আফরোজা সরকার: [২] ভোজ্যতেল নিয়ে সারাদেশে অস্থিরতার মধ্যে এবার দাম বেড়েছে পেঁয়াজ ও রসুনের। দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জেও ১৫ দিনের ব্যবধানে প্রতিকেজি পেঁয়াজে ১২-১৪ টাকা ও রসুনে বেড়েছে ১৮-২০ টাকা।
[৩] ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধের পাশাপাশি ডলারের দামের ঊর্ধ্বগতির কারণে পেঁয়াজের দাম বাড়ছে বলে মনে করছেন ব্যবসায়ীরা।
[৪] তবে দেশের কৃষকদের উৎসাহিত করতেই সরকার ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি সাময়িক বন্ধ রেখেছে বলে জানান তারা।
[৫] বাংলাদেশে চাহিদার তুলনায় পেঁয়াজ, রসুন ও আদার উৎপাদন কম হয়। অতিরিক্ত চাহিদার এসব ভোগ্যপণ্য পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করে দেশের চাহিদা মেটাতে হয়।
[৬] চট্টগ্রাম ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, চলতি অর্থবছরের শুরুর দিকে রসুনের দাম বেশি থাকলেও পেঁয়াজের দাম ছিল বছরের অন্য সময়ের চেয়ে কম। দেশে আমদানি করা পেঁয়াজ আসে ভারতের মহারাষ্ট্র ও গুজরাট থেকে।
[৭] ব্যবসায়ীরা বলছেন, আমদানির অনুমতি (আইপি) না থাকায় ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি এখন বন্ধ রয়েছে। অন্যদিকে, ডলারের বিপরীতে টাকার মূল্য কমেছে। এই দুই কারণে পেঁয়াজের দাম বাড়ছে।
[৮] মধ্যম চাক্তাইয়ের পেঁয়াজ-রসুনের আড়তদার বশর অ্যান্ড সন্সের স্বত্বাধিকারী ব্যবসায়ী হাজী আবুল বশর বলেন, দেশে বর্তমানে পেঁয়াজ উৎপাদনের মৌসুম চলছে। এখন ফলন উঠছে। ভারতীয় পেঁয়াজ বাজারে থাকলে দেশীয় চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। খরচ অনুযায়ী পেঁয়াজের দাম পান না কৃষক।
[৯] এদিকে, পেঁয়াজ-রসুন ব্যবসায় কোনো সিন্ডিকেট নেই বলে দাবি করেন খাতুনগঞ্জের পেঁয়াজ-রসুনের আড়তদার ব্যবসায়ী এস এন ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী আলী হোসেন খোকন। তিনি বলেন, পেঁয়াজ রসুন পচনশীল পণ্য। কেউ দাম বাড়ানোর জন্য পেঁয়াজ রসুন স্টক করতে পারে না।
[১০] হামিদ উল্লাহ মার্কেট ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. ইদ্রিস জাগো নিউজকে বলেন, সরকার দেশীয় কৃষকদের উৎসাহিত করার জন্য ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ রেখেছে। দাম কিছুটা বাড়লে হয়তো আবার আমদানির অনুমতি দিয়ে দেবে।
[১১] কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, ২০২১-২২ সালের জন্য পেঁয়াজের চাহিদা নিরূপণ করা হয়েছে ৩৫ লাখ ৫০ হাজার টন। যা আগের ২০২০-২১ সালে ছিল ৩৫ লাখ টন। এভাবে প্রতি বছরই চাহিদা বাড়লেও দেশীয় পেঁয়াজের উৎপাদন বাড়েনি। তার ওপর মৌসুমী দাম না পাওয়ায় কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণও ফলন না বাড়ার অন্যতম কারণ হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।
[১২] তবে পেঁয়াজের চাহিদা ও উৎপাদন নিয়ে কৃষি মন্ত্রণালয় ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যের গরমিল রয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, দেশে বছরে পেঁয়াজের চাহিদা ২৫ লাখ টনের মতো। এর মধ্যে ১৯-২০ লাখ টনের মতো পেঁয়াজ দেশে উৎপাদিত হয়।
[১৩] পেঁয়াজ রসুনের দাম বৃদ্ধিতে হতাশা ব্যক্ত করেছেন কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি এসএম নাজের হোসাইন বলেন, দেশের বাজার এখন ব্যবসায়ীদের দখলে। সরকার সবকিছু ব্যবসায়ীদের হাতে ছেড়ে দিয়েছে। আর এ কারণে যে যার মতো করে পণ্যের দাম বাড়াচ্ছে।
[১৪] তিনি আরও বলেন, ঈদের আগে পেঁয়াজের চাহিদা বেশি থাকে। ঈদের পরে কমে যায়।
আপনার মতামত লিখুন :