শিরোনাম
◈ হাসান মাহমুদের ৫ উইকেট, ভারত থামলো ৩৭৬ রানে ◈ অস্ট্রেলিয়ার তা-বে উড়ে গেলো ইংল্যান্ড  ◈ নারী দলের লঙ্কান কোচকে ২০ বছরের নিষেধাজ্ঞা দিলো ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া ◈ দিল্লিতে এক কেজির ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার রুপিতে ! ◈ অতিরিক্ত ডিআইজি মশিউর রহমান গ্রেফতার (ভিডিও) ◈ খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় শিক্ষার্থীদের মিছিলে হামলা-সংঘর্ষ, গুলি (ভিডিও) ◈ কুষ্টিয়ায় পদ্মার ভাঙনে জাতীয় গ্রিডের টাওয়ার নদীতে বিলীন ◈ ভারতে থাকার মেয়াদ শেষ হচ্ছে, কোন আইনের বলে ভারতে থাকবেন শেখ হাসিনা? ◈ (২০ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশি টাকায় আজকের মুদ্রা বিনিময় হার ◈ স্থিতিশীল ডলারের দর, ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভেও

প্রকাশিত : ২৫ আগস্ট, ২০২২, ০১:৪৫ দুপুর
আপডেট : ২৬ আগস্ট, ২০২২, ০২:০৩ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

ঘুমধুম সীমান্তের ওপারে ১৬ কিমি জুড়ে গোলাগুলি, সতর্ক অবস্থানে বিজিবি

ঘুমধুম সীমান্তের ওপারে ১৬ কিমি জুড়ে গোলাগুলি

হাবিবুর রহমান, বান্দরবান: বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম সীমান্তের ওপারে ১৬ কিলোমিটার জুড়ে গত দুই সপ্তাহ অধিককাল ধরে গোলাগুলির চলছে। মিয়ানমারের সরকারী ও বিদ্রোহী আরকান বাহিনীর মধ্যে এ গোলাগুলির ঘটনা ঘটছে তাদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে। 

এ সময় উভয়ই মর্টারসেল সহ ভারী অস্ত্র ব্যবহার করছে বলে ধারণা করছেন বিজ্ঞমহল। আর এ ভারী অস্ত্রের আওয়াজে বর্তমানে ঘুমধুম সীমান্তে অন্তত ২০ গ্রামের মানুষ আতংকে জীবন কাটাচ্ছে। আর এ কারণে আতংকিত না হতে বাংলাদেশ সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিজিবি সদস্যরা পুরো সীমান্ত জুড়ে টহল বাড়িয়ে তারা সতর্ক অবস্থানে আছেন বলে জানিয়েন প্রত্যক্ষদর্শীরা।

মঙ্গলবার সরেজমিন গিয়ে সীমান্তে বসবাসরত লোকজন ও সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে উপরোক্ত এ সব জানতে পারা যায়। সীমান্তের রেজুআমতলী, গর্জনবুনিয়া, বড়ইতলী, সোনাইছড়ি ও আমতলীর বাসিন্দা, ক্যাচালনং তংচংগা, ফরিদুল আলম, মো. ইদ্রিস, উচালা মার্মা ও জোবেদা বেগমসহ অনেকে জানান, গত ২০ দিন ধরে মিয়ানমার বর্ডারের দিকে বিকট গুলির আওয়াজ শুনতে পাচ্ছেন তারা। এমনকী মর্টারসেলের আওয়াজ তাদেরকে আতংকিত করে। সীমান্তের ৩৮ থেকে ৪১ নম্বর পিলার পর্যন্ত প্রায় ১৬ কিলোমিটার এলাকায় এ গোলাগুলির ঘটনা ঘটছে মঙ্গলবার-সহ প্রায় ২০ দিন ধরে। তারা আরো জানান, নানা মাধ্যমে তারা শুনেছেন এসব গুলিবিনিময় হচ্ছে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী ও মিয়ামনারের বিদ্রোহী সশস্ত্র আরকান আর্মি নামের একটি সংগঠনের সাথে। যা বাংলাদেশ মিয়ানমার সীমান্তের নো ম্যান্স ল্যান্ড (শূণ্য রেখা) ও মিয়ানমারের ওপারের এলাকায়।

