বশির উদ্দিন, ডেমরা (ঢাকা): রাজধানীর ডেমরায় ঢাকার নবাবগঞ্জ থানা পুলিশের সহায়তায় মায়ের কোলে ফিড়ে এসেছে ১ মাসের নবজাতক শিশু জিহাদ। নবাবগঞ্জ থানার ওসি শেখ সিরাজের নির্দেশে ওই থানা পুলিশের সহায়তায় রোববার (২৪ জুলাই) বিকালে নবাগঞ্জের চর নয়াকান্দা গ্রামে দাদা বাড়ী থেকে আটক জিহাদকে উদ্ধার করে ডেমরায় মা জান্নাতুন নেছা জিনিয়ার (১৯) কোলে ফিড়িয়ে দেওয়া হয়।
এর আগে, গত শনিবার জিনিয়ার বাবা মা মেয়ের শ্বশুরবাড়ী থেকে মেয়ে ও নাতি জিহাদকে আনতে গেলে ওই বাড়ীর লোকজন তাদের অকথ্য ভাষায় গালাগাল শুরু করে। এ সময় ক্ষিপ্ত হয়ে শ্বশুর মো. সিরাজুল ইসলাম জিনিয়াকে বেধড়ক মারধর শুরু করে। এ ঘটনায় ওই দিনই নবাবগঞ্জ থানায় অভিযোগের ভিত্তিতে একইভাবে পুলিশের সহযোগীতায় শ্বশুর বাড়ী থেকে জিনিয়াকে অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে ডেমরায় আনলেও শিশু জিহাদকে রেখে দেয় মায়ের কোল থেকে।
এদিকে শনিবার রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়ে আসার পর জিনিয়ার ছেলের জন্য কান্নাকাটি শুরু করলে রোববার নবাবগঞ্জ থেকে শিশু জিহাদকে আনতে যায় তার নানী ও খালা।
নবাবগঞ্জ থানার অভিযোগপত্র ও জিনিয়ার পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত ১২ মাস আগে জিনিয়ার সঙ্গে পারিবারিকভাবে ৫ লাখ টাকা দেনমোহর ধার্য করে বিবাহ হয় ঢাকার নবাগঞ্জের চর নয়া কান্দা গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে মো.দলিল উদ্দিনের (৩০)। এদিকে গত সাড়ে ৪ মাস আগে গর্ভবতী অবস্থায় জিনিয়াকে রেখে দলিল উদ্দিন সাউথ আফ্রিকা চলে যান কাজের উদ্দেশ্যে। তবে বিয়ের পর থেকেই দলিল উদ্দিন ও তার পরিবারের লোকজন যৌতুকের দাবিতে জিনিয়ার ওপর শারিরীক ও মানসিক অত্যাচার শুরু করে। বিয়ের দিন স্বর্ণারঙ্কার দেওয়ার কথা থাকলে তা না দিয়ে স্বর্ণালঙ্কার পরে দিবে মর্মে কাবিনের ৫ লক্ষ টাকার মধ্যে ২ লক্ষ টাকা ওয়াশিল দেখায়।
আরও জানা যায়, দলিল উদ্দিন বিদেশে যাওয়ার জন্য যৌতুক দাবি করলে মেয়ের সংসারের সুখের কথা চিন্তা করে জিনিয়ার বাবা মা ২ লাখ টাকাও দেয়। কিন্তু এতেও রেহাই পায়নি জিনিয়া। বিদেশে থেকেও দলিল উদ্দিন তার পরিবারের লোকজনের মাধ্যমে জিনিয়ার ওপর নির্যাতন চালাতো। নিজেও মোবাইল ফোনে গালমন্দ করতো প্রতিনিয়ত। খাবারের কষ্ট দেওয়াসহ প্রতিনিয়ত জিনিয়ার ওপর শারিরীক ও মানসিক অত্যাচার করা হতো শ্বশুর বাড়ীতে।
এ বিষয়ে নবাবগঞ্জ থানার ওসি শেখ সিরাজ মোবাইল ফোনে বলেন, শ্বশুর বাড়ীতে জিনিয়ার অবরুদ্ধের খবর পেয়ে অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত সাপেক্ষে প্রথমে তাকে উদ্ধার করা সম্ভব হলেও পরের দিন শিশু জিহাদকে উদ্ধার করে মায়ের কোলে ফিড়িয়ে দেওয়া হয়। সম্পাদনা: হ্যাপী
আপনার মতামত লিখুন :