শহীদুল ইসলাম: রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে উঠা দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী দুই মাসের মধ্যে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। যুগান্তর
সোমবার (২৭ মার্চ) হাইকোর্টের বিচারপতি মো. সেলিম ও মো. রিয়াজ উদ্দিন খানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ স্বপ্রণোদিত হয়ে এ আদেশ দেন।
এর আগে ১৯ মার্চ একটি জাতীয় দৈনিকে ‘রাতারাতি ঘুরে যায় ভাগ্যের চাকা, কোটিপতি বানানোর কারখানা রাজউক’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। এ প্রতিবেদন সোমবার আদালতের নজরে আনেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মাজু মিয়া। এসময় উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম গোলাম মোস্তফা।
পরে শেখ মোহাম্মদ মাজু মিয়া বলেন, দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনটি আমি আদালতে উপস্থাপন করি। আদালত আগামী দুই মাসের মধ্যে দুদককে বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এ বিষয়ে কোনো রুল জারি হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটি আদেশের কপি হাতে পেলে জানা যাবে। জাগো নিউজ
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম গোলাম মোস্তফা বলেন, ১৯ মার্চ পত্রিকায় একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। এতে রাজউকের কতিপয় কর্মচারী দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়ে প্রতিবেদনে উঠে আসে। বিষয়টি সোমবার নজরে আনলে আদালত তদন্তের জন্য স্বপ্রণোদিত হয়ে আদেশ দেন।
প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘রাজউক যেন কোটিপতি বানানোর এক কারখানায় পরিণত হয়েছে। এখানে চাকরি করলে রাতারাতি ঘুরে যায় ভাগ্যের চাকা। বড় পদ নয়, একেবারে কেরানি পদে চাকরি করেও কোটিপতি বনে গেছেন অনেকে। স্বল্প বেতনের চাকরি করে যাদের সাধারণ জীবনযাপনের কথা, তাদের কেউ কেউ রীতিমতো রাজা-বাদশাহ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন। খোদ রাজধানীতে তাদের একাধিক বাড়ি ও ফ্ল্যাটের সন্ধান মিলেছে। আছে নামিদামি ব্র্যান্ডের একাধিক বিলাসবহুল গাড়ি।’ যুগান্তর
‘তবে অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, তাদের অনেকেই অবৈধ অর্থের জোরে এখন সমাজপতিও বটে। হতে চান মন্ত্রী-এমপি। তাই চাকরির পাশাপাশি রাজনীতির মাঠেও সক্রিয় তাদের কয়েকজন। দীর্ঘ অনুসন্ধানে রাজউকের এসব কর্মচারীর অঢেল অর্থবিত্তের চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে আসে।’ সমোকাল
এ বিষয়ে ওই প্রতিবেদনে রাজউক চেয়ারম্যান মো. আনিছুর রহমান মিঞা বলেন, দুর্নীতিবাজ হিসেবে পরিচিত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চিহ্নিত করা হচ্ছে। গণমাধ্যমে যাদের নাম এসেছে, তাদের তদন্তের মুখে পড়তে হবে। এছাড়া দুর্নীতিবাজদের অনেকে দুদকের অনুসন্ধানের আওতায় আছেন। ফলে অবৈধ পথে যারা অঢেল অর্থসম্পদের মালিক হয়েছেন, তারা স্বস্তিতে নেই। তাদের অনেকেই আর বেশি দিন রাজউকে টিকে থাকতে পারবেন না। ইত্তেফাক
#এদিকে গত বৃহস্পতিবার রাজউকের সদস্য (এস্টেট) মোহাম্মদ নূরুল ইসলামের নেতৃত্বে পরিচালিত এক অভিযানে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের রুম থেকে অভিযান চালিয়ে ১৫০টির মতো পূর্বাচল প্রকল্পের ফাইল উদ্ধার করা হয়।
এর আগে ২০১৯ সালের ১৫ অক্টোবর রাজউকের সে সময়ের চেয়ারম্যান সুলতান আহমেদের নেতৃত্বে পরিচালিত আরেক অভিযানে সংস্থাটির অ্যানেক্স ভবনের একটি কক্ষ থেকে ৭০টি প্লটের নথি উদ্ধার করা হয়েছিল। পরে এ ঘটনায় রাজউকের ছয় কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ মোট নয় জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে মামলা হয়েছিল।
এসআই
আপনার মতামত লিখুন :