শিরোনাম
◈  এত দ্রুত তামিম ইকবালের হার্টে কীভাবে রিং পরানো সম্ভব হলো ◈ ইমাম-মুয়াজ্জিনদের সুখবর দিল ধর্ম মন্ত্রণালয় ◈ সেনাবাহিনীকে জনগণের মুখোমুখি করার চেষ্টা করা হচ্ছে: তারেক রহমান (ভিডিও) ◈ ছিনতাই ও চাঁদাবাজির ঘটনা অনেকাংশে কমে গেছে : ডিএমপি কমিশনার  ◈ দেশের মানুষ তামিমকে কতোটা ভালোবাসে, তাদের আবেগ আর উদ্বেগই তার প্রমাণ: বিসিবি ◈ টানা ৯ দিন বন্ধ ব্যাংক, আগামী শুক্র–শনিবার খোলা থাকবে যেসব শাখা ◈ আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনে কখনোই আপোষ করবে না সেনাবাহিনী, হাসনাতের নতুন পোষ্ট ◈ সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করার হীন প্রচেষ্টা শুরু হয়েছে: মির্জা ফখরুল ◈ ৪৬ ও ৪৭ বিসিএসের লিখিত ও প্রিলি পরীক্ষার সূচি প্রকাশ ◈ হার্টে রিং পরানো হলেও এখনো জটিলতা কাটেনি তামিমের : চিকিৎসক

প্রকাশিত : ২৩ মার্চ, ২০২৫, ১০:৩৪ দুপুর
আপডেট : ২৪ মার্চ, ২০২৫, ০৪:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

হাসনাতের বক্তব্য “অত্যন্ত হাস্যকর ও অপরিপক্ক গল্পের সম্ভার”: নেত্র নিউজকে সেনাসদর

নেত্র নিউজের প্রতিবেদন: আওয়ামী লীগের 'রিফাইন্ড' একটি পক্ষকে রাজনীতিতে পুনর্বাসন করতে রাজি হতে ক্যান্টনমেন্ট থেকে চাপ পাওয়ার বিষয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ যে দাবি করেছেন, সেনাবাহিনী সদর দপ্তর তার প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে নেত্র নিউজের এক প্রতিবেদনে।

শনিবার (২২ মার্চ) নেত্র নিউজকে দেওয়া সেনাসদরের এক বিবৃতিতে সেনানিবাসে খোদ সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামানের সঙ্গে ১১ মার্চ বৈঠকটি হওয়ার কথা স্বীকার করা হলেও হাসনাত আব্দুল্লাহকে 'ডেকে নিয়ে যাওয়া এবং আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনের বিষয় নিয়ে তাদেরকে প্রস্তাব বা চাপ প্রয়োগে'র অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। বরং হাসনাত আব্দুল্লাহ ও এনসিপির আরেক মুখ্য সমন্বয়ক সারজিস আলমের আগ্রহেই ওই বৈঠকটি হয়েছিল বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।

শুক্রবার হাসনাত আব্দুল্লাহর ফেসবুক পোস্টে অভিযোগ করেন, ১১ মার্চ ক্যান্টনমেন্টে এক বৈঠকে আসন সমঝোতা ও আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের প্রস্তাব দেওয়া হয়। তিনি লেখেন: ' কিছুদিন আগে আমি আপনাদের বলেছিলাম যে, "রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ" নামে নতুন একটি ষড়যন্ত্র নিয়ে আসার পরিকল্পনা চলছে। এই পরিকল্পনা পুরোপুরি ভারতের।' 

তিনি বলেন, ক্যান্টনমেন্ট থেকে ১১ মার্চ দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে এক বৈঠকে তাদেরকে এই 'রিফাইন্ড আওয়ামী লীগকে মেনে নিতে সমঝোতা ও সংসদের আসন ভাগাভাগির প্রস্তাব দেওয়া হয়।

হাসনাত আবদুল্লাহর এই পোস্টের পর দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে তুমুল আলোচনার সৃষ্টি হয়।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে যোগাযোগ করলে সেনাসদর একজন মুখপাত্রের মাধ্যমে বক্তব্য দেয় উল্লেখ করা হয় নেত্র নিউজের প্রতিবেদনে। 

নেত্র নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তাদেরকে পাঠানো বিবৃতিতে সেনাসদর নিশ্চিত করেছে যে ওই বৈঠকটি সেনাপ্রধানের সঙ্গেই হয়েছিল; তবে ছাত্রনেতাদের বৈঠকটি আগ্রহেই হয়েছিল বলে তাতে উল্লেখ করা হয়।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, হাসনাত আব্দুল্লাহর পোস্টকে 'সম্পূর্ণ রাজনৈতিক স্ট্যান্টবাজি বই অন্য কিছু নয়' বলেও মন্তব্য করা হয়েছে সেনাসদরের বিবৃতিতে। এছাড়া এই ছাত্রনেতার বক্তব্যকে 'অত্যন্ত হাস্যকর ও অপরিপক্ক গল্পের সম্ভার' হিসেবেও আখ্যা দিয়েছে সেনাবাহিনী।

বিবৃতিতে বলা হয়, 'হাসনাত আব্দুল্লাহ এবং সারজিস আলম দীর্ঘদিন যাবৎ সেনাবাহিনী প্রধানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের জন্য ইচ্ছা পোষণ করছিলেন। পরবর্তীতে সারজিস আলম ১১ই মার্চ ২০২৫ তারিখে সেনাপ্রধানের মিলিটারি এডভাইজারকে ফোন দিয়ে সেনাপ্রধানের সাথে সাক্ষাতের জন্য সময় চান। এর প্রেক্ষিতে মিলিটারি এডভাইজার তাদেরকে সেনাসদরে আসার জন্য বলেন।"