তারা আরো জানান, আরকান আর্মি চায় আরকানের স্বাধীনতা। আর মিয়ানমানের সরকারী বাহিনী চায় বিদ্রোহী আরকান আর্মিকে শায়েস্তা করতে। এ নিয়ে তাদের সংঘাত চলে আসছে সেই কয়েক যুগ ধরে। 

অপর একটি সূত্র জানান, সম্প্রতি আরকান আর্মি মিয়ানমারের অভ্যন্তরে সে দেশের বিভিন্ন নিরাপত্তা চৌকিতে হামলা করছে অভিযোগ তুলে বিদ্রোহীদের দমনে পাল্টা হামলা শুরু করে  মিয়ানমারের সেনা সদস্য সহ বিশেষ একটি বাহিনী। তারা সীমান্তের ওয়ালিদং পাহাড়ের পেছনে লেমশি ও বদলা নামক গ্রামের পাহাড়ি এলাকার আরকার আর্মির ঘাঁটিতে প্রথমে। এর পরপর এ গোলাগুলি ছড়িয়ে পড়ে ১৬ কিলোমিটার জুড়ে। বলতে গেলে এখন তুমুল সংঘাত চলছে বন্দুকের নলে।

সূত্রের দাবী, প্রথম হামলার দিন পর অস্তিত্ব ধরে রাখতে আরকার আর্মি তাদের এ অস্থায়ী ঘাঁটি থেকে কৌশলে ১৬ কিলোমিটার এলাকায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে মিয়ানমার বাহিনীর ওপর পাল্টা হামলা চালাচ্ছে। যাতে মর্টারশেল-সহ ভারী অস্ত্র-শস্ত্র ব্যবহার করছে দু'পক্ষই। এতে অনেক সদস্যের হতাহতের সংবাদও জানতে পারেন তারা। বর্তমানে সীমান্তের শূণ্যরেখায় উভয় পক্ষের অনেক অস্ত্রধারী হাতাহাতি পর্যায়ের সংঘাতেও জড়িয়ে পড়ছে বলে সূত্র নিশ্চিত করেন।

সীমান্তের বাংলাদেশ অভ্যন্তরে অবস্থিত একমাত্র মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঘুমধুম রেজু রড়ইতলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক উৎপল বড়ুয়া ও অফিস সহকারী অনুজ বড়ুয়া বলেন, বেশ কিছুদিন ধরে সীমান্তে মিয়ানমারের দিকে ভারী অস্ত্রের গোলাগুলির শব্দ শুনছেন তারা। যাতে এলাকার লোকজন আতংকিত। তবে বাংলাদেশ সীমান্ত রক্ষীকে নিয়মিত টহল দিতে দেখছেন তারা। এ জন্যে সবার ভয় কেটে যাচ্ছে। তাদের স্কুলের শিক্ষা কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে। শিক্ষার্থীরা স্কুলে আসা-যাওয়া করছে। সমস্যা নেই। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এ এলাকার বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, গত ২ সপ্তাহ ধরে রাত-দিন গোলাগুলির বড়বড় শব্দ শুনতে পাচ্ছে তারা। যাতে তাদের খুব ভয় লাগে। মনে হয় তাদের স্কুলের পেছনে কী যেন ঘটছে।

তবে তারা প্রতিদিন স্কুলে যায়-আসে। গৃহিনী রোখসানা বেগম ও ম্যওয়ে মার্মা বলেন, অনেক সময় তারা ভয়ে কাঁপে। কিন্ত কী করবে। তারা তো  গরীব। স্থানীয় ঘুমধুম ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গির আজিজ বলেন, তিনি বেশ ক'দিন ধরে মিয়ানমার সীমান্তে গোলাগুলির শব্দ শুনতে পাচ্ছেন।

তিনি আরো বলেন, এ গোলা ও মটর শেলের আওয়াজে ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদ-সহ পুরো সীমান্ত এলাকা কাঁপছে। সকলে আতংকিত। 

এ বিষয়ে নিয়ে এ সীমান্তে কর্মরত ৩৪ বিজিবি'র অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল মেহেদী হোসাইন জানান, গোলাগুলির শব্দ তারা শুনেছেন। যা সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের অভ্যন্তরে। এ গোলাগুলির ঘটনায় বাংলাদেশী সোসাইটিতে আতংকিত হওয়ার কোন কারণ নেই।

তিনি আরও বলেন, সীমান্তে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ সার্ক্ষণিক সর্তক রয়েছে। টহল জোরদার করা হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়