শিরোনাম

প্রকাশিত : ২৬ আগস্ট, ২০২২, ০৪:৪২ দুপুর
আপডেট : ২৬ আগস্ট, ২০২২, ০৪:৪২ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বঙ্গবন্ধু একটা ধ্বংসস্তূপের মধ্য থেকে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী 

আসাদুজ্জামান খাঁন

মাসুদ আলম: বৃহস্পতিবার রাতে রাজারবাগে পুলিশ অডিটোরিয়ামে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় আসাদুজ্জামান খাঁন বলেন,বঙ্গবন্ধুকে হারিয়ে আমরা পথ হারিয়েছিলাম। আমরা আবার অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়েছিলাম। মুক্তিযুদ্ধের পর একটা ধ্বংসস্তূপের মধ্যে যখন ফিরে আসি তখন আমাদের ঘর-বাড়ি কিছুই ছিল না। আমাদের ব্যাংকে সঞ্চয় ছিল শূন্য। সেখান থেকে বঙ্গবন্ধু দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন। সারা পৃথিবী থেকে তিনি সাহায্য পেয়েছিলেন। সারা পৃথিবীর মানুষ তাকে ভালোবাসতো।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু সবাইকে ক্ষমা করে দিতে ভালোবাসতেন। কিন্তু এই ক্ষমায় তাকে যে কতখানি মূল্য দিতে হয়েছে তাও আমরা দেখলাম। 

তিনি বলেন, পুলিশ বাহিনীকে সবসময় দেখি যখন সময় আসে তারা তখন ঘুরে দাঁড়ায়। সেই ২৫ শে মার্চে যেমন তারা ঘুরে দাঁড়িয়েছিলো, বঙ্গবন্ধুকে রক্ষা করার জন্যও যেমন ঘুরে দাঁড়িয়েছে, তেমনি করোনার সময়ও ঘুরে দাঁড়িয়েছে। আমাদের পুলিশ বাহিনী এখন সব সময় সম্মুখ সেনা হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন। সেই জন্য আমরা বোধহয় একটা স্বস্তির জায়গায় এসেছি। 

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন  বলেন, ১৯৭৪ সালের ডিসেম্বরে জাতিসংঘ থেকে আসার দুই মাস পরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাকশালের পরিকল্পনা  করতে লাগলেন। তার উদ্দেশ্য ছিল দুর্নীতি দমন, মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করা ও সমস্ত সৃজনী শক্তিকে মূলধারায় নিয়ে আসা। তিনি অনেকের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা  করেছেন। বামপন্থীর দুটি ধারা। মজলুম জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী ও মস্কোপন্থী মুখ্য নেতা ছিলেন মোহাম্মদ ফরহাদ। এই দুজনেই খুব শক্ত ভাষায় সমর্থন করলেন বাকশালকে। বঙ্গবন্ধু আরও উৎসাহ বোধ করলেন। বঙ্গবন্ধু কখনো সমাজতান্ত্রিক ছিলেন না। তিনি সমাজতন্ত্র থেকে ভালো ভালো উপাদান নিয়ে সমতাধর্মী উন্নয়ন চেয়েছিলেন। 

তিনি আরও বলেন, সমস্যা হলো ৭০ সনে ২৮ শতাংশ মানুষ নৌকার বিপক্ষে ভোট দিয়েছে। এবং তাদের দেশ-বিদেশের প্রভুরা এটাকে বড় ধরনের পরাজয় মনে করেছেন। 

বঙ্গবন্ধুর উদারতার কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, মেজর ডালিমের তখন র‌্যাংক ব্যাজ নেই। তিনি গেটে আসলেন।  আমি তাকে বললাম আপনি কি বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দেখা করবেন। তখন মেজর ডালিম শ্লেষাত্মক ভঙ্গিতে বললেন, বলেই দেখেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে বলার সঙ্গে সঙ্গে বললেন হ্যাঁ, নিয়ে আসো, আমার ছেলে। 

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোঃ আখতার হোসেন বলেন, বঙ্গবন্ধু দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য আজীবন রাজনীতি করেছেন। তিনি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে গড়ে তোলার জন্য কাজ করেছেন। তিনি এ দেশের মানুষকে খুবই ভালবাসতেন। বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে বাংলাদেশ অনেক আগে উন্নত দেশে পরিণত হতো। তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার আহবান জানান।

আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ বলেন, পূর্ণাঙ্গ জাতিসত্তার বিকাশ বঙ্গবন্ধুর হাত ধরেই হয়েছে। যখন জাতিসত্তার বিকাশের শুরু তখনই এই জাতির একশ্রেণীর মানুষ বঙ্গবন্ধুকে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করল। বাঙালি জাতির ক্ষেত্রেও একটি আদি  পাপের সৃষ্টি করেছে। এর ফলে যত সহস্ত্র বছর এই জাতি তার অস্তিত্ব নিয়ে টিকে থাকবে তত বছর এই শোক বাঙালি জাতিকে বহন করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু রাজাকারদের ক্ষমা করে দিয়েছিলেন, দালালদের ক্ষমা করে দিয়েছিলেন। যারা কয়েকটি বিশেষ অপরাধের সঙ্গে জড়িত তাদের ব্যতিরেকে। সত্তরের নির্বাচনে যে ২৮ ভাগ মানুষ বঙ্গবন্ধুকে ভোট দেয়নি তাদের সংখ্যা বর্তমানে ৩৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। আর তারা হচ্ছে সেই জনগোষ্ঠী যারা স্টাবলিসমেন্টের সাথে ছিল। এই স্টাবলিসমেন্টের সাথে থাকার কারণে ২৪ বছর অর্থনৈতিক শক্তি জোগাড় করেছিল। আর এই অর্থনৈতিক শক্তি পরবর্তীতে তাদের পরাজয়ের প্রতিশোধ গ্রহণের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়েছে। আমাদেরকে অবশ্যই  সেই অবয়বে বাঙালিদের থেকে সতর্ক থাকতে হবে।

অতিরিক্ত আইজিপি মনিরুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন যেমন বাঙালি জাতির সবচেয়ে গৌরব ও অহংকারের ঘটনা ঠিক তেমনিভাবে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা বাঙালির জীবনে সবচেয়ে কলঙ্কিত ও লজ্জাজনক ঘটনা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়