শিরোনাম
◈ ভারতের কাছে শেখ হাসিনাকে ফেরত চাইবে বাংলাদেশ: জানালেন আইন উপদেষ্টা ◈ জাহাঙ্গীরনগরে ‘গণপিটুনিতে’ সাবেক ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু ঘিরে রহস্য ◈ তমা মির্জার সঙ্গে সম্পর্ক ফাটলের গুঞ্জন, যা বললেন রাফি (ভিডিও) ◈ ‘মারছে, ভাত খাওয়াইছে, এরপর আবার মারছে, ভাত খাওয়াইছে : তোফাজ্জলের মামাতো বোন (ভিডিও) ◈ ঢাবিতে পিটিয়ে যুবক হত্যার ঘটনায় ৪ শিক্ষার্থী আটক ◈ শামীম ওসমানের পুরোনো ভিডিওটি ভাইরাল : ‘ফিরব কি না জানি না’ ◈ জাদেজা-অশ্বিনের জুটিতে টেস্টের নিয়ন্ত্রণ হারালো বাংলাদেশ ◈ দিল্লিতে মেয়ের সঙ্গে থাকছেন শেখ হাসিনা, ঘুরতে দেখা গেছে পার্কে : ফিনান্সিয়াল টাইমসের রিপোর্ট ◈ ফের নেতাকর্মীদের জন্য আওয়ামী লীগের জরুরি নির্দেশনা ◈ মণিপুরের সহিংসতায় মিয়ানমার সীমান্তে কাঁটাতার বসাচ্ছে ভারত

প্রকাশিত : ৩০ জুলাই, ২০২২, ০৯:২৪ রাত
আপডেট : ৩১ জুলাই, ২০২২, ১২:০৬ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

বাংলাদেশের উন্নয়নের তিন প্রধান হাতিয়ার, শিক্ষা নিতে পারে অন্যরা

পদ্মা সেতু

সালেহ্ বিপ্লব: ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের নিবন্ধে বলা হয়েছে, এখন থেকে দশ বছর আগের কথা। বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু আয় ছিলো ৫০০ ডলারের কম। প্রতি সংসারে ৪ থেকে ৫টি সন্তান। ৪৪ শতাংশ মানুষ বাস করতো চরম দারিদ্র্যের মধ্যে। 

আর এখনকার চিত্রটা কী? বিভিন্ন সমস্যা সত্ত্বেও দেশটিতে মাথাপিছু আয় বেড়েছে ৮ গুণ। প্রায় সব পরিবারেই দুটি করে সন্তান। সন্তানকে ঠিকভাবে লালনপালনের জন্যে পরিবারগুলোতে যথেষ্ট টাকা আছে। দেশের ব্যাংকগুলোতে বাড়ছে সঞ্চয়ের পরিমাণ। দারিদ্র অর্ধেকের বেশি কমেছে।

নারীর ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। হাইস্কুলে এখন ছেলেদের চেয়ে মেয়েদের সংখ্যা বেশি। ১৯৭১ সালে দেশটি যখন স্বাধীন হয়, তখন ৫ বছরের নিচে শিশুদের মৃত্যুর হার ছিলো প্রতি ৫ জনে একজন। এখন এটি প্রতি ৩০ জনে একজন হয়েছে।

কিন্তু এরপরও এটা বলা অত্যুক্তি হবে না যে, বাংলাদেশ এখনো দরিদ্র রয়ে গেছে। দেশটি রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলার সঙ্গে লড়াই করছে। জলবায়ুজনিত সমস্যা আছে। আর রয়েছে উচ্চমাত্রায় দুর্নীতি। এ সপ্তাহেই আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছে বড়ো অংকের ঋণ চেয়েছে বাংলাদেশ। কিন্তু আমরা যদি দৃষ্টি প্রসারিত করি, তাহলে দেখবো হেনরি কিসিঞ্জার যে বাংলাদেশকে তলাবিহীন ঝুড়ি বলেছিলো, আজ সেই বাংলাদেশ উন্নয়নের সাফল্যের প্রতীক। 

