও চিন্তার বহিঃপ্রকাশ। এর জন্যই তো বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন হয়েছিলো!
আবার নিজেদের রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য, কারো নামাজ পড়াকে ইস্যু করে টেকনিক্যালি আপনাদের (জামায়াত-শিবির করা কিছু কম বোঝা নেতাকর্মী) লাইনের মানুষ বলে প্রচার করবেন, এটাও চরম অন্যায়। এভাবে অনেক মানুষের ক্ষতি করেছেন আপনারা। আল্লাহর কাছে জবাব দেওয়া লাগবে না ?
নিজেরা বাম সেজে জামায়াত করবেন, ছাত্রলীগ সেজে শিবির করবেন, আর কোনো ভদ্রলোক নামাজ পড়লে, সময় বুঝে সেটার সদ্ব্যবহার করবেন, এসব তো হবে না! ট্যাগ লাগানোর দিন শেষ।
লেখক, জাবেদ আখতার সিনিয়র রিপোর্টার, এটিএন নিউজ
আপনার মতামত লিখুন :