আবুল কালাম আজাদ, পাবনা: পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. এম রোস্তম আলীর বিরুদ্ধে ৫০ কোটি টাকার মানহানি মামলায় জামিন পেয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) সশরীরে পাবনা জজকোর্টে উপস্থিত হয়ে জামিন প্রার্থনা করলে আদালত ২ হাজার টাকা বন্ডে তার জামিন মঞ্জুর করে মামলা বিচারিক আদালতে পাঠান। তাঁর বিরুদ্ধে মামলাটি করেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর ড. মো. আওয়াল কবির জয়।
গত ২৪ মার্চ পাবনার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালত-১ এ তিনি মামলাটি দায়ের করেন। মামলাটি আমলে নিয়ে আদালতের বিচারক মো. সাইফুল ইসলাম প্রফেসর ড. এম রোস্তম আলীর বিরুদ্ধে সমন জারি করেছিলেন। একই আদালত আজ জামিন মঞ্জুর করেন। রোস্তম আলীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন পাবিপ্রবির প্রফেসর সাইফুল ইসলাম, পফেসর হাসিবুর রহমান সিকিউরিটি অফিসার হাসিবুর রহমান প্রমুখ।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবদুল আজিজ ও এ্যাডভোকেট চৌধুরী সুলতানা রাজিয়া টুলটুলি। তারা জানান, বাদী আওয়াল কবির জয় সশরীরে উপস্থিত হয়ে দণ্ডবিধির ৫০০ ধারায় মামলাটি দায়ের করেছিলেন। মামলার বাদী ন্যায়বিচার পাবেন বলেও তারা আশাবাদী। বিবাদী পক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট শরিফুল ইসলাম।
বাদীর অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত অধ্যাপক ড. এম রোস্তম আলী পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য থাকাকালে ২০১৯ সালের ২৩ ডিসেম্বরে ক্ষমতার অপব্যবহার করে আওয়াল কবির জয়কে রেজিস্ট্রার কর্তৃক চিঠি দিয়ে আমন্ত্রণ জানানোর পরও রিজেন্ট বোর্ডের সভায় প্রবেশ করতে দেননি। কোনো কারণ দর্শানোর নোটিশ ছাড়াই তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো প্রশাসনিক দায়িত্ব দেওয়া হবে না মর্মে সিদ্ধান্ত নেন। শুধু তাই নয়, ক্ষমতার অপব্যবহার করে তদন্ত কমিটির নামে নানাভাবে হয়রানি করেন এবং দীর্ঘ সময় তাঁর রিপোর্ট প্রদান না করে উপাচার্য মেয়াদ শেষের আগে গোপনে ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন। এতে আওয়াল কবির জয়ের সামাজিক, ব্যক্তিগত ও প্রশাসনিক সম্মানহানি হয়েছে এবং তিনি সীমাহীন ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। এমন মানহানি ঘটানোয় অধ্যাপক এম রোস্তম আলী ভুক্তভোগী আওয়াল কবির জয়ের ৫০ কোটি টাকার ক্ষতি করে দণ্ডবিধির ৫০০ ধারায় গুরুতর অপরাধ করেছেন।
মামলার বাদী আওয়াল কবির জয় বলেন, অধ্যাপক এম রোস্তম আলী ক্ষমতার অপব্যবহার করে ভুয়া সব অভিযোগ তুলে আমাকে রিজেন্ট বোর্ডের সভায় ঢুকতে দেননি এবং কোনো কারণ দর্শানো ব্যতীত প্রশাসনিক দায়িত্ব থেকে বিরত রেখে আমার ব্যক্তিগত ও সামাজিকভাবে ক্ষতি করেছেন। আশা করি আমি আদালতে ন্যায়বিচার পাব।
এ বিষয়ে প্রফেসর ড. এম রোস্তম আলী বলেন, বিচারাধীন বিষয় নিয়ে আমি কোনো মন্তব্য করবো না।
গত ৬ মার্চ পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে অধ্যাপক ড. এম রোস্তম আলীর মেয়াদ শেষ হয়েছে। ২০১৮ সালের ৭ মার্চ তিনি পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান। তাঁর বিরুদ্ধে নিয়োগ অনিয়ম, বাড়ি ভাড়া ফাঁকি দেওয়া, ক্ষমতার অপব্যবহার, উন্নয়ন প্রকল্পে হরিলুঠসহ নানা অভিযোগ ওঠে। ইউজিসির তদন্তে প্রমাণিতো হয় অনেক অভিযোগ। সম্পাদনা: হ্যাপী
আপনার মতামত লিখুন :