শিরোনাম
◈ স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে শিশুদের প্রস্তুত হতে হবে: প্রধানমন্ত্রী ◈ ভারত রাজনৈতিক ও চীন আমাদের উন্নয়নের বন্ধু: ওবায়দুল কাদের ◈ ইতিহাস গড়ে কোপার সেমিফাইনালে কানাডা ◈ বেড়েই চলেছে যমুনার পানি, ৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি ◈ ইরানের নতুন প্রেসিডেন্ট হলেন মধ্যপন্থী মাসুদ পেজেশকিয়ান ◈ কেবল ঈশ্বরের আদেশ পেলেই আমি নির্বাচন থেকে সরবো: বাইডেন ◈ রাজধানীর বিমানবন্দর এলাকায় ট্রেনে কাটা পরে এক ব্যক্তির মৃত্যু ◈ স্বাগতিক জার্মানিকে হারিয়ে সেমিফাইনালে স্পেন ◈ ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানানোর জন্য এই অনুষ্ঠান: শেখ হাসিনা ◈ কেজিতে ১৫ থেকে ২০ টাকা দাম বাড়ল সবজির, পেঁয়াজ ১১০, কাঁচামরিচের ত্রিপল সেঞ্চুরি

প্রকাশিত : ০৪ জুলাই, ২০২৪, ০২:৩৮ রাত
আপডেট : ০৪ জুলাই, ২০২৪, ০২:৩৮ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

কোপা আমেরিকা : শেষ ৫ মিনিট ছাড়া পুরো খেলায় ব্রাজিল ছিলো না, ম্যাচ আসলে কলম্বিয়ার নিয়ন্ত্রণেই ছিলো

মোহাম্মদ আব্দুল বাতেন

মোহাম্মদ আব্দুল বাতেন : লাস্ট ৫ মিনিট ছাড়া পুরো খেলায় ব্রাজিল ছিলো না। সঠিকভাবে বললে, ম্যাচ আসলে কলম্বিয়ার নিয়ন্ত্রণেই ছিলো। তাদের নিতান্তই ভাগ্য খারাপ যে তারা জিতেনি। যদিও এই ড্র তাদেরই জিত। কারণ তারা গ্রুপ চ্যাম্পিয়ান। সানফ্রান্সিসকোর সান্তা ক্লারায় হট অ্যান্ড হিউমিড আবহাওয়া সাথে আমেরিকার ওয়েস্ট কোস্টের কলম্বিয়ান অভিবাসী সমর্থকদের গ্যালারিতে প্রাধান্য, ব্রাজিলকে অসহায় করে তুলেছিলো। গত ৫ দশকে স্বাগতিক দলের বিপক্ষে বাদে নিরেপক্ষ ভেন্যুতে ব্রাজিল গ্যালারিতে এমন সমর্থকহীন ছিলো না। তার উপর ব্রাজিলের বেশিরভাগ খেলোয়াড় ইউরোপের কোল্ড ওয়েদারে খেলে অভ্যস্ত তাই এমন হট অ্যান্ড হিউমিড ওয়েদার তাদের জন্য যেন ছিলো মরার উপর খাড়ার ঘা।

গ্যালারির ক্ষমতা কী ফুটবলে সেটা কলম্বিয়া কড়ায় গন্ডায় উপভোগ করলো। গ্যালারির উম্মাতাল সাপোর্টে কলম্বিয়ার প্রতিটা খেলোয়াড় যেন দ্বিগুন এনার্জি নিয়ে খেলেছে। ব্রাজিল কলম্বিয়ার প্রেসিং দিশেহারা ছিলো পুরো ম্যাচে। ব্রাজিলের মতো দলের পাস একুরেসি ৮০ শতাংশ বিশ্বাস করা যায়? এইটার জন্য কলম্বিয়ার খেলোয়াড়দের কৃতিত্ব না দিলে অন্যায় হবে। ব্রাজিলের প্রতি ৩টা পাসের ১ টা তারা ইন্টারসেপ্ট করতে পেরেছে। আর এটাকিং থার্ডে এই রেশিও ছিলো ৫০-৫০। কোন লেভেলের প্রেসিং করেছে চিন্তা করেন। এত হট অ্যান্ড হিউমিড আবহাওয়ায় হাই প্রেসিং করতে হলে মানুষের অসুরের দম লাগে, আর পুরো ৯০ মিনিট কলম্বিয়া সেটা সমান তালে করে গেছে।

