আনিস তপন : মঙ্গলবার নিউইয়র্কে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের উদ্যোগে জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা অনষ্ঠানে যোগ দিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, বিদেশে বসে কিছু লোক বানোয়াট ও মিথ্যা তথ্য দিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।
তিনি বলেন, আগস্ট মাস বাঙ্গালী জাতির জন্য শোকের মাস। এ মাসেই জাতির পিতা ও বঙ্গমাতাসহ পরিবারের সদস্যগণ শাহাদাত বরণ করেছিলেন। জাতির পিতা সারাজীবন দেশ ও মানুষের কথা ভেবেছেন। স্বাধীন স্বার্ভভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য কারাবরণ করেছেন। তার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্ব বাংলাদেশ আজ তলাবিহীন ঝুড়ির দেশ থেকে বিশ্বের বুকে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত করেছেন।
মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু কায়েদে আজমের মুখের সামনে বলেছিলেন বাংলা হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা। পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠী বঙ্গবন্ধুর এমন প্রস্তাব নাকচ করে দিলে জাতির পিতা শুরু করলেন ৬ দফা আন্দোলন। এরই ধারাকাহিকতায় পরবর্তীতে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় আটক হন।
তিনি বলেন, সকল রাজনৈতিক আন্দোলনে বঙ্গমাতা ছিলেন জাতির পিতার অনুপ্রেরণার উৎস। ১১ দফা আন্দোলনে বঙ্গমাতা উৎসাহ যুগিয়েছেন। তিনিই বলেছিলেন, বঙ্গবন্ধু প্যারোলে মুক্ত হয়ে কোনো আলোচনায় যাবেন না।
এমনই এক গোলটেবিল বৈঠক থেকে বঙ্গবন্ধু one man one vote আদায় করার ফলেই আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন জিতেছিল।
৭ মার্চের ভাষণের আগে বঙ্গমাতা বঙ্গবন্ধুকে পরামর্শ দিয়েছিলেন, সেখানে মনে যা আসে তাই বলার জন্য এবং সেভাবেই বাঙ্গালী জাতিকে নির্দেশনা দেয়ার জন্য।
বঙ্গমাতার অনুপ্রেরণাতেই বঙ্গবন্ধু ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণে বলতে পেরেছিলেন, তোমাদের যার যা আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবিলা করতে হবে। এভাবেই ৭ মার্চের ভাষণ এক কালজয়ী ভাষণে পরিণত হয়। এসময় বঙ্গবন্ধু এও বলেছিলেন, আমি যদি হুকুম দেবার নাও পারি তোমাদের যার যা আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবিলা করতে হবে।
স্বাধীন বাংলাদেশ বিণির্মানের মাঝ পথেই বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা, ২০০৪ সালের ২১ সে আগস্ট তৎকালীন বিরোধীদলীয় প্রধান ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপর নারকীয় গ্রেনেড হামলার মাধ্যমে মহান মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত অপশক্তি দেশকে এবং জাতির পিতার পরিবারকে নিশ্চিহ্ন করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ষডযন্ত্রকারীরা জাতির পিতাকে হত্যা করলেও তার আদর্শ হত্যা করতে পারেনি।
হাওয়া ভবনসহ সকল ষডযন্ত্রকারীদের মুখোশ আজ উন্মোচিত হয়েছে উল্লেখ করে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, এর পরও প্রধানমন্ত্রী সকল বাধা উপেক্ষা করে বাংলাদেশকে আজ বিশ্বের বুকে মর্যাদাশালী দেশে পরিণত করেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন আমি ষড়যন্ত্র বিশ্বাস করিনা, পেশী শক্তি বিশ্বাস করিনা। তাই পার্লামেন্টকে শক্তিশালী করেছেন। সরকারকে উৎখাতের সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে বাংলার মানুষ সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে চলেছেন। সন্ত্রাস দমনে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছেন। সরকারের সদিচ্ছায় সুন্দরবনের আতঙ্ক বনদস্যুরা আজ আত্মসমর্পন করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছে।
প্রবাসীদের অবদানকে স্বীকার করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রবাসীদের কল্যাণে সরকার কাজ করছে। প্রবাসীরা বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে কাজ করেছেন। ৩০০০ ডলারের আয় সূচকে বাংলাদেশ চলে এসেছে। কোভিড মহামারি মোকাবিলায় বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম।
তিনি বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধের কারনে সারাবিশ্ব সঙ্কটে। এসময় যতটুকু সঙ্কট তা মোকাবিলা করার সকল প্রচেষ্টা এবং সামর্থ্য সরকারের রয়েছে।
এক এক জন প্রবাসী বিদেশে বাংলাদেশের এক এক জন রাষ্ট্রদূত উল্লেখ করে তিনি বলেন, জাতির পিতার কন্যা কখন প্রবাসীদের অবদান ভুলে যাননি।
জাতির পিতার সোনার বাংলা বিণির্মানে আমরা সবাই কাজ করছি। হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ ও খৃষ্টান সকলে মিলে আমরা বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী নারীর ক্ষমতায়ন করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রে থাকা বঙ্গবন্ধুর খুনীদের ফিরিয়ে বিচারের আওতায় আনার জন্য কাজ করছে।
আপনার মতামত লিখুন :