মহসিন কবির: বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধে জড়াতে চায় না ভারত। ঢাকা বাণিজ্য বিষয়ক যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেটির বদলে কোনো পাল্টা ব্যবস্থা দিল্লি হয়ত নেবে না। টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন এথ্য জানানো হয়েছে।
এদিকে ভারতের সেভেন সিস্টার্স খ্যাত উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সাতটি রাজ্যে আলাদাভাবে বিনিয়োগ টানতে বিশেষ বিনিয়োগ সম্মেলন আয়োজন করতে যাচ্ছে দিল্লি। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেছেন, সময়ের সঙ্গে উত্তর-পূর্ব ভারতের গুরুত্ব বাড়তে থাকবে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টেলিগ্রাফ ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিজেদের বিমানবন্দর ও স্থল বন্দরের জট কমাতে বাংলাদেশকে দেয়া ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করেছে ভারত। এই ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধার আওতায় নেপাল ও ভুটানে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানি করা হতো। তবে ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিলের কোনো প্রভাব পড়বে না বলে দাবি ভারত সরকারের। যদিও দুই দেশের দেদুল্যমান সম্পর্কের মধ্যে এমন সিদ্ধান্ত ভালো চোখে নেয়নি বাংলাদেশ।
এর আগে ভারতের সংবাদমাধ্যমে ফলাও করে বলা হয়েছিল, বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ভারতের সেভেন সিস্টার্স নিয়ে মন্তব্য করার পর ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করেছে তাদের সরকার। তবে এখন সেই অবস্থান থেকে সরে আসছে তারা। কারণ ইতোমধ্যে স্থলপথে ভারত থেকে সুতা আমদানি বন্ধ করে দিয়েছে ঢাকা। ফলে ব্যাপক অর্থনৈতিক ক্ষতির মুখে পড়বে দিল্লি।
টেলিগ্রা ইন্ডিয়ার প্রতিবেদন বলা হয়েছে, আসন্ন উত্তর-পূর্ব বিনিয়োগকারী সম্মেলন-২০২৫-এর সম্ভাব্য অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে এক ভার্চুয়াল বৈঠকে জয়শঙ্কর তাঁদের এই অঞ্চলের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার এবং এর সম্ভাবনা সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর সরকার ও শিল্প উদ্যোক্তাদের কাছে তুলে ধরার আহ্বান জানান।
গতকাল মঙ্গলবার জয়শঙ্কর বলেন, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ভারতের অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ নীতির কেন্দ্রবিন্দুতে আছে। যেমন ‘সবার আগে প্রতিবেশী নীতি’, ‘অ্যাক্ট ইস্ট নীতি’ অথবা ‘বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টিসেক্টরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কো-অপারেশন বা বিমসটেকের’ জন্য এই অঞ্চল গুরুত্বপূর্ণ।
জয়শঙ্কর বলেন, ‘উত্তর-পূর্বের স্থলভাগের সঙ্গে আমাদের পাঁচটি প্রতিবেশী রয়েছে। এই অঞ্চলের সীমানা ভারতীয় উপমহাদেশ এবং আসিয়ানের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে।’ তিনি বলেন, ‘ভারতের নিকটতম প্রতিবেশীদের সঙ্গে সাম্প্রতিক অনেক উদ্যোগ এই অঞ্চল থেকেই শুরু হয়েছে।’ এ সময় ত্রিপক্ষীয় মহাসড়ক ও কালাদান প্রকল্পের মতো অন্যান্য উদ্যোগও সমান গুরুত্বপূর্ণ বলে তিনি উল্লেখ করেন।