শিরোনাম
◈ ঢাবি ছাত্রদলের তিন দাবিতে রাজু ভাস্কর্যে অবস্থান নেয়ার ঘোষণা ◈ শহীদ নূর হোসেন দিবস আজ ◈ ধেয়ে আসছে প্রায় শৈত্যপ্রবাহ, তাপমাত্রা নামবে ৪ ডিগ্রিতে ◈ গুলিস্তান-যাত্রাবাড়ী ফ্লাইওভারে ট্রাকে আগুন ◈ '৫ তারিখে এপিবিএন এয়ারপোর্ট অরক্ষিত করে চলে গেলে, সুরক্ষার দ্বায়িত্ব নেয় এয়ারফোর্স'(ভিডিও) ◈ ট্রাম্পের ফেস্টুন হাতে গ্রেপ্তার, পুলিশ বলছে 'যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক বিনষ্টের অপচেষ্টা' ◈ ড. ইউনূস, নাহিদ, আসিফ নজরুল, হাসনাত ও সারজিসসহ ৬২ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে অভিযোগ ◈ মেক্সিকো সীমান্ত দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের অপেক্ষা করছেন কয়েক হাজার অভিবাসী ◈ অন্তর্বর্তী সরকার গঠনে ত্রুটি থাকলে প্রশ্ন তোলা যাবে না ◈ আওয়ামী লীগ এখন মরা লাশ, তাকে নিয়ে টানাটানি করে কোনো লাভ নেই : ভিপি নূর (ভিডিও)

প্রকাশিত : ১৭ আগস্ট, ২০২২, ০৯:০৮ রাত
আপডেট : ১৭ আগস্ট, ২০২২, ০৯:০৮ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

গ্যাস সম্ভাবনাকে কাজে না লাগিয়ে লুটপাটের সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে

গোলটেবিল বৈঠক

শাহীন খন্দকার: দেশের জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের সংকটকে পরিকল্পিত বলে মন্তব্য করেছেন অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ। গতকাল (বুধবার) জাতীয় প্রেস ক্লাবে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) আয়োজিত ‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সংকট: নাগরিক ভাবনা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।

আনু মুহাম্মদ বলেন, গত ১২ বছরে বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকির বড় অংশ গেছে কয়েকটি বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রে, যারা উৎপাদন করেনি, তাদের ভাড়া দিতে।
এ সময়ে ৯০ হাজার কোটি টাকা ভাড়া দেওয়া হয়েছে। দেশি-বিদেশি ১২টি কোম্পানিকে দেওয়া হয়েছে ৬০ হাজার কোটি টাকা। কারা পাচ্ছে এই ভর্তুকির টাকা? অথচ এর বোঝা চাপছে জনগণের কাঁধে। তথ্য সারা বাংলা।

প্রথম আলো সংবাদে প্রকাশ. জ্বালানি বিশেষজ্ঞ বিডি রহমতউল্লাহ বলেন, ১৯৯৫ সাল থেকেই বলা হচ্ছে, বছরে মোট জ্বালানি চাহিদার ৫ শতাংশ মেটানো হবে নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে। কিন্তু এ বিষয়ে কোনো ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয় না।

তিনি বলেন, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ বানালে পকেটে পয়সা বেশি আসে, বিদেশে টাকা বেশি পাচার করা যাবে। সে কারণে এদিকে নজর রয়েছে। জ্বালানি খাতে জনবান্ধব কোনো প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে না।

জ্বালানি বিষয়ক সাময়িকী এনার্জি অ্যান্ড পাওয়ারের সম্পাদক মোল্লা আমজাদ বলেন, বিজ্ঞানভিত্তিক গবেষণায় দেশে গ্যাসের সম্ভাবনা দেখা গেছে। এই সম্ভাবনাকে সম্পদে পরিণত করতে প্রয়োজন রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। বাংলাদেশে এই রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের বড় অভাব।

বিপিসি গত সোমবার ফার্নেস তেলের দাম আরও বাড়িয়েছে। প্রতি লিটার আগে ৭২ টাকা ছিল, দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৫ টাকা। এই তেল বিদ্যুৎ উৎপাদনে বেশি ব্যবহৃত হয়। ফলে বিদ্যুতের দাম আরেক দফা বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

সরকার ইচ্ছে করেই দেশীয় গ্যাস উত্তোলনে নজর দেয়নি বলে জ্বালানি খাতের বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। তাঁরা বলছেন, বর্তমান জ্বালানিসংকট আকস্মিক নয়। নিজস্ব জ্বালানি সক্ষমতা তৈরির বদলে সরকার হাত গুটিয়ে বসে থাকায় এই সংকট দেখা দিয়েছে।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক বদরুল ইমাম। প্রবন্ধে বলা হয়, দেশের নিজস্ব জ্বালানির অনুসন্ধান ও উত্তোলন না করা এবং বিদেশি জ্বালানির ওপর নির্ভরশীলতা বাড়ানো জ্বালানি সংকটের কারণ। ২০১৭ সাল থেকে দেশের গ্যাসক্ষেত্রগুলো থেকে বার্ষিক গ্যাস উৎপাদন ও সরবরাহ কমছে। অতি গ্যাস সম্ভাবনাময় দেশ হওয়ার পরও বিশ্বের অন্যান্য গ্যাসধারক বেসিনের থেকে বাংলাদেশে অনুসন্ধান কূপের সংখ্যা অনেক কম।

অধ্যাপক বদরুল ইমাম বলেন, দেশীয় গ্যাস খাতে সম্ভাবনা প্রচুর। গ্যাস অনুসন্ধান না করে হাত গুটিয়ে বসে থাকাতেই আজকের এই পরিস্থিতি। সমুদ্রবক্ষে গ্যাস অনুসন্ধানের ধারা আরও বেশি হতাশাব্যঞ্জক। ২০১২ সালে সমুদ্রসীমা বিরোধ নিষ্পত্তি হওয়ার পর মিয়ানমারের সমুদ্র বক্ষে অনেক গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কৃত হলেও বাংলাদেশে তা হয়নি।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে শক্তিশালী ভিত্তি তৈরি না হলে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতায় সংকট তৈরি হয়। দেশের জ্বালানিসংকট আকস্মিক নয়। এখন যা ঘটছে, তা তৈরি হওয়ার মতো পরিকল্পনাই নেওয়া হয়েছিল। এ সংকটের কারণে একটি সুবিধাভোগী গোষ্ঠী লাভবান হচ্ছে।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সুজনের সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার। তিনি বলেন, ‘মতলববাজির উন্নয়ন চলছে। যা করা উচিত নয়, তা করা হচ্ছে। যেগুলো করার কথা নয়, সেগুলো করা হচ্ছে। চাচা-ভাতিজাতন্ত্র, মামা-ভাগিনাতন্ত্রে একটি গোষ্ঠী বিশেষ সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছে। জনগণকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। দেশে চার কোটির বেশি মানুষ নিম্নবিত্ত। জ্বালানিসংকটে তারা আরও বিপদে পড়বেন।’

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়