শিরোনাম
◈ ব্যাংককে শুরু বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলন, যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা ◈ লন্ডনের পার্কে মা খালেদা জিয়াকে নিয়ে হাঁটছেন তারেক রহমান (ভিডিও) ◈ চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই পদত্যাগ করলেন দক্ষিণ আফ্রিকার কোচ ◈ যুক্তরাজ্যে হাসপাতালের কেন্টিনে কফির আড্ডায় পলাতক চার মন্ত্রী! ◈ কুমিল্লার চান্দিনায় যাত্রীবাহী বাস দুর্ঘটনায় নিহত ৩ জনের পরিচয় মিলেছে ◈ অবিশ্বাস্য লড়াই শেষে ফাইনালে রিয়াল মাদ্রিদ! ◈ ইসরাইলকে অস্ত্র সরবরাহ করা অনৈতিক: মার্কিন আইনপ্রণেতারা ◈ দিনাজপুর মিনি চিড়িয়াখানায় দর্শনার্থীর সমাগমে সরগরম ও প্রাণবন্ত ◈ তাইওয়ানের চারপাশে চীনের বড় সামরিক মহড়া! ◈ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে লোহাগাড়ায় বাস-মাইক্রোবাস সংঘর্ষে নিহত ১০

প্রকাশিত : ০১ এপ্রিল, ২০২৫, ০২:১৭ রাত
আপডেট : ০২ এপ্রিল, ২০২৫, ১২:০৭ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

তালিকা হালনাগাদ: তরুণ ভোটাররা এবারও বিশেষ হিসাব-নিকাশে 

ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ভোটার তালিকা হালনাগাদ হলে নতুন যুক্ত ও বিদ্যমান তালিকা থেকে মৃতরা বাদ গেলে ভোটার দাঁড়াবে প্রায় সাড়ে ১২ কোটির বেশি।

বয়সভিত্তিক ভোটারদের তথ্য অনুযায়ী, ১৮ থেকে ৩৩ বছর বয়সীদের সংখ্যা ৪ কোটির বেশি, যা মোট ভোটারের প্রায় এক তৃতীয়াংশ।

বরাবরই ভোট এলেই তরুণদের কাছে টানতে মরিয়া হয়ে উঠে দলগুলো। নির্বাচনি ইশতেহারেও থাকে প্রতিশ্রুতির ফুলঝুরি।

শেষপর্যন্ত পছন্দের দল ও প্রার্থী এসব তরুণ ভোটারের কতটুকু টানতে পেরেছে ভোটের বাক্সে তা ফারাক করার সুযোগও থাকে না। সাম্প্রতিক নির্বাচনগুলোতে ভোটের পরিবেশের কারণেও তরুণদের কতজনইবা কেন্দ্রে গেছেন সেটির হিসাবও অনেকটা অজানা।

অন্তর্বর্তী সরকারের তরফ থেকে যেমন তরুণ ভোটারদের তালিকাভুক্ত করতে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে, তেমনি নতুন নির্বাচন কমিশনও তৎপর হয়েছে তরুণদের নিয়ে।

>>২০০৭-২০০৮ সালে ছবিসহ ভোটার তালিকা প্রণয়ন শুরুর পরবর্তী ১৫ বছরে তারা যুক্ত হয়েছে; নবম সংসদের সময় ৮ কোটি ১০ লাখের বেশি ভোটার ছিল।

>> এ বছরের ২ মার্চ ভোটার ছিল ১২ কোটি ৩৭ লাখ।

>> এ বছরের ২০ জানুয়ারিতে থেকে ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে তথ্য সংগ্রহ হয়েছে অর্ধকাটির মতো, বিদ্যমান তালিকা থেকে মৃত ভোটার বাদ যাবে আর ১৯ লাখের মতো। মে মাসে চূড়ান্ত সংখ্যা নির্ধারিত হবে।

>> চলতি মার্চ পযন্ত সব মিলিয়ে ১৮ বছর ও তার বেশি বয়সী ভোটার হচ্ছে এখন ১২ কোটি ৪৪ লাখের বেশি।

জাতীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষক পরিষদ-জানিপপের চেয়ারম্যান নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহর মতে, তরুণ ভোটাররা নির্বাচনে সব সময়ই বড় ‘ফ্যাক্টর’, বিশেষ করে প্রথমবার যারা ভোটার হন। সামনের নির্বাচনে এমন প্রথম ভোটার অন্তত অর্ধ কোটি থাকবেন। এর সাথে ১৮ থেকে ৩০ বয়সী ভোটাররা রয়েছে; যাদের সংখ্যাও নেহায়েত কম নয়।

