শিরোনাম
◈ ব্যবসা করা একটা সংগ্রাম, এ সংগ্রামটা আমরা সহজ করব: ড. ইউনূস ◈ ‌আ.লীগ রাতে কালনাগিনী, দিনের বেলায় ওঝা: মামুনুল হক ◈ ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস, বন্যার শঙ্কা ৮ জেলায় ◈ বরগুনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ককে পেটালো অন্য পক্ষ ◈ সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহর মোবাইল ফোন চুরি ◈ বোন পরিচয়ে আল জাজিরায় কথা বলা সেই তরুণী কে, জানালেন উপদেষ্টা নাহিদ ◈ শিক্ষার্থী তাইম হত্যা: ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ বিচার দাবিতে  ◈ গণঅভ্যুত্থানে শহিদদের স্মরণে সেই সভা স্থগিত ◈ ভারতের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক ছাড়া আমাদের গত্যন্তর নাই, তাদেরও গত্যন্তর নাই: ডয়চে ভেলেকে ড. ইউনূস ◈ লেফটেন্যান্ট জেনারেল মজিবুর বরখাস্ত ও সাইফুল বাধ্যতামূলক অবসরে

প্রকাশিত : ১৪ আগস্ট, ২০২৪, ০৭:৩৪ বিকাল
আপডেট : ১৬ আগস্ট, ২০২৪, ১১:৩৮ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

জয়ের বিভ্রান্তমূলক বক্তব্য, কি বলতে চান তিনি ?

এম এইচ বাচ্চু : শিক্ষার্থী-জনতার গণ-আন্দোলনের মুখে সোমবার (৫ আগস্ট) প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন শেখ হাসিনা। তার পদত্যাগের মধ্যে দিয়ে টানা সাড়ে ১৫ বছরের শাসনের অবসান হয়। শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও দেশত্যাগের পর থেকে সজীব ওয়াজেদ জয় মুখ খুলেন। তার একের পর এক বক্তব্য আওয়ামী লীগ ও জনগণের মধ্য বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে।  

সোমবার (৫ আগস্ট) রাতে বিবিসি ওয়ার্ল্ডকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জয় জানিয়েছেন, শেখ হাসিনা বা তার পরিবারের কেউই আর রাজনীতিতে আসবেন না। তবে ১০ আগস্ট রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জয় দাবি করেছেন, পদত্যাগই করেননি শেখ হাসিনা। সংবিধান অনুযায়ী শেখ হাসিনাই এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী।

৭ আগস্ট ডয়েচে ভেলেকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জয় বলেন, একদিন আগেই পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। রাজনীতিতে ফেরা নিয়ে জয় বলেন, আমাদের সঙ্গে তিনবার ক্যু করা হয়েছে। তিনবারই সব হারিয়ে বিদেশে থাকতে হলো। আমি আর আমার মা বাদে আমরা বিদেশে অনেক বছর ধরেই আছি। আমরা এখানে সেটেল্ড। আমাদের এখানের জীবনে কোনো অসুবিধা নেই। আমরা এখানে থাকতে অভ্যস্ত।

একই দিন নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে নেতাকর্মীদের উদ্দেশে এক ভিডিও বার্তা দেন জয়। সেখানে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগকে শেষ করা সম্ভব নয়। নেতাকর্মীদের সাহস নিয়ে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘আমরা আছি।’

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ দেশের সবচেয়ে পুরোনো এবং বড় গণতান্ত্রিক দল। আওয়ামী লীগ কিন্তু মরে যায়নি। আওয়ামী লীগ এই দেশকে স্বাধীন করেছে। আওয়ামী লীগকে শেষ করা সম্ভব নয়।’

৮ আগস্ট ভারতীয় বার্তা সংস্থা পিটিআইকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নিজের অবস্থান পরিবর্তন করেন জয়। শেখ হাসিনা আর দেশে ফিরবেন না—শুরুর দিকে এমন কথা বললেও এদিন জয় বলেন, শেখ হাসিনা বাংলাদেশ ফিরবেন। জয় বলেন, ‘শেখ হাসিনা অবসরপ্রাপ্ত না সক্রিয় রাজনীতিক হিসেবে ফিরবেন, তা নিয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি।’