আর কলম্বিয়ার ব্যাক লাইন নিয়ে কী বলবো? তাদের কাভার করার গতি, মাঠের গ্যাপ গুলো সেকেন্ডের মধ্যে ক্লোজ করে দেওয়ার ক্ষিপ্রতা ছিলো অবিশ্বাস্য। ভিনির মতো গতিবান খেলোয়াড়কে অনেকবার কলম্বিয়ার সানচেজ ও মুনিয়োজ যেভাবে বিট করলো, এটা ব্রাজিল সামলাতেই পারেনি। কলম্বিয়ার মুনিয়োজ সেরা এদিনের খেলোয়াড়। কোথায় ছিলো না সে? আক্রমণে, ট্যাকলে, ভিনিকে অকার্যকর করাতে, সবখানে। কলম্বিয়ার গোলটাও তার দেয়া। ভিনি অকার্যকর হলে কি করবে-তাদের বিকল্প গেম প্ল্যানই ছিলো না। রাফিনহা যা একটু খেলেছে ব্রাজিলের পক্ষে। আর বাকি ১০ জন ছিলো অশ্বডিম্ব, শুধু ডিফেন্সে মার্কুইনোস কিছুটা কার্যকর ছিলো। আসলে বলতে কী, কলম্বিয়ার হাই প্রেসিংয়ে দিশেহারা হয়ে ব্রাজিল সুলভ ছন্দ হারিয়ে এলোপাথাড়ি যেভাবে বল মারছিলো ব্রাজিল তাতে জার্সি আর টিভির স্ক্রলে দলের না নাম উঠলে যে কেউ চিনতেই পারতো না, আসলে কলম্বিয়া কার সাথে খেলছে। মাঝ মাঠ বলে যে একটা ব্যাপার থাকে ব্রাজিলের সেটা ছিলোই না। ব্রাজিলের  ডিফেন্স থেকে লং বল দিয়ে ভিনির গতিকে কাজে লাগানোর দু’একটা প্রচেষ্টা ছাড়া, বাকি সময় খেলা কলম্বিয়াই নিয়ন্ত্রণ করেছে। হামেস রদ্রিগেজের মাঝ মাঠ নিয়ন্ত্রণ, পাসিং একুরেসি, প্রতিটা সেট পিসে থ্রেট জেনারেট করা-সব মিলিয়ে ২০১৪ সালের সেই হামেস যেন আবার ফিরে আসলো পিচে।

দুঃখিত কলম্বিয়া, জিতা উচিত ছিলো এমন ম্যাচে তোমরা ড্র করেছ। তবে রেফারিংয়ের মানের কথা বলতেই হয়। পুরো কোপায় রেফারিংয়ের মান যাচ্ছে-তাই। আজেক রেফারী তো ভয়াবহ টাইপের ফালতু ছিলো। এত ভুলভাল সিদ্ধান্ত, খেলার গতি নষ্ট করে দেওয়া, কিছুটা ব্রাজিলের প্রতি রাগান্বিত থাকা (যদিও ভিনি ও ব্রুনো গেমাইরেজের আচরণে রেফারি রেগে থাকার যথেষ্ট কারণ ছিলো। ইতালির সেই লুইগিয়ানি যদি থাকতো তাহলে এই দুইটাই লাল কার্ড খাইতো), সব মিলিয়ে ব্রাজিলের জন্য বিরক্তিকর, কিন্তু ভয়াবহ গতিবান একটা বিশৃঙ্খল ম্যাচে, অপেক্ষাকৃত ছন্দময়, পজিশনাল ও ভালো খেলেছে যে দলটা সেটা কলম্বিয়া। পরের ম্যাচে ভিনি থাকবে না, আর প্রতিপক্ষ এই টুর্নামেন্টের এখন পর্যন্ত সেরা দল উরুগুয়ে। ব্রাজিল সমর্থকরা দুশ্চিন্তা করার যথেষ্ট কারণ আছে।
 লেখক: শিক্ষক, নৃবিজ্ঞান, ইউনিভার্সিটি অব মেইন, যুক্তরাষ্ট্র

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়