শিরোনাম
◈ আজ সচিব সভা, এজেন্ডায় রয়েছে শুদ্ধাচার ও সুশাসন ◈ ইসরায়েলের হামলায় হিজবুল্লাহর জ্যেষ্ঠ কমান্ডার নিহত, পাল্টা আক্রমণ ◈ নিজেদের স্বার্থ রক্ষা করেই ভারতের সঙ্গে ট্রানজিট করেছি: সংসদে প্রধানমন্ত্রী  ◈ পাট ও বৈচিত্র্য পূর্ণ পাটজাত পণ্য রপ্তানিতে ভর্তুকি দেওয়া হবে: বস্ত্রমন্ত্রী ◈ সিলেট-সুনামগঞ্জে বন্যায় সাড়ে ৩ লাখ ডলার সহায়তা দিলো যুক্তরাষ্ট্র ◈ কোটা আন্দোলনের ওপর ভর করেছে বিএনপি: ওবায়দুল কাদের ◈ নতুন শিক্ষাক্রমে প্রশ্নফাঁসের সুযোগ নেই: শিক্ষামন্ত্রী ◈ ২০৩৫ সালের মধ্যে দেশে পরীক্ষামূলকভাবে হাইড্রোজেন জ্বালানী ব্যবহার সম্ভব হবে: প্রধানমন্ত্রী  ◈ আবারও আবার বুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক সত্য প্রসাদ মজুমদার ◈ প্রত্যয় কর্মসূচি: অর্থমন্ত্রীকে আলোচনায় বসার চ্যালেঞ্জ ঢাবি শিক্ষক সমিতির

প্রকাশিত : ০২ জুলাই, ২০২৪, ১২:১৪ রাত
আপডেট : ০২ জুলাই, ২০২৪, ১২:১৪ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বাসযোগ্যতায় শেষের দিক থেকে ঢাকার নম্বর ছয় কি নয়-ছয় এর জন্য?

কাকন রেজা

কাকন রেজা: কাকন রেজা : কোনো কোনো গণমাধ্যম খবরের শিরোনাম করেছে, ‘বিশ্বে বসবাসযোগ্য শহরের তালিকায় দুই ধাপ পিছিয়েছে ঢাকা, ১৬৬ তম অবস্থান থেকে এবার ১৬৮ নম্বরে নেমেছে’। কিন্তু শিরোনামে তো নেই-ই, খবরের ইন্ট্রোতেও নেই, কতগুলো শহরের মধ্যে আমাদের অবস্থান ১৬৮ তম। যাদের হাতে খুব সময় কম, তারা সাধারণত শিরোনাম তথা হেডিংটা দেখেন। যাদের আরেকটু সময় আছে তারা ইন্ট্রোটায় নজর বুলিয়ে নেন। আর এখনকার প্যাটার্নটাই তাই। কিন্তু যে কয়টা খবর পড়লাম এ বিষয়ে, তাতে অনেক কষ্টে উদ্ধার করা গেলো, আমাদের পেছনে আছে মাত্র ৫টি শহর। অর্থাৎ তুল্য ১৭৩টি শহরের মধ্য আমাদের ঢাকার অবস্থান ১৬৮। ইআইইউয়ের দ্য গ্লোবাল লিভেবিলিটি ইনডেক্স ২০২৪ এ যোগ্যতার তালিকার জন্য বেছে নেয়া হয়েছে পাঁচটি সূচককে। এগুলো হলো, স্থিতিশীলতা, স্বাস্থ্যসেবা, পরিবেশ, শিক্ষা-সংস্কৃতি ও অবকাঠামো।

ঢাকার অবস্থান বিষয়ে গুগল বলছে, ‘বাসযোগ্যতার দিক থেকে খারাপ অবস্থানে থাকা শহরগুলোর মধ্যে ঢাকা ষষ্ঠ স্থানে আছে’। সুতরাং আলোচনাটাও সূচকের শেষ দিক ধরে শুরু করি। শেষে রয়েছে ‘অবকাঠামো’। এখন অবকাঠামো কাকে বলে তার কিছুটা বলে নিই এবং তা সরাসরি উইকিপিডিয়া থেকে। উইকিপিডিয়া অবকাঠামোর বর্ণনা দিতে গিয়ে বলছে, ‘অবকাঠামো হলো একটি দেশ, শহর, বা অন্য এলাকার অর্থনীতিকে কার্যকর রাখার জন্য প্রয়োজনীয় পরিষেবা ও সুবিধা প্রদানকারী অপরিহার্য প্রতিষ্ঠান এবং ব্যবস্থা। সাধারণত রাস্তা, সেতু, সুড়ঙ্গ, পানি সরবারহ, পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা, বিদ্যুৎ গ্রিড, টেলিযোগাযোগ (ইন্টারনেট অধিগমন ও ব্রডব্যান্ডের গতিসহ) এর প্রযুক্তিগত কাঠামোকে বোঝায় এবং সামাজিক বসবাসের অবস্থাকে সক্ষম, বজায় বা উন্নত করার জন্য প্রয়োজনীয় পণ্য এবং পরিষেবা প্রদানকারী আন্তঃসম্পর্কিত সিস্টেমের গাঠনিক উপাদানগুলিকে সংজ্ঞায়িত করা যেতে পারে।’ 

