শিরোনাম

প্রকাশিত : ০৭ জুলাই, ২০২৪, ০১:০৭ রাত
আপডেট : ০৭ জুলাই, ২০২৪, ০১:০৭ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

কোটা সংরক্ষণ এবং কোটা বিরোধী আন্দোলন-দুটোই বিভ্রান্তিকর

আনিস আলমগীর

আনিস আলমগীর: প্রায় চার লাখ পরীক্ষার্থী বিসিএসে অংশ নেয়। তাদের মধ্য থেকে মাত্র ৫ হাজারের মতো মেধাযুদ্ধে চূড়ান্তভাবে টিকে। কোনোরকম কোটা ছাড়া। চূড়ান্ত ফলাফলে দেখা যায় মুক্তিযোদ্ধা, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, প্রতিবন্ধী কোটার মতো কোটাগুলোতে অনেক আসন শূন্য পড়ে থাকছে। কারণ ৫ হাজারের মধ্যে কোটা পূরণের মেধাবী পাওয়া যায়নি। তাহলে দেখা যাচ্ছে সরকারি চাকরিতে মুক্তিযোদ্ধা, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, প্রতিবন্ধীÑএসব কোটা আসলে লোক দেখানোর পর্যায়ে চলে যাচ্ছে। যে উদ্দেশে কোটা রাখা হচ্ছে তা একটি ‘অসম প্রতিযোগিতার’ কারণে কোটা সুবিধা পাওয়া লোক দিয়ে পূরণ সম্ভব না। কারণ বিসিএস পাস করার মতো মেধা দিয়ে তাকে প্রস্তুত না করে লড়তে সুযোগ দেওয়া হচ্ছে মাত্র। 

তাই একটি সুষ্ঠু, সাম্যের সমাজ প্রতিষ্ঠায় তাদের জন্য উচ্চশিক্ষায় কোটা প্রয়োগ দরকার, যাতে তাদের যথাযথ মেধাবী হিসেবে গড়ে শুধু সরকারি চাকরি নয়, যেকোনও কাজের জন্য প্রস্তুত করা যায়। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা রাখা হয়েছে সর্বোচ্চ পাঁচ শতাংশ। প্রতিবন্ধী এবং ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী কোটা এক থেকে দুই শতাংশ। সেই কারণেই বলছি, কোটা রাখুন মেধাবী বানাতে, চাকরিতে নয়। উপযুক্ত শিক্ষা না থাকলে চাকরি কোটায়ও পূরণ সম্ভব না। 

যারা কোটা রাখার পক্ষে তারা মনে করছেন উপযুক্ত না হয়েও কোটা দিয়ে  সরকারি চাকরি পাওয়া অতি সহজ। আর যারা কোটার বিরোধিতা করছেন তারা ভাবছেন মেধাবী না হলেও মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের চাকরি পাওয়ার চান্স রয়ে গেছে। দুটোই ভুল ধারণা। ২০১৮ সালে কোটা আন্দোলনের সময় জটিল অংকে কোটা আন্দোলনকারীরা দেখিয়েছেন ৫০ ভাগের বেশি চাকরি কোটায় চলে যাচ্ছে। আর ১১ এপ্রিল ২০১৮ সংসদের সন্ধ্যাকালীন অধিবেশনে কোটা বাতিলের ঘোষণা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরল অংকে দেখিয়েছেন, ২০১৭ সালে কোটায় লোক না পাওয়ায় ৭৭ শতাংশ  লোক নিয়োগ পেয়েছে কোটার বাইরে থেকে।

সরকারের উচিত পরিসংখ্যান দিয়ে এই সমস্ত গুজব, অপপ্রচারের শুরাহ করা এবং চাকরিতে নয় পরিকল্পিতভাবে শিক্ষায় কোটা প্রচলন করা, মেধাবৃত্তি এবং আর্থিক সহায়তার মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের সদস্য, পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী, প্রতিবন্ধীদের মেধায় উপযুক্ত করে গড়ে তুলে মূল স্রোতে আসতে সহায়তা করা। এতে করে কোটা সুবিধাভোগীদের সরকারি চাকরিতে কর্ম ক্ষমতা নিয়েও প্রশ্ন আসবে না। তাছাড়া বাংলাদেশে ৪/৫ কোটি লোক চাকরিজীবী আর সরকারি চাকরিওয়ালা সর্বোচ্চ ১৯/২০ লক্ষ হবে। শুধু সরকারি চাকরি কেন, বেসরকারি সেক্টরেও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তানেরা যাতে চাকরি পান সেভাবে তাদের গড়ে তুলতে হবে। লেখক: সিনিয়র সাংবাদিক। ফেসবুক থেকে

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়