“তরুণ ভোটাররা সব সময় চলমান রাজনীতির দিকে নজর রাখে। এবারও নতুন ভোটাররা বড় ভূমিকা রাখতে পারে। নির্বাচনি পরিবেশের ওপর সবকিছু নির্ভর করবে। ভোটারদের জন্য নির্বিঘ্ন পরিবেশ তৈরিতে সরকার, ইসিকে কঠোর ভূমিকা নিতে হবে। দল, প্রার্থীকে সহযোগিতা করতে হবে, যা ভোটার উপস্থিতি বাড়ার বড় নিয়ামক।”

বদিউল আলম মজুমদার নেতৃত্বাধীন ‘নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন’ বিগত তিনটি জাতীয় নির্বাচন নিয়ে কঠোর সমালোচনা করেছে।

সরকারের কাছে দেওয়া প্রতিবেদনে সংস্কার কমিশন বলেছে, বাংলাদেশের ইতিহাসে দলীয় সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি। ২০১১ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের পর কারচুপির নির্বাচনের পুরানো সংস্কৃতিই বাংলাদেশে ফিরে আসে। তবে বিগত তিনটি নির্বাচনে যে মাত্রায় এবং ব্যাপ্তিতে কারচুপি হয়েছে সেটা এই দেশের তো বটেই, বৈশ্বিক মানদণ্ডেও বিস্ময় সৃষ্টিকারী, যার পরিণতিও হয়ে দাঁড়ায় প্রলয়ংকরী।

গত তিন নির্বাচন

>> দশম সংসদ নির্বাচন- বিএনপির বর্জন করা ২০১৪ সালের নির্বাচনে ১৪৭ আসনে (বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ১৫৩ আসন) আওয়ামী লীগ ভোট পেয়েছিল ১ কোটি ২৭ লাখ ৫৭ হাজার ৩৪৭।

>> একাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ভোট পেয়েছিল ৬ কোটি ৩১ লাখ ৭৬ হাজার ১১৪টি। সেবার বিএনপি ভোট পায় ১ কোটি ১১ লাখ ১১ হাজার ৭৩৯।

>> দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ১১ কোটি ৮৯ লাখ ৮৯ হাজার ২৪১ ভোটারের মধ্যে ৪ কোটি ৯৯ লাখ ৬৫ হাজার ৪৬৭ জন ভোট দিয়েছেন; প্রদত্ত ভোটের হার প্রায় ৪২ শতাংশ।

এর মধ্যে প্রায় ৬৬ শতাংশ ভোট পেয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা; সংখ্যায় মোট সোয়া তিন কোটিরও বেশি।

জাতীয় পার্টির জয়ী ১১ জন সাড়ে নয় লাখের মত ভোট পেয়েছেন। হেরে যাওয়া প্রার্থীরা পেয়েছেন সাড়ে সাত লাখেরও বেশি। সব মিলিয়ে লাঙলের প্রার্থীরা পেয়েছেন ১৭ লাখের বেশি ভোট

আগের নির্বাচনগুলোই প্রধান দু’দলের ভোট

>> পঞ্চম সংসদ নির্বাচন- বিএনপি -১,০৫,০৭,৫৪৯; আওয়ামী লীগ -১,০২,৫৯,৮৬৬।

>> সপ্তম সংসদ নির্বাচন- আওয়ামী লীগ -১,৫৮,৮২,৭৯২; বিএনপি-১,৪২,৫৫,৯৮৬।

>> অষ্টম সংসদ নির্বাচন- বিএনপি-২,২৮,৩৩,৯৭৮; আওয়ামী লীগ -২,২৩,৬৫,৫১৬।

>> নবম সংসদ নির্বাচন- আওয়ামী লীগ -৩,৩৬,৩৪,৬২৯; বিএনপি-২,২৭,৫৭,১০১।

তরুণ ভোটার নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ও সিইসি

প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস এ বছরের ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের ভোটের সম্ভাব্য সময়ের কথা বলেছেন।