শেখ হাসিনার দেশে ফেরা নিয়ে নিজের অবস্থান পরিবর্তনের কারণ হিসেবে জয় বলেন, ‘গত কয়েকদিন আমাদের দলের নেতা ও কর্মীদের ওপর হামলার পর অনেক কিছু পাল্টে গেছে। এখন আমরা আমাদের মানুষদের নিরাপত্তার জন্য যা যা প্রয়োজন তা করব। আমরা তাদের একা ছেড়ে যাব না।’

একই দিন বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জয় বলেন, ‘কোটা আন্দোলন যে সরকার উৎখাতের দিকে গড়াবে, সেটি তারা কেউ ধারণা করতে পারেননি।’

শুক্রবার (৯ আগস্ট) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম উইয়ন নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জয় জানিয়েছেন, তার মা আওয়ামী লীগের হাল ধরেছেন এবং অনেক নেতার সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন।

একই দিন টাইমস অব ইন্ডিয়াকে জয় বলেন, ‘শেখ হাসিনা ভারতে অবস্থান করছেন। অন্তর্র্বতী সরকার নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নিলে তিনি বাংলাদেশে ফিরবেন। 
জয় জানান, নেতাকর্মীরা চাইলে তিনি রাজনীতিতে আসতে প্রস্তুত। 

শনিবার (১০ আগস্ট) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম রয়টার্সকে জয় বলেন, ‘আমার মা (শেখ হাসিনা) প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগ করেননি। তাকে সে সময়টুকু দেওয়া হয়নি।’

জয় বলেন, যদিও রাষ্ট্রপতি সেনাপ্রধান ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কথা বলে সংসদ ভেঙে দিয়েছেন। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগ না করলে অন্তর্র্বতীকালীন সরকার গঠন ‘আদালতে চ্যালেঞ্জ করা যেতে পারে’।

জয় আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ দল হিসেবে আগামী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। তবে তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন হতে হবে।’ তবে তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন না দিলে কী হবে তা নিয়ে কিছু বলেননি সজীব ওয়াজেদ জয়।

ভারতে অবস্থানরত আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেননি বলে দাবি করেছেন জয়। যাঁরা বলছেন শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেছেন, তাঁদের ওই পদত্যাগপত্র প্রকাশের আহ্বান জানিয়েছেন জয়। যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত জয় রোববার  (১১ আগস্ট) টেলিফোনে কালের কণ্ঠকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনার পদত্যাগ, বর্তমান পরিস্থিতিতে নেতাকর্মীদের করণীয়, দেশজুড়ে ধ্বংসযজ্ঞ, জাতীয় প্রেস ক্লাব থেকে সাংবাদিকদের বহিষ্কারের দাবি ইত্যাদি বিষয়ে কথা বলেছেন। 

এক প্রশ্নের জবাবে জয় বলেন, শেখ হাসিনা পদত্যাগ করেননি। কারণ পদত্যাগ করতে হলে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে নিজের স্বাক্ষরিত একটি চিঠি রাষ্ট্রপতি বরাবর দিতে হবে। সেটা করা হয়নি। সেটার সময় ও বাস্তবতা ছিল না। আর জাতির সামনে ভাষণ দিয়েও প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগের কথা জানাতে পারতেন। 

শেখ হাসিনা বলেছেন তিনি পদত্যাগ করেছেন, ভারতের একটি মিডিয়া প্রক্শা করেছে এ প্রশ্নের জবােবে জয় বলেন, এটি পুরোপুরি মিথ্যা ও বানোয়াট। গত ৫ আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত আমার মা কোনো বিবৃতি দেননি। যারা এটা বলছে তারা সত্য বলছে না।

অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার আওয়ামী লীগকে নিয়ে দেওয়া বক্তব্য এবং তাকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কথা বলেন জয়। মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) ফেসবুক ও এক্স হ্যান্ডেলে নিজের ভেরিফায়েড পেজে 

সজীব ওয়াজেদ জয় লিখেছেন, ‘আজ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আওয়ামী লীগকে বাংলাদেশের একটি বড় দল হিসেবে পুনরায় সংগঠিত হতে বললেন। একই সঙ্গে এ দেশের স্বাধীনতা যে আওয়ামী লীগের হাত ধরেই এসেছে সেটাও উল্লেখ করলেন।’

তিনি আরও লেখেন, ‘তার এই সৎ পরামর্শ কোনভাবেই মেনে নিতে পারলো না সেই একই মব, উল্টো তারা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে আমার মায়ের মতোই পরিণতি ভোগ করতে হবে বলে হুমকিও দিলো।’

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়