ড. কামরুল হাসান মামুন: আজ যে ছেলেটি কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক পদে নিয়োগ পেলো, তার বেতন কতো জানেন? বড়জোর ৩৫ হাজার টাকা থেকে ৩৯ হাজারের মতো। কলকাতায় একজন পিএইচডি ছাত্রও এর চেয়ে অনেক বেশি পায়, যদিও সেখানে বাসা ভাড়া ও দ্রব্যমূল্য ঢাকার চেয়ে কম। নতুন এই পেনশন স্কিমের কারণে এই কম বেতন হওয়া সত্ত্বেও তার বেতন থেকে মাসে মাসে টাকা কেটে নিবে। সেই টাকা কোথায় যাবে? সরকারের হাতে। আসুন এইবার জানি সরকার এই টাকা কি করবে। সরকারের হাতে টাকা নেই। প্রচুর টাকা ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছে। আবার পাচারকারীরা অনেক টাকা লুটেও নিয়েছে। সরকার টাকা ছাপিয়ে এর সমাধান খুঁজেছিল। কিন্তু এর ফলে মুদ্রাস্ফীতি ঘটায় জিনিসপত্রের দাম নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। এমতাবস্থায় পেনশন স্কিম চালু মানে টাকা একত্রীকরণ করে সেখান থেকে সরকার টাকা নেবে। এটাই হলো মোদ্দা কথা। বাকি সব কথা হলো ক্যামোফ্লেজ।
যারা আজকে এই স্কিমে বেতন থেকে টাকা দিবে তারা ৩৫ বছর পর পেনশন পাবে। এখন যেই পরিমাণ পেনশন পাবে বলা হচ্ছে সেই পরিমাণ টাকাকে ডলারে কনভার্ট করলে কতো ডলার হবে বা এই টাকার পারচেজ পাওয়ার কতো হবে তা কি ভেবে দেখেছেন? আর পেনশন দেওয়ার মতো টাকা থাকবে কিনা সেটারই বা গ্যারান্টি কী? জবাব দেওয়ার জন্য তখন এই সরকারের কেউই ক্ষমতায় থাকবে না। এই পেনশন স্কিম দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হবে আজকে যেই ছাত্রটি শিক্ষক হবে। এখন যারা শিক্ষক আছেন তারা না। বর্তমান ছাত্ররাই আগামীর শিক্ষক। এখন যারা কথা বলছেন, তারা বর্তমান ছাত্র এবং আগামীর শিক্ষকদের স্বার্থেই কথা বলছেন। এখন কথা না বলে এই স্কিমকে না থামালে আমরা তাদের কাছে জাতির কাছে দায়ী থাকবো। লেখক: অধ্যাপক, পদার্থবিজ্ঞান বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
আপনার মতামত লিখুন :