জাতির উদ্দেশে দেওয়া গত ১৬ ডিসেম্বরের ভাষণে এবারের নির্বাচনে প্রথমবারের তরুণ-তরুণী ভোটাররা ১০০ শতাংশের কাছাকাছি সংখ্যায় ভোট দিয়ে ‘ঐতিহ্য’ সৃষ্টি করবে-এমন প্রত্যাশার কথা তুলে ধরেন প্রধান উপদেষ্টা। তার দৃষ্টিতে প্রথমে সবচেয়ে বড় কাজ হল ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা।

তিনি বলেছিলেন, “এটা এমনিতেই কঠিন কাজ। এখন কাজটা আরো কঠিন হল এজন্য যে গত তিনটা নির্বাচনে ভোটারদের অংশগ্রহণ করার সুযোগ ছিল না। ভোটার তালিকা যাচাই করার সুযোগ হয়নি কারও। গত ১৫ বছরে যারা ভোটার হবার যোগ্য হয়েছে তাদের সবার নাম ভোটার তালিকায় তোলা নিশ্চিত করতে হবে। এটা একটা বড় কাজ।”

বিগত বাদ পড়া ভোটার ও নতুনদের তালিকাভুক্ত করতে বর্তমান ইসি বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহের সিদ্ধান্ত নেয়।

বিগত সরকারের দেড় দশকে মানুষ যে ভোট নিয়ে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন মন্তব্য করে সিইসি এএমএম নাসির উদ্দিন ২০ জানুয়ারি বলেছেন, ভোটার হালনাগাদ কর্মসূচির মাধ্যমে ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম শুরু হয়েছে।

“মানুষ তো ভোটের প্রতি আগ্রহই হারিয়ে ফেলেছে। তরুণ অনেকে আমার সাথে দেখা করতে এলে বলে, তারা ভোট দিতে পারেনি। তাদের আমি ভোটের ব্যবস্থা করে দিতে চাই। ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামের শুরু হল।”

বর্তমানে বয়সভিত্তিক ভোটার তথ্য

সব মিলিয়ে ১৮ বছর ও তদুর্ধ্ব নাগরিক এখন ১২ কোটি ৪৪ লাখের বেশি। তাদের মধ্যে চার কোটি ভোটারের বয়স ১৮-৩৩ বছরের মধ্যে।

১৮-২১ বছর বয়সী: ৭৬ লাখ ৮৫ হাজার

২২-২৫ বছর বয়সী: ১ কোটি ১২ লাখ ৫৫ হাজার

২৬-২৯ বছর বয়সী: ১ কোটি ১৪ লাখ ৬৭ হাজার

৩০-৩৩ বছর বয়সী: ১ কোটি ৫ লাখ ১৪ হাজার

সোয়া আট কোটিরও বেশি ভোটারে বয়স ৩৪ বছরের বেশি:

৩৪-৩৭ বছর বয়সী: ১ কোটি ৩৪ লাখ ৭১ হাজার

৩৮-৪১ বছর বয়সী: ১ কোটি ১৯ লাখ ৮৮ হাজার

৪২- ৪৫ বছর বয়সী: ১ কোটি ২০ লাখ ৯৬ হাজার

৪৬-৪৯ বছর বয়সী: ৮৯ লাখ ১২ হাজার

৫০-৫৩ বছর বয়সী: ৭৬ লাখ ১৯ হাজার

৫৪-৫৭ বছর বয়সী: ৭৪ লাখ ৮ হাজার

৫৮-৬০ বছর বয়সী: ৩৪ লাখ ৩৩ হাজার

৬০ বছরের বেশি বয়সী: ১ কোটি ৮৬ লাখ ২৭ হাজার

৫ অগাস্ট পটপরিবর্তনের পর গঠিত নতুন দল জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপি ঐকমত্য কমিশনের কাছে নিজেদের প্রস্তাবনায় তরুণ-তরুণীর বয়স ৩৫ বছর নির্ধারণের সুপারিশ দিয়েছে।

আগামী নির্বাচনে তরুণদের প্রার্থী মনোনয়নের বিষয়টি মাথায় রেখে প্রস্তাবে বলা হয়েছে, প্রার্থী মনোনয়নে দলগুলোকে ১০ শতাংশ তরুণ-তরুণীকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে; যাদের সর্বোচ্চ বয়সসীমা ৩৫ বছর পর্যন্ত ধরা যেতে পারে। উৎস: বিডিনিউজ২৪

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়