আমিনুল ইসলাম: কী নেই এখানে। আমরা বাংলাদেশিরা দেশে বসে যা যা স্বপ্নে দেখি কিংবা ক্ষেত্র বিশেষে স্বপ্নেও ভাবি না। এর অনেক কিছুই এখানে আছে। এখানে পড়াশোনা সম্পূর্ণ ফ্রি। উল্টো বাচ্চা হলে আপনাকে টাকা দেবে। তিনটা বাচ্চা থাকলে তো কথাই নেই। মাসে মাসে লাখ টাকা করে পাবেন। আর নিজের বাচ্চার দেখাশোনা করার জন্যও পাবেন আলাদা করে টাকা। চাকরি থাকলে সেখান থেকে দেড় বছর ছুটি নিয়ে চাকরির বেতন পাবেন সম্পূর্ণ। স্রেফ বাচ্চার দেখভাল করার জন্য। চিকিৎসা ফ্রি। গণপরিবহণ ফ্রি। প্রতি পাঁচ মিনিট দূরত্বে একটা করে বাস স্টপ। শহরের যেকোনো প্রান্তে বাসে করে চলে যাওয়া যায়। কোনোদিন এক মিনিট দেরি পর্যন্ত করে না। নিয়ম করে চলে। যেমন তেমন বাস নয়। বাংলাদেশের সব চাইতে বিলাশবহুল বাসের চাইতেও সুন্দর আর চকচকে বাস।
বাসে উঠে মনে হবে পুরো বাসই তো ফাঁকা। চাইলে শুয়ে শুয়ে চলে যেতে পারবেন শহরের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে। এখানে মেয়েরা রাত তিনটার সময়ও কফির মগ হাতে নিয়ে মনের আনন্দে সমুদ্র পাড়ে ঘুরতে যায়। এতটুকু ভয় নেই। কোথাও কোনো ক্রাইম নেই। চিৎকার-চেচামেচি নেই। কোথাও কিছু হয়ও না এই দেশে। সবকিছু নিয়ম মাফিক চলছে। মানুষজন এজন্য দুঃখ করে বলে (আমিও বলি)-জীবনে কোনো এক্সাইটমেন্ট নেই। পুরো দেশজুড়ে সবুজ প্রকৃতি আর নীল সমুদ্র। চারদিকে নিঃশব্দের নিরবতা যেমন আছে। একই সাথে আছে শ্বেতশুভ্র তুষারের মায়া। এত এত সুযোগ-সুবিধা। অথচ আমার মন পড়ে থাকে বাংলাদেশে। প্রতি বছর একবার করে ভাবি-দেশে গিয়ে এবার আর ফেরত আসব না।
আমার খুব ইচ্ছে আমাদের নাখালপাড়ায় একটা ভাতের হোটেল দেবো। সেই হোটেলে নানা শ্রেণি, পেশা, বয়সের মানুষজন এসে দেশ-সমাজ নিয়ে আড্ডা দেবে। তর্ক-বিতর্ক করবে। আবার একসঙ্গে ভাত খাবে। আর আমি দূর থেকে সেই আড্ডা শুনবো। উত্তর মেরু থেকে দক্ষিণ মেরু আমার ঘুরা হয়ে গিয়েছে। জগতের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্ত ঘুরে আমি আবিষ্কার করেছি-মাতৃভূমির চাইতে আপন কোনো জনপদ পৃথিবী নামক এই গ্রহে আর নেই। আর এই জন্যই চাইÑ আমাদের দেশটা মানুষের হোক। প্রিয় বাংলাদেশ, বড্ড বেশি ভালোবাসি তোমায়। ফেসবুক থেকে
আপনার মতামত লিখুন :