শিরোনাম
◈ কুষ্টিয়ায় পদ্মার ভাঙনে জাতীয় গ্রিডের টাওয়ার নদীতে বিলীন ◈ ভারতে থাকার মেয়াদ শেষ হচ্ছে, কোন আইনের বলে ভারতে থাকবেন শেখ হাসিনা? ◈ (২০ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশি টাকায় আজকের মুদ্রা বিনিময় হার ◈ স্থিতিশীল ডলারের দর, ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভেও ◈ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ‘গ্যারান্টিতে’ নগদ টাকার সংকট কাটছে যে ৫ ব্যাংকের ◈ হত্যাকাণ্ড নিয়ে অপপ্রচার চলছে, জাবিতে কোন কমিটিই নেই : ছাত্রদল ◈ গণপিটুনিতে মৃত্যু: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার দুঃখপ্রকাশ, বৈষম্যবিরোধীদের নিন্দা, ফেসবুকে নানা সমালোচনা ◈ ভারতের গোলা যাচ্ছে ইউক্রেনে, ক্ষুব্ধ রাশিয়া ◈ সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান সুনামগঞ্জে নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার গ্রেফতার ◈ মব জাস্টিস শুধু সহিংসতা ও অন্যায় সৃষ্টি করে: সমন্বয়ক হাসনাত

প্রকাশিত : ২০ আগস্ট, ২০২২, ০৫:১৪ বিকাল
আপডেট : ২১ আগস্ট, ২০২২, ০১:৩৬ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

চা শ্রমিকদের মজুরী ১৪৫ টাকা, কর্মবিরতি প্রত্যাহার

চা শ্রমিক

আব্দুল বাছিত বাচ্চু : চা শ্রমিকদের মজুরী নিয়ে সমঝোতা হয়েছে। সরকারের উচ্চ পর্যায়ের হস্তক্ষেপে চা শ্রমিকরা ১৪৫ টাকায় কাজে যোগ দিতে রাজি হয়েছে। শনিবার বিকেলে দেওয়া হয় আনুষ্ঠানিক ঘোষণা। শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খালেদ মামুন চৌধুরী এবং চা শ্রমিক ইউনিয়নের শীর্ষ নেতারা এই ঘোষণা দেন।

বিভাগীয় শ্রম দপ্তরের সম্মেলন কক্ষে শনিবার বিকেল ৪ টায় আনুষ্ঠানিক ঘোষণা প্রদানকালে জাতীয় সংসদের অনুমিত হিসাব সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবেক চিফ হুইপ উপাধ্যক্ষ আব্দুস শহীদ এমপি, শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খালেদ মামুন চৌধুরী, বিভাগীয় উপ পরিচালক ডিডি নাহিদ ইসলাম, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া সহ শ্রম অধিদপ্তর, সিভিল ও পুলিশ প্রশাসনের উর্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় সরকারের পক্ষ থেকে ১৪৫ টাকা দৈনিক মজুরি নিয়ে কাজ শুরু করার জন্য শ্রমিকদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুরোধের বিষয়টি জানানো হয়। পরে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল কর্মবিরতি প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন।

এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় শ্রম দপ্তরের মহাপরিচালক খালেদ মামুন চৌধুরী এনডিসি বলেন, আমরা একটা সমঝোতায় পৌছেছি। শ্রমিকরা ১৪৫ টাকায় কাজ যোগ দিতে রাজি হয়েছে। চট্টগ্রামের অনেক চা বাগানে শুক্রবার থেকে চা শ্রমিকরা কাজে যোগ দিয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক বিজয় হাজরা আমাদের সময় ডটকমকে বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তিনি বিদেশে যাচ্ছেন। সেখান থেকে এসে আমাদের কথা শুনবেন। উনি ১৪৫ টাকা হাজিরা নিয়ে কাজ করার জন্য বলেছেন। আমরা তো উনার কথা ফেলতে পারি না।

বুধবার (১৭ আগস্ট) রাজধানীর বিজয় নগর শ্রম অধিদপ্তরে ত্রিপক্ষীয় সভায় চা-বাগান মালিকেরা সর্বোচ্চ ১৪০ টাকা মজুরি দেওয়ার প্রস্তাব দিলে শ্রমিকেরা তা প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয়। তাদের দাবি ছিলো চা শ্রমিকদের ন্যুনতম মজুরি ৩০০ টাকা করতে হবে।

উভয় পক্ষের এমন কঠোর অবস্থানের মালিক, শ্রমিক ও সরকারের মধ্যে দুই দফায় ৬ ঘন্টার এই ত্রিপক্ষীয় সমঝোতা বৈঠক কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই রাত আনুমানিক সাড়ে ১১ টায় শেষ হয়। বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা তাৎক্ষনিক সারাদেশে সর্বাত্মক আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। আন্দোলনের দশম দিনে আজ এই সমঝোতা হয়।

তারও আগে মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খালেদ মামুন চৌধুরী শ্রীমঙ্গলে এসে বিষয়টি সুরহা করার চেষ্টা করেন। কিন্তু ৩০০ টাকা মজুরীর বিষয়টি আলোচানা করতে রাজি না হওয়ায় বৈঠকে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এরপর শ্রম অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ঢাকায় ত্রিপক্ষীয় বৈঠক ডাকেন মহাপরিচালক।

বৈঠকে উপস্থিত নেতৃবৃন্দ সুত্রে জানা যায়, বিজয়নগর শ্রম অধিদপ্তরে কেন্দ্রীয় দপ্তরে ওইদিন বিকেল আনুমানিক সাড়ে ৫ টায় বৈঠক শুরু হয়ে চলে রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত। শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খালেদ মামুন চৌধুরী এনডিসি'র সভাপতিত্বে দুই দফায় প্রায় ৬ ঘন্টা অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে চা বাগান মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশীয় চা সংসদ শ্রমিকদের মজুরী ১২০ টাকার স্থলে বাড়িয়ে সর্বোচ্চ ১৪০ টাকা করতে রাজি হন। এর পরপরই বাংলাদেশ চা শ্রমিকনেতারা ঘোষণা দেন দাবি না মানা পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চলবে। 

মহাপরিচালক খালেদ মামুন চৌধুরী, বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাতটি ভ্যালির সভাপতি, সংগঠনের নির্বাহী উপদেষ্টা রামভজন কৈরী, সহসভাপতি পংকজ কন্দ, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নিপেন পাল, অর্থ সম্পাদক পরেশ কালিন্দি, মনু ধলাই ভ্যালির সম্পাদক নির্মল দাশ পাইনকা এবং বাংলাদেশীয় চা সংসদের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, দৈনিক ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে গত ৯ আগস্ট থেকে ৭৩ টি ফাঁড়ি বাগান সহ দেশের ২৪০ টি চা বাগানে চা শ্রমিকদের এই আন্দোলন শুরু হয়। প্রথমে ৪ দিন চা শ্রমিকরা ২ ঘন্টা করে কর্মবিরতি পালন করে। পরে মালিকপক্ষ ১২০ টাকা থেকে ১৪ টাকা বাড়িয়ে মাত্র ১৩৪ টাকা মজুরী দেওয়ার প্রস্তাব দিলে আন্দোলন লাগাতার ধর্মঘটে রুপ নেয়।

এই পরিস্থিতিতে শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খালেদ মামুন চৌধুরী ঢাকা থেকে শ্রীমঙ্গলে বিভাগীয় শ্রম দপ্তরে ছুটে আসেন। কিন্তু দিনব্যাপী দফায় দফায় বৈঠক করেও কোনো সুরহা করতে না পারায় সমঝোতা ভেস্তে যায়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়