ঢাকার শহরের উন্নতি নিয়ে, চাকচিক্য নিয়ে দায়িত্বশীলদের আত্মম্ভরিতার কথা শোনা যায়। উন্নত দেশগুলিকে পেছনে ফেলার কথাও বলা হয়। কিন্তু তারপরেও আমাদের ঢাকার সিরিয়াল থাকে শেষের দিকের ছয় নম্বরে। তবে কি এই ছয়. ‘নয়ছয়’ এর কোনো সিম্বল? অবকাঠামোর মধ্যে পানি সরবরাহের বিষয়ে অবশ্য বেশি কিছু বলার নেই, কারণ ওয়াসার এমডিকে নিয়ে অনেক কথাই হয়েছে। কিন্তু ওই যে, ওনারা পাছে লোকের কথায় কিছু মনে করেন না। ‘ডোন্ট মাইন্ড’ টাইপ বড় ‘ভালো-মানুষ’ আর কী। পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা নিয়েও বলার কিছু নেই, একটু বৃষ্টি হলেই ঢাকা শহর নদী হয়ে যায়। বিদ্যুৎ নিয়ে বলতে গেলে আদানির বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে এ কথা বলতে হয়। বসিয়ে বসিয়ে ক্যাপাসিটি ট্যাক্সের নামে টাকা জলে ফেলার গল্প বলতে হয়। টেলিযোগাযোগ তথা ইন্টারনেট ও ব্রডব্যান্ডের কথা বলতে গেলেও সেই আমাদের অবস্থানকে দেখতে হয় পেছন থেকে। সারাবিশ্ব নয় দক্ষিণ এশিয়ার ক্ষেত্রেও ইন্টারনেটের গতির হিসেবে আমাদের অবস্থান পেছনে। 

অন্যান্য পরিষেবা বিষয়ে আর নাই বললাম। কী নিয়ে বলবো। স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে বলবো। বলতে গেলে মহাকাব্য হয়ে যাবে, তবুও স্বাস্থ্যসেবার মান বাড়বে না। কল্যাণ রাষ্ট্রের মতন নির্দিষ্ট নম্বরে ফোন করেই চিকিৎসা নিয়ে নিশ্চিত হওয়ার কপাল আমাদের নেই। উপজেলা পর্যায়ে তো অ্যাম্বুলেন্সই নেই। থাকলেও প্রায়গুলোরই অচল অবস্থা। শিক্ষা নিয়ে বলতে গেলে, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর র্যাং কিংয়ের দিকে তাকালে মাথা নিচু হয়ে আসে। পরিবেশের কথা বলতে গেলে ‘আবার দূষিত বাতাসের নগরী ঢাকা’ এই শিরোনাম চোখে ভাসে। আর সংস্কৃতি। এ বলতে গেলে একধরণের ‘কাইজ্জা’ করার লোক আছেন, যারা বিজ্ঞানের ধারেকাছে না থেকেও নিজেদের বিজ্ঞানমনস্ক বলেন। এদের কারণেই বোঝা যায় না, আমাদের সত্যিকার সংস্কৃতি কী। তবে একধরণের স্থিতিশীলতা আছে। যেমন আছে রাশিয়ায়। যাকগে, এসব বলতে নেই, মানে সব কথা বলতে নেই। শুধু শেষ করার আগে বলে যাই বসবাসের দিক থেকে যুদ্ধবিধ্বস্ত কিয়েভও আমাদের ঢাকা থেকে এগিয়ে। বলুন, এখন কী বলবেন, মাশআল্লাহ, না আলহামদুলিল্লাহ, না ইন্নালিল্লাহ? লেখক : সাংবাদিক ও কলাম লেখক

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়