শিরোনাম
◈ পদ্মা সেতু প্রকল্পের সমাপনী অনুষ্ঠানে ভাষণ দিবেন প্রধানমন্ত্রী ◈ সচিব সভায় সম্পদের হিসাব প্রকাশ নিয়ে মতানৈক্য ◈ ঈশ্বরদীতে প্রাইভেটকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ৫ জন নিহত ◈ বিএনপির অবস্থান সবসময় গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের বিপরীত মেরুতে: ওবায়দুল কাদের ◈ প্রত্যয় স্কিম বাতিলের দাবিতে শিক্ষক-কর্মচারীদের কর্মবিরতিতে অচল ৩৫ বিশ্ববিদ্যালয় ◈ ব্যয়ের ক্ষেত্রে আবারও কৃচ্ছ সাধনের নীতিতে সরকার ◈ ওমান শিগগিরই বাংলাদেশীদের জন্য ওয়ার্কিং ভিসা চালুর চেষ্টা করছে ◈ ধর্ষণ মামলা থেকে অব্যাহতি পেলেন মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের মুশতাক-ফাওজিয়া ◈ সিলেট কাস্টমস কমিশনার এনামুল হকের সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ ◈ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় বসার কিছু নেই: ড. ইউনূস

প্রকাশিত : ০৩ জুলাই, ২০২৪, ০৩:০৭ রাত
আপডেট : ০৩ জুলাই, ২০২৪, ০৩:০৭ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

শিক্ষা, বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশ ও একটি জাতির জন্মের সঙ্গে জড়িত বিদ্যাপীঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় 

শারফির শাহ

শারফির শাহ: ১ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস। এদিন আবার বিশ্ব কৌতুক দিবসও। এই দিনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে কিছু কৌতুক পেশ করলে কেমন হয়। এগুলো বিভিন্ন বই থেকে নেওয়া। আমি বিভিন্ন সময় টুকে রেখেছিলাম নোটবুকে। অধ্যাপক গোবিন্দচন্দ্র দেব তখন জগন্নাথ হলের প্রভোস্ট। পাশেই রোকেয়া হলের প্রভোস্ট হিসেবে আখতার ইমাম দায়িত্বরত। তো একদিন গোবিন্দচন্দ্র দেব আখতার ইমামকে বললেন, ‘আমার ঐধষষ টাও একটু দেখেশুনে রাইখেন।’ গোবিন্দ দেবের উচ্চারণগত সমস্যা ছিল। তিনি Hall-এর উচ্চারণ করতেন Hole। উপস্থিত অন্যান্য শিক্ষক ঐধষষ এর স্থলে ঐড়ষব শোনে হেসেই খুন।

অভিনেতা আলী যাকের ইংরেজি বিভাগে ভর্তি হতে গেলেন। অধ্যাপক সৈয়দ সাজ্জাদ হোসাইন তাকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি ঘুমের মধ্যে ইংরেজি ভাষায় স্বপ্ন দেখ? আলী যাকের বললেন, ‘না স্যার। আমি ঘুমের মধ্যে বাংলাতেই স্বপ্ন দেখি।’ সলিমুল্লাহ হল থেকে চাবুক নামে একটি পত্রিকা বের হতো। জনৈক অধ্যাপক চাবুক পত্রিকার সম্পাদককে ডেকে বললেন, পত্রিকার নাম চাবুক কেন? সম্পাদক ছড়ায় ছড়ায় বললেন, ‘মিষ্টি কথায় কাজ হলো না রাগে ক্ষোভে তাই/চাবুক হাতে নিয়ে আজ কারো রক্ষা নাই।’ অধ্যাপক তখন হো হো করে হাসলেন।

উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানের সময় কলাভবনের বারান্দায় দাঁড়িয়ে এক অধ্যাপক ছাত্রদের অগ্নিঝরা মিছিল দেখছিল আর বলছিল, এই মুহূর্তে চুরি হওয়ার সম্ভাবনা আছে। তখন পাশে দাঁড়ানো অপর শিক্ষক বলছিলেন, গোটা দেশ চুরি হয়ে যাচ্ছে, আর আপনি ছিঁচকে চুরি নিয়ে আছেন। আপনি নিজে চুরি হয়ে গেছেন কিনা দেখেন। হুমায়ূন আহমেদ বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস নিচ্ছেন। হঠাৎ এক ছাত্র প্রশ্ন করল, স্যার আপনি নাকি গরুর কথাও বুঝতে পারেন? ছাত্রটির সম্ভবত হুমায়ূন আহমেদের ‘ছেলেবেলা’ বইটি পড়ে এমন ধারণা হয়েছিল। ক্লাসের মাঝখানে অপ্রাসঙ্গিক বিষয় চলে আসায় হুমায়ূন আহমেদ বিরক্ত হলেন। বললেন, হ্যাঁ, পারি। নইলে তোমাদের ক্লাস নিচ্ছি কীভাবে? মহসীন হল থেকে হুমায়ূন আহমেদকে পাকসেনারা ধরে নিয়ে যায় ১৯৭১ সালে। তাকে বন্দী করে রড দিয়ে পেটানো হচ্ছে দেখে পাক কমান্ডার বললেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রড দিয়ে পেটাচ্ছ মানে কী? এটা তো অপমান। তার চেয়ে সরাসরি গুলি করে মেরে ফেল। এখন যেমন বিসিএসের কদর, ষাটের দশকে তেমন সিএসপি অফিসার হতে পারলে সুন্দরী মেয়েদের কাছে খুব সমাদর পাওয়া যেত। তো নিজের প্রেমিকাকে চোখের সামনে সিএসপি অফিসার দখল করে নিয়ে যাচ্ছে দেখে এক কবি তখন দেয়ালে দেয়ালে সাঁটিয়ে দিয়েছিল একটি কবিতা। সেটি ছিল এরকম : ওগো কন্যে/তোমার জন্যে/লিখব না আর কবিতা/মিথ্যে জানি সবি তা/ওগো বড়লোকের ঝি/আমি হবো সিএসপি। 

বাংলা বিভাগে পরীক্ষা চলছে। কবি রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ বাইরে বসে আড্ডা পেটাচ্ছেন। অধ্যাপক নরেন বিশ্বাস রুদ্রকে দেখে বললেন, আজ তোমার পরীক্ষা না, এখানে কী করছ? রুদ্র বললো, পরীক্ষা দেব না স্যার। প্রস্তুতি নেই। নরেন বিশ্বাস বললেন, কবিদের পরীক্ষায় প্রস্তুতি লাগে নাকি? তুমি যাও, বস এবং যা খুশি লেখ। পাস হয়ে যাবে। রুদ্র সত্যি পাস করেছিল অর্ধেক পরীক্ষা দিয়েই। হুমায়ূন আহমেদের ছোটভাই উন্মাদ সম্পাদক ও কার্টুনিস্ট আহসান হাবীব। ভূগোলে পড়েছেন। তাদের ক্লাসে এক সুন্দরী ম্যাডাম ছিলেন। একদিন সেই সুন্দরী ম্যাডামন একদিন ক্লাসে বললেন, আপনাদের এক বন্ধু আছে না, যিনি মানচিত্র আঁকতে গেলে কার্টুন হয়ে যায়। বলা বাহুল্য, সেদিন ক্লাসে আহসান হাবীব উপস্থিত না থাকায় সবাই হো হো করে হেসে দিল। 

এবার নিজের কথা। আমাদের একজন শিক্ষক ক্লাসে আমার নাম জিজ্ঞেস করায় আমি নাম বললাম। তিনি বললেন, শারমিন তোমার নাম। এটা তো মেয়েদের নাম। আমি বললাম, স্যার আমার নাম শারমিন না, শারফিন। স্যার বললেন, শারধিন। আমি বললাম, শারফিন স্যার, শারফিন। স্যার বললেন, ও আচ্ছা, আচ্ছা। শারফিন। খুব ইউনিক নাম। এরকম আরও বহু কৌতুক আছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে। এই বিশ্ববিদ্যালয় যেমন দুঃসহ স্মৃতির সরোবর, তেমন হাসিঠাট্টার প্রাণকেন্দ্র। শিক্ষা, বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশ, একটি জাতির জন্মের সঙ্গে জড়িত এই বিদ্যাপীঠ নিয়ে নানা আলোচনার অবকাশ আছে। আমি আজ সেসবের বাইরে গিয়ে কিছু কৌতুক করলাম।  শুভ জন্মদিন প্রাণের তীর্থকেন্দ্র। লেখক: গবেষক ও প্রাবন্ধিক

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়