মাসুদ আলম : [২] বুধবার সকালে কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর পল্টন এলাকা থেকে প্রতারক চক্রের মূলহোতা মনসুর আহমেদ ও মো. মহসিন চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করেছে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) ও র্যাব-৩। অভিযানে তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয় প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন দলিল ও ডিজিটাল ফুটপ্রিন্ট।
[৩] তিনি আরও বলেন, এই চক্রে ৫ থেকে ৭ জন সদস্য রয়েছে। চক্রের মূলহোতা চক্রটি বিগত প্রায় ৩/৪ বছর যাবত বিভিন্ন প্রকল্পে কাজ পাইয়ে দেয়ার নাম করে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে প্রতারিত করে আসছে। তারা প্রতারণার জন্য বিভিন্ন সময় নতুন নতুন কৌশল ব্যবহার করত। প্রথমত তারা নতুন মোবাইল সীম ক্রয় করে বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যসহ রাষ্ট্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নামে সেভ করত এবং নিজেরা ঐ ব্যক্তি সেজে নিজেদের প্রতারণা চক্রের সদস্যদের মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চ্যাটিং করত।
[৪] মঈন বলেন, চক্রের সদস্যদের বিভিন্ন মোবাইল নম্বর চক্রের মূলহোতা ও সহযোগীর মোবাইলে বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যদের নাম ও ছবি দিয়ে সেভ করে। পরবর্তীতে তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে নিজেদের মধ্যে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ পাইয়ে দেয়ার ব্যপারে চ্যাটিং করে। এই চ্যাটিং কন্টেন্ট তারা এমনভাবে তৈরি করে যাতে যেকোন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মনে করে তারা ইতোপূর্বে অনেক কাজ অর্থের বিনিময়ে পাইয়ে দিয়েছে এবং তাদের বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যদের সাথে খুবই সু-সম্পর্ক রয়েছে।
[৫] তিনি বলেন, এই চক্রের একজন সদস্য তথাকথিত সাইফুল বর্তমানে সংযুক্ত আরব আমিরাতে রয়েছে। যে নিজেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের জয়েন্ট সেক্রেটারী পরিচয় দিত এবং সেখানে বসে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ পাইয়ে দেয়ার মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিত বলে গ্রেফতারকৃতরা জানায়। নিজেদের বিশ্বাসযোগ্যতা প্রমান করার জন্য তারা বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যসহ বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সাথে তাদের ছবি ঐ সকল আগ্রহী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে দেখাত। নিজেদের কোম্পানীকে প্রতিষ্ঠিত ও স্বনামধন্য হিসেবে উপস্থাপন করার লক্ষে তারা হাজার হাজার কেটি টাকার ভুয়া ব্যাংক গ্যারান্টি দেখাত।
[৬] তিনি আরও বলেন, গ্রেপ্তারকৃতরা কোন অফিসে মিটিং এর সময় বেশভূষা পরিবর্তন করে দামী গাড়ি ও বডিগার্ড নিয়ে নিজেদের উপস্থাপন করত। চক্রটি সরকারি কোন চলমান প্রকল্প সমূহের কাজ পাওয়ার যোগ্য এমন সব ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে খুঁজে বের করত এবং তাদেরকে ১০ শতাংশ কমিশনের বিনিময়ে ঐ কাজ পাইয়ে দেয়ার প্রলোভন দেখাত।
[৭] মঈন বলেন, চক্রটি নিজেদের বিশ্বাসযোগ্যতা প্রমানের জন্য তাদের পূর্ব থেকে নির্ধারিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের সঙ্গে তাদের ভাড়া করা অফিসে মিটিং করত। বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যসহ রাষ্ট্রের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সাথে তাদের যোগাযোগ আছে বলে মিথ্যা রেফারেন্স ব্যবহার করত। সাইফুল নিজেকে বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যদের সাথে তার যোগাযোগ রয়েছে বলে মিথ্যা প্রচারণা করত এবং নিজেকে ঐ রাষ্ট্রের একটি প্রভাবশালী অফিসে কর্মরত বলেও পরিচয় দিত।
আপনার মতামত লিখুন :