শিরোনাম
◈ ভারতের ট্রানজিট সুবিধা বাতিল: বেনাপোল বন্দর থেকে ৪টি ট্রাক ফেরত গেছে ◈ এসএসসি পরীক্ষা শুরু আজ, পরীক্ষায় বসছে সোয়া ১৯ লাখ শিক্ষার্থী ◈ বাংলাদেশে চালু হলো স্টারলিংক ইন্টারনেট সেবা, খরচ পড়বে  কত? ◈ ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিলে দেশের বাণিজ্যে কোনো প্রভাব পড়বে না: বাণিজ্য উপদেষ্টা বশিরউদ্দীন ◈ ড. ইউনূসের অনুরোধ রাখলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প ◈ সৌদি আরবে ১৪টি নতুন তেল-গ্যাস খনির সন্ধান ◈ চীন বাদে সব দেশের ওপর নতুন শুল্ক স্থগিত করলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প ◈ ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল: বাংলাদেশ না ভারত কে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে? ◈ বেকারদের সুখবর দিলেন বিডা চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী ◈ এনসিপির সঙ্গে হেফাজতের বৈঠক, ৪ বিষয়ে একমত প্রকাশ

প্রকাশিত : ০৭ এপ্রিল, ২০২৫, ১১:২৭ দুপুর
আপডেট : ১০ এপ্রিল, ২০২৫, ০৪:০০ সকাল

প্রতিবেদক : আর রিয়াজ

পৃথিবীর প্রথম স্থায়ী সাগরতল গবেষণাগার নির্মাণ করছে চীন

প্রযুক্তির জোরে ফের বিশ্বকে চমকে দিতে চলেছে চীন। এবার তারা হাত দিয়েছে এক অভিনব ও উচ্চাভিলাষী প্রকল্পে—পৃথিবীর প্রথম স্থায়ী সাগরতল গবেষণা কেন্দ্র নির্মাণে। মূলত সমুদ্রের গভীরে লুকিয়ে থাকা মিথেন গ্যাস উত্তোলনের লক্ষ্যেই শুরু হয়েছে এই মেগা প্রজেক্ট, যা ২০২৫ সালের ১ মার্চ আনুষ্ঠানিকভাবে চালু হয়।

এই প্রকল্প সফল হলে চীন যে পরিমাণ জ্বালানির নিয়ন্ত্রণ পাবে, তা পারস্য উপসাগরের প্রমাণিত তেল মজুদের চেয়েও বেশি হতে পারে বলে বিশেষজ্ঞদের অনুমান। প্রায় ৮০ বিলিয়ন টন জ্বালানি তেলের সমান শক্তিশালী মিথেন বরফের (গ্যাস হাইড্রেট) মজুদ রয়েছে চীনের লক্ষ্যস্থলে, যা বিশ্ব জ্বালানি বাজারে এক বড় রদবদলের ইঙ্গিত দিচ্ছে।

চীন এই গবেষণা কেন্দ্রকে ‘কোল্ড স্লিপ জোন’ নামে অভিহিত করেছে। গভীর সাগরের তলদেশে নির্মাণাধীন এই স্টেশনে ছয়জন বিজ্ঞানী কাজ করবেন এবং সাগরতলে দীর্ঘ সময় বসবাসের সবরকম সুবিধাই থাকবে সেখানে। প্রকল্পটি ২০৩০ সালের মধ্যে পূর্ণ কার্যক্ষম হবে বলে জানানো হয়েছে।

তবে এটি শুধু গবেষণার বিষয় নয়, বরং কৌশলগত দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ। দক্ষিণ চীন সাগর এমন এক এলাকা, যেখানে চীনের প্রভাব নিয়ে ফিলিপাইনসহ একাধিক দেশের আপত্তি রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রও এই অঞ্চলে যুদ্ধজাহাজ পাঠিয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে। ফলে এই গবেষণা কেন্দ্র চীনের সামরিক ও জ্বালানি নিরাপত্তার দিক থেকে এক বড় চাল।

প্রশ্ন জাগে—চীন মিথেন নিয়ে এত আগ্রহী কেন? এর জবাব লুকিয়ে আছে পরিবেশ ও কৌশলগত চাহিদায়। কয়লার তুলনায় মিথেন অনেক বেশি পরিবেশবান্ধব—জ্বালানোর পর অর্ধেক পরিমাণ কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গত হয়। ফলে এটি চীনের কয়লানির্ভরতা কমাতে সাহায্য করতে পারে। একইসঙ্গে চীনের তেল আমদানির বড় অংশ মালাক্কা প্রণালির উপর নির্ভরশীল, যা সংকটকালে প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলোর দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হতে পারে। নিজস্ব মিথেন উৎস থাকলে সেই দুর্বলতা অনেকটাই কাটিয়ে ওঠা সম্ভব।

‘আগুনে বরফ’ নামে পরিচিত গ্যাস হাইড্রেট বরফাকারে থাকা অবস্থায় তার আয়তনের ১৬০ গুণ বেশি মিথেন ধারণ করতে পারে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, বিশ্বজুড়ে গ্যাস হাইড্রেট আকারে যে পরিমাণ মিথেন আছে, তা সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত পাওয়া জীবাশ্ম জ্বালানির দ্বিগুণ শক্তি ধারণ করছে।

তবে এর বিপদও কম নয়। তাপমাত্রা ও চাপের সামান্য পরিবর্তনেই গ্যাস হাইড্রেট বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে। দুর্ঘটনা ঘটলে সাগরতলে বড় ধরনের ভূমিধসের সম্ভাবনাও থেকে যায়।

তবুও শক্তির সম্ভাব্য বিপ্লব ও সামরিক দিক থেকে লাভজনক খনিজ সম্পদের আশায় চীন এখন সাগরতলে বাজি ধরছে। আর এই নতুন মিশনে চোখ রাখছে গোটা বিশ্ব—উৎসাহ, উৎকণ্ঠা আর শঙ্কা মিশিয়ে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়