"অতঃপর ১১ই মার্চ দুপুরে সারজিস আলম এবং হাসনাত আব্দুল্লাহ সেনাসদরে না এসে সরাসরি সেনাভবনে সেনাবাহিনী প্রধানের সঙ্গে দেখা করার জন্য অপেক্ষা করেন। পরবর্তীতে সেনাপ্রধান অফিস কার্যক্রম শেষ করে সেনা ভবনে এসে তাদের সঙ্গে দেখা করেন।"

সেনাপ্রধানের সঙ্গে ছাত্রনেতাদের বৈঠকে কী বিষয়ে আলোচনা হয়েছিল, তা নেত্র নিউজ স্বতন্ত্রভাবে নিশ্চিত করতে পারেনি। তবে সেনাবাহিনীর একটি বিশেষ ইউনিটের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা পৃথকভাবে নেত্র নিউজকে বলেছেন, ছাত্রনেতাদের আগ্রহ ও উদ্যোগেই ওই বৈঠকটি হয়েছিল।

নেত্র নিউজের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, আওয়ামী লীগ প্রসঙ্গে আলোচনা হওয়ার বিষয়টি সেনাসদরের বক্তব্যে অস্বীকার করা হয়নি। সেখানে বলা হয়, আলোচনায় আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার প্রসঙ্গ উঠে এলে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান নিজের অভিমতের কথা ছাত্রনেতাদের জানান।

বিবৃতিতে সেনাপ্রধানের বক্তব্যের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়, 'আওয়ামী লীগের যেসব নেতারা ফৌজদারি মামলায় জড়িত নয় ও ক্লিন ইমেজের অধিকারী তাদের সমন্বয়ে নতুন আওয়ামী লীগ আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে নির্বাচন প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক, ফলপ্রসু ও আন্তর্জাতিক মহলে অধিকতর গ্রহণযোগ্যতা পাবে। কিন্তু এ ব্যাপারে সরকার ও সব রাজনৈতিক দল মিলে আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন বলে তিনি মত প্রকাশ করেন।'

আওয়ামী লীগের প্রসঙ্গে দেয়া বক্তব্য সেনাপ্রধানের নিজস্ব অভিমত হিসেবে আখ্যা দিয়ে ছাত্রনেতাদের ওপর চাপ প্রয়োগের অভিযোগ বিবৃতিতে অস্বীকার করা হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, 'প্রকৃতপক্ষে বিষয়টি কোনোক্রমেই তাদেরকে ডেকে নিয়ে যাওয়া এবং আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনের বিষয় নিয়ে তাদেরকে প্রস্তাব বা চাপ প্রয়োগ করার ঘটনা নয়।'

'বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর [মতো] প্রতিষ্ঠিত সুশৃঙ্খল বাহিনীর প্রধান সদ্য প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দলের যুগ্ম সংগঠকদেরকে ডেকে নিয়ে আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনের বিষয়ে নির্দেশনা দিচ্ছেন বা চাপ প্রয়োগ করছেন যা অত্যন্ত হাস্যকর ও অপরিপক্ক গল্পের সম্ভার বলে প্রতীয়মান [হয়]।'

হাসনাত আবদুল্লাহ তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছিলেন: 'আলোচনার এক পর্যায়ে বলি—যেই দল এখনো ক্ষমা চায় নাই, অপরাধ স্বীকার করে নাই, সেই দলকে আপনারা কীভাবে ক্ষমা করে দিবেন! অপরপক্ষ থেকে রেগে গিয়ে উত্তর আসে, "ইউ পিপল নো নাথিং। ইউ ল্যাক উইজডম অ্যান্ড এক্সপিরিয়েন্স। উই আর ইন দিজ সার্ভিস ফর এটলিস্ট ফোর্টি ইয়ার্স। তোমার বয়সের থেকে বেশি। তাছাড়া আওয়ামী লীগ ছাড়া 'ইনক্লুসিভ' ইলেকশন হবে না।'

নেত্র নিউজ লিখেছে, সেনাসদরের বক্তব্যে বলা হয়, এই দুই ছাত্র সমন্বয়ককে সেনাপ্রধান 'অত্যন্ত স্নেহের দৃষ্টিতে ছেলের' মতো দেখতেন। বিবৃতিতে বলা হয়, 'তিনি [স্নেহবৎসল] পরিবেশে তাদের সঙ্গে নানা আলাপচারিতা করেন। প্রাসঙ্গিকভাবে তাদের নতুন দল গঠনের শুভকামনা ও পরবর্তী রাজনৈতিক পথ চলার বিষয়ে নানা প্রসঙ্গে আলাপ করেন।'

'এছাড়াও পরবর্তী নির্বাচনের ব্যাপারে তিনি তাদের রাজনৈতিক দলের প্রস্তুতি, অংশগ্রহণ ও অন্যান্য সক্রিয়ভাবে রাজনৈতিকভাবে প্রতিষ্ঠিত সকল দলের অংশগ্রহণের প্রয়োজনীয়তার ব্যাপারে ব্যাখ্যা করেন,' যোগ করা হয় বিবৃতিতে। 

'সেনাবাহিনী প্রধানের সঙ্গে দেখা করার ১০ দিন পর ফেসবুকে হাসনাত আব্দুল্লাহর এই ধরনের অনভিপ্রেতকর পোস্ট দেওয়া সম্পূর্ণ রাজনৈতিক স্ট্যান্টবাজি বই অন্য কিছু নয়।' সূত্র: বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়