আনিস তপন: সোমবার রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে আয়োজিত ‘প্রতিরোধের প্রথম ব্যারিকেড: বাঙালির বীরত্বের গৌরবগাথা’ শিরোনামে আয়োজিত অনুষ্ঠানে একথা বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোফাজ্জেল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম। তিনি বলেন, যখন ২৫শে মার্চ কালরাতে ইতিহাসের ঘৃণ্য হত্যাযজ্ঞ চালাতে বের হয় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। তখন অনেকগুলো ব্যারিকেডের মুখোমুখি হয় তারা। এর মধ্যে প্রথম এবং অন্যতম ব্যারিকেডের মুখোমুখি হয় ফার্মগেটে বর্তমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এর নেতৃত্বে। এই ইতিহাসকে স্মরনীয় রাখতে ফার্মগেটে একটি স্মৃতিচিহ্ন স্থাপন করা উচিত।
সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে মহান মুক্তিযুদ্ধ আমাদের গৌরবের ইতিহাস। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে বাঙালি হত্যাযজ্ঞ এবং বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতারের উদ্দেশ্যে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট থেকে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ঘাতকেরা অভিযান শুরু করে। কিন্তু হানাদার বাহিনী প্রথমেই ফার্মগেইট এলাকায় মুক্তিকামী ছাত্র—জনতার ব্যারিকেডের মুখোমুখি হয়। সে ব্যারিকেডের নেতৃত্বে ছিলেন ততকালীন ছাত্রনেতা আসাদুজ্জামান খান কামাল।
মুক্তিযুদ্ধে প্রথম ব্যারিকেড তৈরির ঐতিহাসিক ঘটনা স্মরণ করে মহান স্বাধীনতা দিবসের আলোচনা সভা, ‘বঙ্গবন্ধুর পথনির্দেশনার বাংলাদেশ’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় এদিন।
আসাদুজ্জামান খান কামালের লেখা বইটিতে বঙ্গবন্ধুর পথনির্দেশনার বাংলাদেশ গ্রন্থটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবন, মুক্তিযুদ্ধ এবং দেশ পরিচালনায় শেখ হাসিনার দক্ষতা ও দূরদর্শিতাসহ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনের সময় লেখকের নিজ অভিজ্ঞতা বর্ণনা করা হয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধের প্রথম ব্যারিকেড উদযাপন জাতীয় কমিটি আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন, উদযাপন কমিটির আহবায়ক ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা আসাদুজ্জামান খান কামাল, এমপি।
অনুষ্ঠানে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য ও জাতীয় সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী এমপি ও প্রেসিডিয়াম সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামন্ডলীর সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ড. খন্দকার বজলুল হক ও বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর জেনারেল (অব:) হেলাল মোর্শেদ বীরবিক্রম।
বক্তব্যে সংসদ উপনেতা মতিয়া চৌধুরী এমপি বলেন- জাতির পিতার নাম যত মুছে ফেলতে চাইছে ততই তা উজ্জ্বল হচ্ছে। যতদিন যাবে ততই উজ্জ্বল হবে।
বীর মুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপি বলেন, মুক্তিযুদ্ধ বাঙালির জন্য ঐতিহাসিক বিষয়। আমি জামুকার একজন মেম্বার। আমার আবেদন হচ্ছে ফার্মগেটের যেখানে যেখানে যুদ্ধ হয়েছে সেখানে মনুমেন্ট তৈরি করা উচিত। ফার্মগেটে ছাত্র জনতা নিয়ে আসাদুজ্জামান খান এর নেতৃত্বে তৎকালীন যুবকরা পাকিস্তানিদের বাধা দিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেছে। ২৫ শে মার্চ, ১৯৭১ সালে কালরাতে যদি পাকিস্তানিরা এভাবে ব্যারিকেডের সম্মুখীন না হতো তাহলে তারা আরও বেশি হত্যাযজ্ঞ চালাত।
পরে অনুষ্ঠানের সভাপতি আসাদুজ্জামান খান কামাল এমপি ২৫ মার্চ কালরাতে ফার্মগেটে প্রথম ব্যরিকেড কিভাবে দিয়েছিলেন তার বর্ননা তুলে ধরেন।
এটি/এনএইচ
আপনার মতামত লিখুন :