বাংলাদেশ আফ্রিকার বিভিন্ন অংশ থেকে শিক্ষা নিয়েছে। যদিও উন্নয়নের মাপদণ্ডে বিষয়টি আলোচনায় আসে না। বাংলাদেশের অগ্রযাত্রার বিষয়টি তুলনা করা হয় দক্ষিণ কোরিয়া ও সিঙ্গাপুরের সঙ্গে। কিন্তু আফ্রিকার কোনো দেশের উন্নয়নের সঙ্গে তুলনা কখনো করা হয় না।  

বাংলাদেশ আভাস দিচ্ছে, একটি দেশ কীভাবে উন্নতি করতে পারে। এটি একই সঙ্গে তাদের প্রতি তিরস্কার, যারা অতীতের কথা বলে বলে বাংলাদেশকে খাটো করতে চায়। 
বাংলাদেশের এই অগ্রযাত্রার নেপথ্যে প্রধান তিনটি ফ্যাক্টরের কথা বলছেন অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির উন্নয়ন অর্থনীতিবিদ স্টিফেন ডারকন। 

প্রথমটি রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক শিল্প। ১৯৮৪ সালে এই খাতে রপ্তানি হয়েছিলো ৩২ মিলিয়ন ডলার, এখন রপ্তানির পরিমাণ ৩৪ বিলিয়ন ডলার। ৫৪টি আফ্রিকান দেশ মিলে যা রপ্তানি করে, বাংলাদেশ করছে স্রেফ তার দ্বিগুণ। 

দ্বিতীয়ত রেমিট্যান্স। গত বছর প্রবাসী বাংলাদেশিরা ২২ বিলিয়ন ডলার পাঠিয়েছে দেশে। 

তিন নাম্বার কারণ হিসেবে এনজিও সেক্টরের কথা উল্লেখ করেছেন প্রফেসর স্টিফেন। ব্র্যাক ও গ্রামীণ ব্যাংকের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই বেসরকারি সংস্থাগুলোর কার্যক্রম সুবিধাভোগীদের  সেফটি নেট দিয়েছে। আর্থিক অবস্থার উন্নয়ন ঘটিয়েছে।

রেনেসা ক্যাপিট্যালের চীফ ইকনোমিস্ট চার্লি রবার্টসনও বাংলাদেশের উন্নয়ন সাফল্যের নেপথ্যে তিনটি কারণ উল্লেখ করেছেন। শিক্ষা, বিদ্যুৎ ও জন্মহার।   

টাইম ট্রাভেলিং ইকনোমিস্ট শীর্ষক বইয়ে তিনি বলেছেন, শিল্পায়নের পূর্বশর্ত ৭০ শতাংশের ওপর বয়স্ক শিক্ষা, জনপ্রতি বিদ্যুৎ সরবরাহ ৩০০ কিলোওয়াট আওয়ার এবং পরিবারে সন্তানের সংখ্যা তিনের নিচে। বাংলাদেশ এই তিন শর্তই পূরণ করেছে। 

ডেভিড পাইলিং তার নিবন্ধের শেষাংশে বলেছেন, বাংলাদেশ আজ সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে, সেখানে দক্ষিণ কোরিয়া ছিলো ১৯৭৫ সালে। চার্লি রবার্টসন উন্নয়নের যে তিনটি শর্তের কথা বলেছেন, তা আফ্রিকার অনেক দেশই পূরণ করেছে। সৎ ও দূরদৃষ্টিসম্পন্ন সরকার এক্ষেত্রে ভালো সহায়তা করে। কিন্তু বাংলাদেশ প্রমাণ করেছে, পরিকল্পনা বা প্রক্রিয়া খুব বেশি গোছালো না হলেও উন্নয়নের অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব। 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়