সোহেল রহমান: আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)-এর কাছে ঋণ চাওয়া হলেও এতে অর্থের পরিমাণ উল্লেখ করা হয়নি বলে দাবি করেছেন আ হ ম মুস্তফা কামাল।
তিনি বলেন, বৈদেশিক লেনদেনের ভারসাম্য রক্ষায় এখন আমাদের ঋণ দরকার। সেজন্য আইএমএফ-এর কাছে ঋণের আবেদন করা হয়েছে। আর শুধু আইএমএফ নয়; বিশ্বব্যাংক, জাইকা, এডিবিসহ সব দাতাসংস্থা ও উন্নয়ন সহযোগীদের কাছে ঋণ সহায়তা চাওয়া হবে। সব জায়গায় সব সময় চেষ্টা করি আমাদের যে ঋণ প্রয়োজন হয় তা ভালো সুদে ও ভালো শর্তে নিতে।
বুধবার ‘সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি’র বৈঠক শেষে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
‘বাংলাদেশের ওপর উন্নয়ন সহযোগীদের পূর্ণ আস্থা আছে’ এমন দাবি করে তিনি বলেন, ঋণ দেয়ার জন্য তারা আমাদের পিছে পিছে আছে। কারণ তারা জানে যে, বাংলাদেশ একটি ভালো দেশ, ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা আছে। বাংলাদেশ সময়মতো ঋণ পরিশোধ করতে পারবে।
প্রসঙ্গত: সম্প্রতি আইএমএফ প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক শেষে আমাদের অর্থনীতি ভালো অবস্থানে আছে এবং তাদের কাছ থেকে ঋণ নেয়া হবে না বলে জানিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী।
‘তারপর হঠাৎ এমন কী পরিস্থিতি হলো যে আবার আইএমএফের কাছে ঋণ চাওয়া হয়েছে’ সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘তখন আমরা যদি টাকা চাইতাম, আইএমএফ নানা শর্ত দিত; দর-কষাকষির জন্য আমরা সুযোগ পেতাম না। সে জন্য তখন চাইনি। তখন আমরা একটু ভাব দেখাইছি। এটা দেশের স্বার্থে করা হয়েছে। ঋণ নিলে সবার জানার অধিকার আছে। আমার কাজ হচ্ছে তার ব্যাখ্যা দেয়া।
প্রসঙ্গক্রমে তিনি বলেন, আর কিছুদিন, এরপর ঋণ থাকবে না। আমরা তো বলেছিলাম ঋণ দেবো। আমি আবারও বলি আমরা ঋণ দিতে পারবো।
‘ডলার সংকট মোকাবিলায় অনেক উদ্যোগ নেয়ার পরও কোনো কাজে আসছে না কেন’ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কাজ হবে, একটু সময় লাগবে। এক্সপোর্ট বাড়ছে, রেমিট্যান্সও বাড়ছে। গত বছর রেমিট্যান্স কিছুটা কম হলেও চলতি অর্থবছর আশা করছি ভালো রেমিট্যান্স পাব। রেমিট্যান্স ও এক্সপোর্টের মাধ্যমেই ডলারের চাহিদা মেটানো হবে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, কিছু আমদানিকারক মূল্যবৃদ্ধির কারসাজি করে আমদানি করছে। আমরা এসব অনিয়ম খতিয়ে দেখছি, তবে ডলারের মূল্য নির্ধারিত হবে চাহিদার ও জোগানের ভিত্তিতেই।
ব্যাংক খাতে সুদহার ৬-৯ উঠিয়ে দেয়ার কথা বলেছে আইএমএফ এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দেশের অর্থনীতি এখন ভালো অবস্থানে আছে। সুদের হার যদি ৬-৯ নির্ধারিত না করা হতো তাহলে কোভিডের সময় ছোট, বড়, মাঝারি কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠানই টিকে থাকতে পারত না। ভয়াবহ বেকারত্ব সৃষ্টি হতো। আমি মনে করি ব্যাংক খাতে আমানত ও সুদের হার ৬-৯ করার উদ্যোগটি ভালো। ‘সুদহার ৬-৯ করার কারণে ব্যাংকিং খাতে স্থিতিশীলতা ফিরে এসেছে। বেসরকারি খাতও চাঙা হয়েছে। সুতরাং আইএমএফ যে কথা বলেছে, তা সঠিক নয়। সম্পাদনা: খালিদ আহমেদ
আপনার মতামত লিখুন :