শিরোনাম
◈ ‘ইজতেমার নিয়ন্ত্রণ’ নাকি ‘সাদ কান্দালভি’- তাবলীগ সংকটের কারণ আসলে কী ◈  আমরা কিংস পার্টি নই, আমরা কিংস মেকার:  হাসনাত আব্দুল্লাহ (ভিডিও) ◈ ভোলা-২ আসনের সাবেক এমপি মুকুল গ্রেপ্তার ◈ অনলাইনে আয়কর পরিশোধে ফি বেঁধে দিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক ◈ প্রায় অর্ধেক মানুষই জানে না তার ডায়াবেটিস ◈ তেজগাঁও থেকে বিলাসবহুল গাড়ি জব্দ করলো কাস্টমস ◈ আশা করি নতুন উপদেষ্টাদের কাজ দেখে বিচার করবেন বাংলাদেশের জনগণ : মাহফুজ আলম ◈ উদ্বোধনের অপেক্ষায় ৫২ জেলায় পানির গুণগতমান পরীক্ষাগার, মিলবে বিশুদ্ধ পানি ◈ যে কারণে পুরুষের চার বিয়ে করার কথা বললেন এই অভিনেত্রী হীরা সুমরো ◈ এখনো রাস্তায় আহতরা, উপদেষ্টাদের হাজির হওয়ার আলটিমেটাম

প্রকাশিত : ০৭ জুলাই, ২০২৪, ০২:৩৭ রাত
আপডেট : ০২ নভেম্বর, ২০২৪, ০২:০০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা না রেখেও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে সুবিধা বা সম্মান দেওয়া যেতে পারে

মোজাফ্ফর হোসেন

মোজাফ্ফর হোসেন: বৈষম্যমূলক সমাজে কোটাব্যবস্থা থাকে বৈষম্য কমাতে, বাড়াতে নয়। কোটার উদ্দেশ্য তুলনামূলক অমেধাবীদের পুনর্বাসন করাও নয়, সুবিধাবঞ্চিতদের টেনে তোলা। ফলে অর্থনৈতিকভাবে দেশের সর্বস্তরের মানুষ এগিয়ে গেছে, শিক্ষার সুযোগসুবিধা সর্বোস্তরে পৌঁছে গেছে, এটা বাস্তবতা হলে কোটাসংস্কার জরুরি। নিশ্চয় বর্তমান সরকার স্বীকার করবে, গত পনেরো বছরে দেশে শিক্ষা ও অর্থনৈতিক বৈষম্য কমেছে? তাহলে সে অনুযায়ী সার্বিক কোটা পদ্ধতি সংস্কার করতে অসুবিধা কোথায়? আর ৩০% মুক্তিযুদ্ধ কোটা?  মুক্তি যে জনযুদ্ধ সেটা কি কেউ অস্বীকার করতে পারবে? তাহলে কেবল গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধারাই (সংখ্যায় ভুয়া সনদধারীসহ ১ লাখ ৮৩ হাজার) কেন ৩০% সুবিধা একা ভোগ করবে? জনযুদ্ধের জনগণ বাদ পড়ে যাচ্ছে না? সমস্যা নেই, মুক্তিযুদ্ধের কোটা ১০০% হোক, কিন্তু সুনিশ্চিত করতে হবে দেশের প্রতিটা মুক্তিযোদ্ধা পরিবার সেই সুবিধা পাবেন, এবং একটাও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদধারী এই সুবিধা পাবে না; নিশ্চিত করতে পারবেন তো? না করতে পারলে কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত করার নামে ভুলণ্ঠিতই হবে। তাও হোক, কিন্তু সন্তান পর্যন্ত, নাতি-নাতনি পর্যন্ত প্লিজ না। জনযুদ্ধে অংশ নেওয়া মানুষগুলোর কথাও ভাবুন। না হলে মুক্তিযুদ্ধ জনযুদ্ধ না, এইটা সরকারিভাবে ঘোষণা দিন। 

পারলে রাজাকার পরিবারগুলো চিহ্নিত করে আলাদা করার ব্যবস্থা নিন। যদি সেটা পারেন, তাহলে আর কোনো প্রশ্ন থাকে না।  সুবিধা কিন্তু রাজাকার পরিবারগুলো ঠিকই পায়, মাঝখান থেকে জনযুদ্ধে অংশ নেওয়া মানুষগুলো ছাগলের তিন নম্বর বাচ্চা। যে পরিবার মুক্তিযোদ্ধাদের আশ্রয় দিয়েছে, খাবার দিয়েছে গোপনে, পাকিস্তানি মিলিটারি রাজাকারদের কাছে তথ্য গোপন করে মুক্তিযোদ্ধাদের জীবন বাঁচিয়েছে, যে পরিবারের নারীকে ক্যাম্পে নির্যাতন করেছে পাকিজালেমরা, যে পরিবারের মানুষকে হত্যা করা হয়েছে, প্রত্যেকে এই জনযুদ্ধের অংশীদার। ৩০ শহিদ, ২লক্ষ নির্যাতনের শিকার মা বোন, প্রত্যেকের পরিবার কি মুক্তিযোদ্ধার সনদ পেয়েছে? মুক্তিযোদ্ধা-পরিবারের সন্তানের জন্য বিশেষ সুবিধার কথা ভাবলে, এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খোঁজা জরুরি।

আমি যেটুকু বুঝি, যুদ্ধটা হয়েছিল বৈষম্যের বিরুদ্ধে, বলা যেতে পারে কোটার বিরুদ্ধেও। মুক্তিযোদ্ধারাই সেই যুদ্ধ করেছেন। চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা না রেখেও মুক্তিযুদ্ধপরিবারকে সুবিধা (পড়ুন সম্মান) দেওয়া যেতে পারে। মুক্তিযোদ্ধারের ভাতা আরো বাড়িয়ে দেওয়া হোক, তাদের পরিবারের চিকিৎসা ফ্রি করে দেওয়া হোক, সন্তানদের স্কলারশিপ দেওয়া হোক, ভূমিহীনদের ভূমি দেওয়া হোক, রাষ্ট্রীয়ভাবে দেশের ফার্স্ট নাগরিকের সম্মান জানানো হোক, সরকারি অফিসাররা মুক্তিযোদ্ধাদের দেখে উঠে দাঁড়াবেন, স্যার বলে সম্মোধন করবেন ইত্যাদি নানাভাবে তাঁদের মর্যাদা দেওয়া হোক, কিন্তু তরুণ ও অনাগত প্রজন্মের কোনো অধিকারের মুখোমুখি দাড় করার কারণ দেখি না। যিনি মুক্তিযুদ্ধো, এদেশের প্রতিটা সন্তানই তার সন্তান। লেখক: কথাসাহিত্যিক

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়