মোহাম্মদ আব্দুল বাতেন: বিসিএস পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস নিয়ে আলোচিত রিপোর্টটা আমি দেখিনি। দেখিনি মানে দেখার ন্যূনতম আগ্রহ পাইনি। কারণ এটা আমার কাছে অভিনব তথ্য নয়। আমি শুধু ৩৩ থেকে ৪৬ বিসিএস কোন সময়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে, সেই টাইম লাইনটা দেখতে চেয়েছি। আর সেই টাইম লাইনের রাজনৈতিক নেতৃত্ব সম্পর্কে ধারণা নেওয়ার চেষ্টা করেছি। আমার সামান্য সামাজিক তত্ত্বের জ্ঞান বলে এইগুলো সিম্পটম্প মাত্র। সমস্যা এক জায়গায় যেখানে আমরা প্রশ্ন নয়, প্রশংসা করতে ব্যস্ত। জবাবদিহিতার সব কেন্দ্র এক জায়গায় কেন্দ্রীভূত করে ফেললে, লুটপাটকে আর বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসাবে দেখার সুযোগ নেই। কারণ আপনি যখন সামাজিক চোখ, প্রাতিষ্ঠানিক চোখ সব চেতনার নামে অন্ধ করে একটা সেন্ট্রাল অথরেটেরিয়ান সিস্টেম দাড় করাবেন, একজনকে সকল ক্ষমতা অর্পন করে আশা করবেন উনি সব করে ফেলবে এর অর্থ আপনি আমি নিজেই এই সিস্টেম তৈরির জন্য দায়ী। এক চোখ দিয়ে সব নজরে রাখা যায় না। তাই মানুষের সম্মিলিত জ্ঞান গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার নামে নাগরিক চোখ (সিটিজেন আই) তৈরি করার মত ব্যবস্থা ডেভেলপ করেছে।
আর সেই চোখগুলো কার্যকর রাখার সিস্টেম অবাধ ও সুষ্ঠু ভোট মানে মতপ্রকাশের স্বাধীনতা যার মাধ্যমে আমি আমার শাসক বেচে নিতে পারবো সব স্তরে। শাসক আমাকে সার্ভ করতে না পারলে পরেরার অন্যকে আনবো। কিন্তু এখন স্থানীয় থেকে জাতীয় শাসক কে হবে সব একজনের মর্জি। একজনের কিংবা এক গোষ্ঠির মর্জিতে দেশ চালানোর সিস্টেম বানিয়ে যত নাটক কিংবা সদিচ্ছাই দেখান লাভ হবে না। সমস্যার গোড়া আলোচনা না করে যাই করেন যেই লাউ সেই কদু পিএসসি বলেন আর বি এসসি বলেন যেখানেই হাত দিবেন দেখবেন তাসের ঘরের মত সব ভেঙ্গে পড়ছে। সব প্রতিষ্ঠানের ভিত্তি হচ্ছে জনগণের অংশগ্রহণ। আর জনগণের অংশগ্রহণের প্রক্রিয়া হচ্ছে ভোট। সেটা ধ্বংস হয়ে যাওয়ার অর্থ সব প্রতিষ্ঠানের ভিত্তি ভেঙে যাওয়া। আর প্রতিষ্ঠান ভেঙে পড়লে আপনি ভাঙ্গা দেয়ালের উপর দাঁড়িয়ে যদি স্বপ্ন দেখেন কিংবা দেখান যে-উন্নয়নের সুউচ্চ ইমারত গড়বেন-তাহলে সেটাকে স্বপ্ন বলে না, স্বপ্ন দোষ বলে! লেখক: শিক্ষক, নৃবিজ্ঞান, ইউনিভার্সিটি অব মেইন, যুক্তরাষ্ট্র
আপনার মতামত লিখুন :