ইমতিয়াজ মাহমুদ: আন্দোলনের মুখে বাতিলের আগে বিদ্যমান সরকারি চাকরিতে যে কোটা ব্যবস্থা ছিল, সেটাতে উল্লেখযোগ্য কোনো বড় সমস্যা নেই। কিছু লোক গোস্বা করেছেন, মুক্তিযোদ্ধাদের জন্যে কেন কোটা থাকবে, আদিবাসীদের জন্যে কেন কোটা থাকবে, প্রতিবন্ধীদের জন্য কেন কোটা থাকবে ইত্যাদি। কোটা থাকবে, এটা একটা রাষ্ট্রে সবাইকে নিয়ে একসাথে এগিয়ে যাওয়ার জন্যেই জরুরি। বৈষম্য নিরসনের জন্যেই কোটা সংরক্ষণ জরুরি। কোটাতে বৈষম্য হয় না। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া ছেলেমেয়েরা এটা জানবে না, সেটা আমার বিশ্বাস হয় না। সকলেই জানে যে বৈষম্য নিরসনের জন্যেই কোটা সংরক্ষণ করতে হয়। তাহলে কোটা নিয়ে ওদের সমস্যা কী? দৃশ্যত ওদের সমস্যা হচ্ছে মুক্তিযোদ্ধা ও পোষ্য কোটা নিয়ে এবং সার্বিকভাবে মুক্তিযদ্ধের চেতনা নিয়ে। ওদের ভাষা লক্ষ্য করুন, ওরা যেসব শব্দ ব্যবহার করে সেগুলি লক্ষ্য করুন। মতলব খুবই স্পষ্ট। ওদের মূল সমস্যা মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে।
আওয়ামী লীগের বিরোধ করুন, ঠিক আছে। সরকারের বিরুদ্ধে বলুন আছি আপনার সাথে। গণতন্ত্রের সংগ্রামে যোগ দিন, আপনাকে স্বাগতম। দেশে একটা গ্রহণযোগ্য ভোটের পরিস্থিতি নাই, সেটা পুনরুদ্ধারের জন্যে আন্দোলন করুনÑআপনাদের সাথে আমরা সকলেই আছি। কিন্তু এরা ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা’ কথাটাকেই একটা ঠাট্টা তামাশায় পরিণত করতে চাইছে। আমি তো অহংকার করে বলি যে হ্যাঁ, আমি চেতনাবাজ। অবশ্যই চেতনাবাজ। শতভাগ চেতনাবাজ। আমি ধর্মনিরপেক্ষতা চাই, কেননা আমি চেতনাবাজ। আমি গণতন্ত্র চাই, কেননা আমি চেতনাবাজ। আমি একটা অন্তর্ভুক্তিমূলক জাতি গঠন করতে চাই যাতে করে সমাজতন্ত্রের দিকে যাত্রা করতে পারি। কেননা আমি চেতনাবাজ। আপনার যদি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বা চেতনাবাজদের নিয়ে সমস্যা থাকে, থাকতে পারে। আপনাদের সংখ্যা তো কম নয়, আপনারা আছেন। গণতান্ত্রিক পথেই আপনাদের আস্তাকুড়ে ছুড়ে ফেলবো। ইতিহাস স্বাক্ষি, এটা আমরা আগেও করেছি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে তামাশা করবেন না। পাকিস্তানি জেনারেলদের গিয়ে জিজ্ঞাসা করুন, ওরা আপনাদের জানাবে বাঙালির সাথে লাগতে গেলে কী হয়।
লেখক: আইনজীবী। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :