মনজুর এ আজিজ: তিন দিনব্যাপী ৮ম আন্তর্জাতিক ফায়ার সেফটি এন্ড সিকিউরিটি মেলা ২০২২ আগামী ২৪-২৬ নভেম্বর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হবে। যৌথভাবে এ মেলার আয়োজন করছে ইলেক্ট্রনিক্স সেফটি অ্যান্ড সিকুরিটি এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইসাব) ও বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্স। শনিবার রাজধানীর গুলশান ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন ইসাব সভাপতি জহির উদ্দিন বাবর।
তিনি ইসাবের বিভিন্ন কর্মকান্ড তুলে ধরে বলেন, দেশের ক্রমবর্ধমান উন্নয়ন ও গতিশীলতার সাথে তাল মিলিয়ে ইসাবের সদস্যরা দেশের সার্বিক শিল্প-বাণিজ্য ও আবাসন খাতের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ক্রমাগত কাজ করে যাচ্ছে। তিনি বলেন, নভেম্বরে অনুষ্ঠিতব্য এ মেলায় ২৬টি দেশের শতাধিক বিশ্বখ্যাত প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করবে। এখানে চারটি সমসাময়িক বিষয়ে টেকনিক্যাল সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে। এসব সেমিনারে অংশগ্রহণকারীরা ফায়ার সেফটি সলিউশন, সিকিউরিটি সলিউশন ও অটোমেশনসহ নানা বিষয়ে টেকনিক্যাল নলেজ অর্জন করতে পারবেন।
ইসাবের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি মো. নিয়াজ আলী চিশতী জানান, দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে ইসাবের সাহসী পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, এই বছর মেলায় বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে ‘ইসাব সেফটি এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড’। তিনটি ক্যাটাগরিতে - বাণিজ্যিক ভবন, আবাসিক ভবন ও শিল্প কারখানায় যারা যথাযথ নিয়মনীতি মেনে অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করেছেন তাদেরকে অ্যাওয়ার্ড প্রদানের মাধ্যমে সম্মানিত করা হবে।
অনুষ্ঠানে ইসাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাকির উদ্দিন আহমেদ বলেন এই এক্সপোতে তিনটি ক্যাটাগরিতে পন্য প্রদর্শিত হবে। সেমিনারে অংশগ্রহণকারীরা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে অংশগ্রহণ করতে পারবেন এবং তাদের মাঝে সনদপত্র বিতরণ করা হবে।
বিজিএমএ সহ-সভাপতি মো. শহীদ উল্লাহ আজিম বলেন, পোশাক খাত দেশের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ একটি খাত। এই খাতে প্রায়ই অনাকাঙ্খিত অগ্নি দুর্ঘটনা ঘটে। আর এইজন্য কারখানার মালিক ও শ্রমিকদের ক্ষতির পরিমাণ হয় অনেক। বিগত বছর গুলোতে কারখানা গুলো যথাযথ কমপ্লায়েন্স মেনে চলায় এই ক্ষতি উল্লেখ যোগ্য হারে হ্রাস পেয়েছে। এই আন্তর্জাতিক এক্সপোতে বিজিএমই এর অংশগ্রহণ একটি গর্বের বিষয়। তিনি বলেন, আমাদের গার্মেন্টস শিল্পের পাশাপাশি অন্য শিল্পেরও এই ফায়ার সেফটি সলিউশন গ্রহণ অপরিহার্য।
এফবিসিসিআইয়ের সহ সভাপতি মো. আমিন হেলালী বলেন, আমরা দেশজুড়ে আধুনিক ফায়ার সেফটি সলিউশন ব্যবহারে জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছি বিডার সাথে। যেখানে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সরাসরি তত্ত্বাবধানে রয়েছে, যাতে আর কোন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান অগ্নি বিপর্যয়ের সম্মুখীন না হয়।
ইসাবের সাধারণ সম্পাদক এম মাহমুদুর রশিদ নভেম্বরে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক এই এক্সপোতে অংশগ্রহণ করতে দেশের ও দেশের বাইরে সবাইকে আমন্ত্রণ জানান। তিনি আশা প্রকাশ করেন, প্রতিবছরের মতো এবারও এই এক্সপো সফল হবে এবং সমগ্র দেশের শিল্প, বাণিজ্য এবং সেবা খাতের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে। তিনি বলেন, এখন সময় এসেছে বাংলাদেশকে বিশ্বের কাছে নতুনভাবে পরিচয় করিয়ে দেয়ার। এই এক্সপোর মাধ্যমে ফায়ার সেফটি এবং সিকিউরিটি পন্য মানুষের কাছে আরো সহজলভ্য হবে এবং বিনিয়োগকারীদেরকে আরো উৎসাহিত করবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়া জেনারেল মো মাইন উদ্দিন, বিএসপি, এনডিসি, পিএসসি, জি এমফিল বলেন, দেশের অধিকাংশ অগ্নি বিপর্যয়ের কারণ অনেক। কিন্তু বিচক্ষণতার অভাব ও উদাসীনতার কারণে ঘটে সব থেকে বেশি বিপর্যয়। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা নিরলসভাবে জীবন বাজি রেখে জানমাল রক্ষা ও উদ্ধার করার চেষ্টা করেন। আপনারা দেখেছেন, এরই মধ্যে আমাদের অনেক সদস্য আহত ও নিহত হয়েছেন।
দেশে যদি প্রত্যেকটি ভবনে যথাযথভাবে অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা থাকতো তাহলে এতো প্রাণহানি ঘটতো না। আমাদের বাহিনীকে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিজস্ব বিবেচনায় আধুনিক সরঞ্জামাদি প্রদান করেছেন। আমরা জনগণের মধ্যে সচেতনতার জন্য প্রশিক্ষণ প্রদান ও ফায়ার সেফটি প্লানের অনুমোদন প্রদান করছি। ইসাবের এই উদ্যোগের প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে প্রতিবছরের ন্যায় এই বছরও থাকছে বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স।
আপনার মতামত লিখুন :