শিরোনাম

প্রকাশিত : ২৯ আগস্ট, ২০২২, ০৫:০৪ বিকাল
আপডেট : ৩০ আগস্ট, ২০২২, ০৮:৪৯ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

যে ৫ দাবির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চায় চা শ্রমিকরা

চা শ্রমিক

আব্দুল বাছিত বাচ্চু, মৌলভীবাজার: দেশের চা বাগানগুলো এখন কর্মচঞ্চল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শনিবার মজুরি নির্ধারিত করে দেওয়ার পর শতভাগ চা শ্রমিক এখন মাঠে। তারা  চায়ের পাতা চয়নে কঠোর শ্রমে মগ্ন। পাশাপাশি অনেক চা বাগানে চলছে উৎসবের আমেজ। কিন্তু হতাশ অর্ধ লক্ষাধিক ক্যাজুয়াল শ্রমিক। কারণ মজুরির বাইরে সুযোগ সুবিধাগুলো শুধু স্থায়ী শ্রমিকদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। অপরদিকে, চা শ্রমিকদের ৫ টি গুরুত্বপূর্ণ দাবির বিষয়েও প্রধানমন্ত্রী কিছু বলেননি। চা শ্রমিকদের স্থায়ী বাসস্থানসহ এ বিষয়েও তারা প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চায়।

চা শ্রমিক নেতারা জানান, দেশের ৭৩ টি ফাঁড়ি বাগানসহ  ২৪১ টি চা বাগান নিয়ে গঠিত ৭ টি ভ্যালিতে বসবাসরত চা জনগোষ্ঠীর নাগরিক ৯-১০ লাখ হবে। শুধু ভোটার হবে ৪-৫ লাখ। আর চা বাগানগুলোতে কর্মরত স্থায়ী শ্রমিকের সংখ্যা মাত্র ১ লাখের মতো। আরও ৪০-৫০ হাজার হবে ক্যাজুয়াল শ্রমিক। এই ক্যাজুয়াল শ্রমিকরা অয়াবার শুধু  মজুরি ব্যতিত অন্যান্য সুযোগ সুবিধা পায় না। এতে একজন স্থায়ী শ্রমিক অন্যান্য সুযোগ সুবিধাসহ ৩ থেকে সাড়ে ৩ শ টাকার মতো পেলেও  ক্যাজুয়াল শ্রমিকেরা পাবে  শুধু ১৭০ টাকা মজুরী। ৪-৫ শ টাকার বিষয়ে তারা বলেন চা বাগানের মালিকপক্ষ একতরফাভাবে প্রধানমন্ত্রীর কাছে এই হিসেব দিয়েছেন। আমরা বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীকে ব্যাখ্যা করে বুঝিয়ে দেবো।

চা শ্রমিক নেতারা বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে আমরা যে  ৫ টি দাবি দিয়েছি সে  বিষয়েও প্রধানমন্ত্রী কিছু বলেননি।

এসব দাবির বিষয়ে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক নিপেন পালের কাছে সার্বিক প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি আমাদেরসময়.কম কে বলেন, প্রধানমন্ত্রী উদ্যোগ নিয়ে সাংঘর্ষিক একটি পরিস্থিতির অবসান করেছেন এতেই আমরা খুশী। আমাদের শ্রমিকরা এখন রাজপথ ছেড়ে কাজে যেতে পেরেছে। কিন্তু ১৭০ টাকা বা ৩০০ টাকা মজুরী দিলেই দেশের চা শ্রমিকদের সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে না। যে কারণে আমরা গত ২১ আগস্ট জেলা প্রশাসক মৌলভীবাজার মহোদয়ের  মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আমাদের ৫ দফা দাবি দিয়েছি।

'আমাদের সময় ডট কম'য়ের সাথে আলাপকালে এই চা শ্রমিক নেতা বলেন, দেশের চা বাগানগুলোতে চা জনগোষ্ঠীর  ৯-১০ লাখ  লোক বসবাস করে। তারা  এখনো অনেক বৈষম্যের স্বীকার । প্রথমত চা শ্রমিকদের স্থায়ী বসতভিটা ঘরবাড়ি নেই। শতাধিক বছর বসবাসের পরও আমাদের ভুমির মালিকানা দেওয়া হয়নি। নারী শ্রমিকেরা  অন্যান্য সেক্টরের মতো  মাতৃত্ত্বজনিত (৬ মাস)ছুটি পায় না ।দেশের চা বাগানলোতে ৮০-৮৫টি  জাতি গোষ্ঠীর  বসবাস।তাদের প্রত্যেকের আলাদা আলাদা ভাষা ও সংস্কৃতি রয়েছে।  কিন্ত মাত্র ১০-১৫ টি জাতি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর স্বীকৃতি পেয়েছে।

তিনি বদলে শ্রম আইনের ৩২ ধারা অনুযায়ী অবসরে যাওয়ার পর চা শ্রমিকদের  বাসস্থান ছেড়ে দিতে হয়। এছাড়া চা শ্রমিকের সন্তানেরা পড়ালেখা বা সরকারি চাকুরী ক্ষেত্রে কোনো কোটা সুবিধা পায় না। তাই আমাদের দাবি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মতো আনুপাতিক হারে চা শ্রমিকদের জন্য  তা চালু করা প্রয়োজন।

সর্বোপরি, যতদিন পর্যন্ত মহান জাতীয় সংসদে আনুপাতিক  হারে চা শ্রমিক জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধি না যাবে ততদিনে এদেশের চা শ্রমিকদের সমস্যাগুলো  পুরোপুরি সমাধান হবে না।

তিনি বলেন, যেহেতু শিগগির মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের সাথে কথা বলবেন, আমরা এই দাবিগুলোর  সেই আশায় আছি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়