শাহীন খন্দকার:[২] ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গত শনিবার থেকে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। আজ মঙ্গলবার চতুর্থ দিনে সকাল আটটা থেকে অগ্রিম ৩০শে এপ্রিলের টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। ঈদের সম্ভাব্য তারিখ হচ্ছে ২ মে। ঈদের ছুটি বিবেচনায় গত কয়েক দিনের টিকিটের তুলনায় আজ ৩০ এপ্রিলের টিকিটের চাহিদা অনেক বেশি। ফলে টিকিট কাটতে রেলস্টেশনে টিকিটপ্রত্যাশীদের ভিড়ও অনেক। রাজধানীর কমলাপুর স্টেশনে কাউন্টার গুলোতে টিকিট প্রত্যাশীদের দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে। কেউ রাতে স্টেশনে এসেছেন,কেউবা এসেছেন গতকাল রাতে, সন্ধ্যায় বা বিকেলে।
[৩] ২৬ এপ্রিল ঈদযাত্রার অগ্রিম টিকিট বিক্রি চলবে বিকেল চারটা পর্যন্ত। স্টেশনে কাউন্টার আছে ২৩টি। এর মধ্যে ১৬টি কাউন্টার থেকে ঈদ যাত্রার অগ্রিম টিকিট বিক্রি হচ্ছে। কাউন্টার থেকে এক ব্যক্তি চারজনের টিকিট কাটতে পারছেন। তবে এর জন্য প্রত্যেক যাত্রীর জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি দিতে হচ্ছে। ঈদযাত্রার প্রতিটি ট্রেনে নারী ও প্রতিবন্ধী যাত্রীদের জন্য একটি করে আলাদা কোচ সংযোজন করা হচ্ছে।
[৪] এদিকে ঘড়ির কাটা সকাল ৮টা বাজলেই ঈদে ঘরে ফেরা মানুষের অনলাইনে ট্রেনের টিকিট কাটার চলে তোড়জোড়। বাংলাদেশ ট্রেনের সঙ্গে নতুন চুক্তিবদ্ধ সহজের ওয়েভসাইটের বেহাল অবস্থার কারণে অনলাইনে টিকিট পাওয়া ভাগ্যের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। সহজের সহসাই টিকিট এখন সোনার হরিণ, কমলাপুরকাউন্টারে কয়েকগুন মানুষের চাপ। সহজের ওয়েবসাইটে অনলাইনে প্রবেশের ৭ মিনিটের মধ্যে বলে দিচ্ছে সব সিট বুকট হয়ে গেছে।
[৫] মঙ্গলবার কমলাপুর রেলস্টেশনে তিন ঘণ্টা ঘুরে দেখা যায়, ঘরে ফেরা মানুষের দীর্ঘলাইন। লাইনের মাথা ও শেষ ঠিক কোথায় গিয়ে ঠেকেছে তা বের করা কঠিন। প্রতিটি লাইনে দুই থেকে তিন হাজার মানুষ। এদের অধিকাংশই ২৯ এপ্রিলের টিকিট না পেয়ে রেলস্টেশনে থেকে গেছেন ৩০ এপ্রিলের টিকিট পাওয়ার আশায়। লাইনে নতুন করে কেউ ঢুকলেই শোরগোল পড়ে যাচ্ছে পুরো স্টেশনে।
[৬] অনলাইন নিয়ে অভিযোগ করলেন টিকিট প্রত্যাশী আশামণি। তিনি দিনাজপুর যাবেন। রাত তিনটায় রেলস্টেশনে এসে লাইনে দাঁড়িয়েছেন, তিনি বলেন, টিকিটের লাইন খুব কম আগাচ্ছে। তবু আশা আছে টিকিট পাব। রাজশাহী রুটের টিকিট প্রত্যাশী ফাহাদ জানান, আমার দরকার দুটি টিকিট। লাইনে দাঁড়িয়েই অনলাইনে চেষ্টা করে যাচ্ছিলাম। একটি টিকিট পেয়েও ছিলাম। সেটিও কিনতে পারিনি পেমেন্ট ডিজেবল সমস্যায়। এখন কাউন্টারই ভরসা।
[৭] অনলাইন টিকিট প্রত্যাশীরা জানান, সার্ভারে চাপ অনেক বেশি। ঢোকাই যাচ্ছে না। ঢুকতে পারলেও সিট বুক দেখাচ্ছে। আবার সিট থাকলেও পেমেন্ট থেকে যাচ্ছে পেন্ডিংয়ে। কমলাপুর রেলস্টেশনের ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ মাসুদ সারওয়ার জানিয়েছেন, ঈদ যাত্রায় প্রতিদিন ৫৩ হাজার যাত্রী ট্রেনে ঢাকা ছাড়তে পারবেন। এরমধ্যে শুধুমাত্র আন্তঃনগর ট্রেনে আসন থাকবে প্রায় ২৭ হাজার। এখন সবাই যদি ট্রেনে যেতে চান সেটা কোনো অবস্থাতেই সম্ভব না।
আপনার মতামত লিখুন :