সালেহ্ বিপ্লব: দেশের যোদ্ধা বন্ধু সবার, এই স্লোগানকে সামনে রেখে বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর স্মরণসভা ও প্রার্থনা অনুষ্ঠান গত শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর ধানমন্ডিতে পারিবারিক বাসভবনে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

ডা. জাফরুল্লাহর স্ত্রী শিরিন হক দুই সন্তান বর্ষা চৌধুরী এবং বারিশ চৌধুরীকে পাশে নিয়ে জাফরুল্লাহর কর্মমুখর জীবনের কথা তুলে ধরেন। 

শিরিন হক বলেন, সাধারণ মানুষের জন্য জীবনভর সোচ্চার থেকে সাহসী মানুষের পরিচিতি পাওয়া ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর ভাবনায় ছিল শুধু বাংলাদেশ। দেশ ছাড়া কিচ্ছু বুঝতেন না। তার শেষ আকুতি ছিল, আপনারা দেশটাকে বাঁচান। আমারও আজ একই আকুতি।

৪৮ বছরের দাম্পত্য সঙ্গী হিসেবে ডা. জাফরুল্লাহকে সবচেয়ে কাছ থেকে দেখেছেন শিরিন হক। স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে কখনো আবেগাপ্লুত হয়েছেন, আবার কখনও স্বামীর জীবনের গল্পে হাসিয়েছেন।

শিরিন হক বলেন, জাফরুল্লাহ আমার পথের সঙ্গী ছিলেন। তার সঙ্গে থাকা সহজ ছিল না। আমরা তর্ক করতাম। আবার একসঙ্গে নাটক দেখতে যেতাম। জাফরুল্লাহ চৌধুরী নাটক দেখতে ভালোবাসতেন। নাচ-গান খুব পছন্দ করতেন না। একবার তাকে নিয়ে গেলাম নাচ দেখতে। পাশের আসনে বসে ঘুমিয়ে নাক ডাকছিলেন।

প্রার্থনা সভায় যোগ দেন সংবিধানের অন্যতম প্রণেতা গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন, নোবেলজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস, ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহউদ্দিন আহমেদ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল ও ড. হোসেন জিল্লুর রহমান, অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ, অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, গণস্বাস্থ্য ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারপারসন অধ্যাপক আলতাফুন্নেসা ও ট্রাস্টি সন্ধ্যা রায়, ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম, নিউ এজ পত্রিকার প্রকাশক শহিদউল্লাহ খান বাদল, সমকাল সম্পাদক মোজাম্মেল হোসেন ও উপদেষ্টা সম্পাদক আবু সাঈদ খান, চ্যানেল আইয়ের পরিচালক শাইখ সিরাজ, চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তরুণ চক্রবর্তী, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, নারীনেত্রী খুশী কবির, সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী, অভিনেতা সারা যাকের, গণফোরামের একাংশের সাধারণ সম্পাদক

সুব্রত চৌধুরী, ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, অধ্যাপক ড. সিআর আবরার, কবি ফরহাদ মজহার, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, ভাসানী অনুসারী পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, মুক্তিযোদ্ধা ইসতিয়াক আজিজ উলফাত, মুক্তিযোদ্ধা সাদেক খান, গণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খান, গণস্বাস্থ্যের মিডিয়া উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু এবং গণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খান। 

প্রার্থনা সভায় পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করেন সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক পারভীন হাসান, গীতা থেকে পাঠ করেন চিন্ময় হাওলাদার, ত্রিপিটক পাঠ করেন রিপন বড়ুয়া, বাইবেল পাঠ করেন রোজলিন মরাউটা। জাফরুল্লাহর প্রিয় আমেরিকান জ্যাজ পরিবেশন করেন পল ফুলার। দোয়া পরিচালনা করেন আব্দুলা আল সাকি।

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. ফেরদৌস আজিমের সঞ্চালনায় জাফরুল্লাহর কর্মময় জীবনের নানা কথা তুলে ধরেন গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি ডা. কাশেম চৌধুরী, ছোট বোন সেলিনা চৌধুরী মিলি, নারী নেত্রী ফরিদা আক্তার এবং অর্থনীতিবিদ বিনায়ক সেন।