শিরোনাম
◈ জাতীয় সংসদের আসন ৬০০ করার সুপারিশ নারী সংস্কার কমিশনের ◈ ১১ ওভারের মধ্যে জিতেও বিদায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের, বিশ্বকাপে বাংলাদেশ ◈ অফিস সময়ে সভা করতে সম্মানী নয়: জ্বালানি উপদেষ্টা ◈ হজ ফ্লাইট ২৯ এপ্রিল, বিড়ম্বনা ও দুর্ভোগ ছাড়াই হজে যাবেন যাত্রীরা ◈ নারী সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন ছাপিয়ে বিলি করা হবে: ড. ইউনূস ◈ ৪ বিয়ে করে বিপাকে বৃদ্ধ, থানায় দেখা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে ◈ প্রধানমন্ত্রী নয়, মন্ত্রিপরিষদ শাসিত সরকার চায় এনসিপি: নাহিদ ইসলাম ◈ ইসরাইলিদের আল-আকসা মসজিদ ধ্বংস করার গুঞ্জন, ফিলিস্তিনের সতর্কবার্তা ◈ শেখ মুজিবের ছবি অপসারণের ঘটনায় শিক্ষার্থী বহিষ্কার, ছাত্রদলের প্রতিবাদ ◈ বড় হারে অনিশ্চয়তায় বাংলাদেশের বিশ্বকাপ স্বপ্ন 

প্রকাশিত : ১০ জুলাই, ২০২৪, ১২:৪৩ রাত
আপডেট : ১৫ মার্চ, ২০২৫, ১০:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

গবেষণা কাজও আউটসোউর্সিং হয়ে গেছে

ড. কামরুল হাসান মামুন

ড. কামরুল হাসান মামুন: আমি কবির স্যার, হারুন স্যার, নাথ স্যার, অজয় স্যার, আহমেদ শফী স্যার, মেজবাহ স্যার, সেনগুপ্ত স্যারÑ এরকম অনেক কিংবদন্তিতুল্য শিক্ষক পেয়েছি। শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ে না। আমার সেই উপজেলা পর্যায়েও অনেক কিংবদন্তিতুল্য শিক্ষক পেয়েছি। তারা আমার মননে শিক্ষক কেমন হওয়া উচিত তার একটা মেন্টাল ইমেজ তৈরি করে দিয়েছেন। আমার কল্পনার মানসপটে আমার এই শিক্ষকরা একটা ছবি এঁকে দিয়ে গিয়েছেন। দুর্ভাগ্য আমাদের আজকের শিক্ষার্থীদের যে তারা আমি যেই মানের শিক্ষক পেয়েছি তার সিঁকিভাগের সিঁকিভাগের সিকিভাগ ভালো শিক্ষকও পাচ্ছে না। কেবল ভালো পড়ালেই ভালো শিক্ষক হয় না। কেবল সংখ্যায় অনেক গবেষণা আর্টিকেল থাকলেই ভালো শিক্ষক হয় না। ভালো শিক্ষক হওয়াটা একটা ফুল প্যাকেজ। একজন শিক্ষক ভালো হয় তখনই যখন যে চলনে, বলনে, চিন্তায়, চেতনায়, সততায়, আচরণে ভালো হতে হয়।

বেশ অনেক বছর যাবৎ নিয়োগ প্রক্রিয়া খারাপ হতে থাকে। বেশ অনেক বছর যাবৎ শিক্ষকতা পেশাকে অনাকর্ষণীয় করা হতে থাকে। বেশ অনেক বছর ধরে স্কুল কলেজ চালানোর স্টিয়ারিং হুইল অশিক্ষিত, অসৎ মানুষদের হাতে চলে যায়। তাদের হাতে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষমতাও চলে যায়। এভাবে স্কুল-কলেজে অসততা ঢুকে যায়। কারা ঢুকিয়েছে? আমাদের সরকারগুলো। এরপর থেকে স্কুল কলেজের শিক্ষা নামতে থাকে। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে দলান্ধদের ভিসি-প্রোভিসি বানিয়ে তাদের দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়োগ প্রক্রিয়াকে রাজনীতিকরণ করে উচ্চ শিক্ষাকেও শেষ। 

আমাদের সময়ের শিক্ষকদের চেয়ে এখনকার অনেক শিক্ষকদের আর্টিকেল সংখ্যা বেশি। এর কারণ দুনিয়াতে আর্টিকেল প্রকাশের সংখ্যা সময়ের সাথে এক্সপোনেনশিয়াললি বেড়েছে। ইন্টারনেটের কারণে কোলাবোরেশন বেড়েছে। ফলে প্রতি আর্টিকেলে গড় অথর সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে। কারণ গবেষণা কাজ এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি টেকনিক্যাল এবং interdisciplinary! ফলে গবেষণা এখন অনেকটা গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রির মতো হয়ে গেছে। যে বোতাম লাগায় সে শুধু বোতামই লাগায়, হাতা সেলাই করে সে শুধু সেটাই করে। গবেষণা কাজও আউটসোউর্সিং হয়ে গেছে। কেউ আইডিয়া দেয় এবং আর্টিকেল লেখে। কেউ আনালিটিক্যাল ক্যালকুলেশন করে বা একটা পার্ট করে। কেউ সিমুলেশন করে শুধু, কেউ পুরো কাজের সমন্বয় করে। আমাদের স্যারদের সময় এত ইন্টারনেট সুবিধা, জার্নাল এক্সেস সুবিধা ছিল না। কিন্তু আমাদের অনেক স্যারই সততা ও ব্যক্তিত্বে অনেক বেশি উন্নত ছিলেন। আসলে একটি জাতির শিক্ষকদের মান খারাপ হলে সেই জাতির যে কী দুর্গতি নামে, তার শ্রেষ্ঠ টেস্ট কেস উদাহরণ হতে পারে বাংলাদেশ। লেখক: অধ্যাপক, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়