শিরোনাম
◈ পদ্মা সেতু প্রকল্পের সমাপনী অনুষ্ঠানে ভাষণ দিবেন প্রধানমন্ত্রী ◈ সচিব সভায় সম্পদের হিসাব প্রকাশ নিয়ে মতানৈক্য ◈ ঈশ্বরদীতে প্রাইভেটকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ৫ জন নিহত ◈ বিএনপির অবস্থান সবসময় গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের বিপরীত মেরুতে: ওবায়দুল কাদের ◈ প্রত্যয় স্কিম বাতিলের দাবিতে শিক্ষক-কর্মচারীদের কর্মবিরতিতে অচল ৩৫ বিশ্ববিদ্যালয় ◈ ব্যয়ের ক্ষেত্রে আবারও কৃচ্ছ সাধনের নীতিতে সরকার ◈ ওমান শিগগিরই বাংলাদেশীদের জন্য ওয়ার্কিং ভিসা চালুর চেষ্টা করছে ◈ ধর্ষণ মামলা থেকে অব্যাহতি পেলেন মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের মুশতাক-ফাওজিয়া ◈ সিলেট কাস্টমস কমিশনার এনামুল হকের সম্পত্তি ক্রোকের নির্দেশ ◈ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় বসার কিছু নেই: ড. ইউনূস

প্রকাশিত : ০৩ জুলাই, ২০২৪, ০১:২৩ রাত
আপডেট : ০৩ জুলাই, ২০২৪, ০১:২৩ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

রাজনীতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে ক্রমেই পিছিয়ে দিচ্ছে

শরিফুল হাসান

শরিফুল হাসান: ১০৪ বছরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। শত বছরের মূল্যায়ন করতে গেলে বলতে হয়, এই বিশ্ববিদ্যালয় যতোটা না শিক্ষা  আর জ্ঞানচর্চার কেন্দ্র হয়ে উঠেছে তার চেয়েও বড় রাজনীতির কেন্দ্র। অবশ্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাও ছিল রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। বঙ্গভঙ্গ রদের পর পূর্ব বাংলার জনগণকে সান্ত্বনা দিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত। এরপর সব রাজনৈতিক আন্দোলন আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস যেন একসাথে গাঁথা। ১৯৫২ এর ভাষা আন্দোলন, ছয় দফা আন্দোলন, স্বাধিকার আর গণতন্ত্রের যতো আন্দোলন সবই হয়েছে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতৃত্বে। অথচ সেই তুলনায় শিক্ষা গবেষণায় এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান অনেক কম। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর গত ৫০ বছরে সেই অবদান দিনকে দিন আরো কমেছে। আমার পর্যবেক্ষণ হলো যে রাজনীতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে জাতির দিশারিতে পরিণত করেছিল, আজকে সেই রাজনীতিই বোধহয় এই বিশ্ববিদ্যালয়কে ধ্বংস করছে। উপাচার্য থেকে শুরু করে শিক্ষক-কর্মকর্তা এমনকি কর্মকর্তা কর্মচারী নিয়োগেও রাজনীতি। এই রাজনীতি বিশ্ববিদ্যালয়টা ক্রমেই পিছিয়ে দিচ্ছে।

ভীষণ আফসোসের বিষয় হলো, যে শিক্ষার্থীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় সেই শিক্ষার্থীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো  ভাবনা নেই। তাদের আবাসিক হল, সেখানকার পরিবেশ, লেখাপড়া, গবেষণা কোনো কিছু নিয়েই আলাদা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো ভাবনা নেই। শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য যে মানুষ তৈরি করা সেখানেও আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পিছিয়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ালেখার চেয়ে প্রথম বর্ষ থেকেই এখানকার ছেলেমেয়েরা চাকরির পড়া মুখস্থ করছে। ফলাফল হয়তো এই যে সরকারি-বেসরকারি সব দপ্তরের প্রধান থেকে শুরু করে নানা চাকরিতে এখনো এখানকার শিক্ষার্থীদের প্রাধান্য। তবে সত্যিকারের জ্ঞান চর্চায় বা ভালো মানুষ তৈরিতে বহু পিছিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

জানি না ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবিষ্যৎ কী? তবে প্রায়ই মনে হয় হাজার হাজার শিক্ষার্থীকে সনদ দেয়া আর  সরকারি বেসরকারি কেরানি তৈরির পাশাপাশি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যদি সত্যিকারের একদল মানুষ তৈরি করতে পারতো যারা এই দেশ এবং পৃথিবীর নেতৃত্ব দেবে। অহঙ্কারী নয় বিনয়ী সত্যিকারের একদল মানুষ যারা এই দেশ আর পৃথিবীর কথা ভাববে এমন মানুষ। সত্যি বলতে কী বর্তমান অবস্থা দেখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশ নিয়ে যেমন হতাশ হই, তেমনি এখনো যে আশা নিয়ে বাঁচি তাও এই বিশ্ববিদ্যালয়ের কারণেই। এই বিশ্ববিদ্যালয়কে নিজের ঠিকানা মনে হয়। শাহবাগ, নীলক্ষেত, পলাশী, হাইকোর্ট যে প্রান্ত দিয়েই প্রবেশ করি না কেন মনে হয় নিজ নিড়ে ফিরলাম। বিশ্ববিদ্যালয়ে যখন পড়তাম, তখন ছুটি শেষে ক্যাম্পাসে পা রাখলেই মনে হতো আমার আশ্রয়। আজো ঘুরে-ফিরে যখন প্রিয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যাই মনে হয় আমার ঠিকানায় এসেছি। এই ভালোবাসা এখনো আছে তাই খুব আশয় থাকি একদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জ্ঞান চর্চা আর সত্যিকারের মানুষ তৈরির সঠিক পথে ফিরবে। তাই মন থেকে বলি, শতবর্ষে মরে যেও না ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। বরং নতুন প্রাণে বাঁচো। ঠিকানা হয়ে থাকো এই রাষ্ট্রের। শুভ জন্মদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। লেখক: কলামিস্ট

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়