চট্টগ্রামের শীর্ষ সন্ত্রাসী ও একাধিক হত্যা মামলার আসামি সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদকে (২৭) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার (১৫ মার্চ) ঢাকার বসুন্ধরা সিটি থেকে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের একটি দল তাকে গ্রেফতার করে।
এ দিকে এ ঘটনায় রোববার (১৬ মার্চ) সিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করেন চট্টগ্রাম নগর পুলিশ কমিশনার হাসিব আজিজ।
তিনি বলেন, ‘ছোট সাজ্জাদকে ধরার জন্য পুলিশ সদর দফতরের সঙ্গে চট্টগ্রাম নগর পুলিশের গোয়েন্দা তথ্যের সমন্বয় করা হচ্ছিল। পাশাপাশি তাকে ধরার জন্য চট্টগ্রাম পুলিশের একটি দল কয়েকদিন ধরে ঢাকায় অবস্থান করছিল।’
উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) আমিরুল ইসলামের নেতৃত্বে অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মো. জাহাঙ্গীর আলমসহ সিএমপির একটি বিশেষ দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রাত সাড়ে ৯টায় ঢাকা বসুন্ধরা সিটি শপিং কমেপ্লেক্স এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় চট্টগ্রামের অস্ত্রধারী শীর্ষ সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদকে গ্রেফতার করে।
শনিবার রাতেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার একটি ছবি ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে সাজ্জাদকে ছেঁড়া শার্টে দেখা যায়। সাজ্জাদ পালানোর চেষ্টা করায় পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে তার শার্ট ছিঁড়ে যেতে পারে বলে ধারণা কমিশনার হাসিব আজিজের।
তিনি আরও বলেন, ‘গত অগস্টে অক্সিজেন এলাকায় জোড়া খুন এবং পরবর্তীতে চান্দগাঁও এলাকায় প্রকাশ্যে একজনকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় জড়িত সাজ্জাদ। পাশাপাশি প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে চাঁদাবাজি, গার্মেন্টসের ঝুট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ এবং অপরাধী কার্যক্রম করতেন তিনি।’
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সিএমপি কমিশনার বলেন, ‘তাকে যখন ধরতে যাওয়া হয়েছিল, তিনি গুলি ছুড়ে পাঁচ তলা একটি ভবন থেকে আরেকটি ভবনে পালিয়ে চলে যান। এ সময় দুজন লোক আহত হন।
গত বছরের ৫ ডিসেম্বরে নগরের অক্সিজেন মোড় এলাকায় ছোট সাজ্জাদকে ধরতে অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মো. জাহাঙ্গীরের নেতৃত্বে বায়েজিদ বোস্তামী থানা পুলিশ, পাঁচলাইশ থানা পুলিশ ও চান্দগাঁও থানা পুলিশ যৌথ অভিযান পরিচালনা করে। তিনি পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে ছুড়তে পালিয়ে যান। এ সময় তার গুলিতে পুলিশের দুই সদস্যসহ চারজন গুলিবিদ্ধ হন। মূলত চট্টগ্রামের বায়েজিদ, চান্দগাঁও এলাকায় চাঁদাবাজি ও ঝুট ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ করতেন সাজ্জাদ বলে ভাষ্য পুলিশের।
উল্লেখ্য, গত ৩০ জানুয়ারি শীর্ষ সন্ত্রাসী সাজ্জাদকে গ্রেফতারের লক্ষ্যে সিএমপি কমিশনার অর্থ পুরস্কারের ঘোষণা করেছিলেন। তিনি চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় বিল্ডিং নির্মাণ ও ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের মালিকদের কাছ থেকে বিপুল অংকের চাঁদা দাবি করতেন, কেউ চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে তাদের বাড়িতে এবং ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে গিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করে গুলি ছুড়ে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করতেন। এ ধরণের অনেক ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়।
কিছুদিন আগে ফেসবুক লাইভে এসে বায়েজিদ বোস্তামী থানার ওসিকে হত্যার হুমকি দেন সাজ্জাদ এবং তিনি বায়েজিদ থানার আলোচিত ডবল মার্ডার মামলার প্রধান আসামি। তার বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম মহানগর ও চট্টগ্রাম জেলার বিভিন্ন থানায় হত্যা, ছিনতাই, চাঁদাবাজি ও অস্ত্র সংক্রান্ত মোট ১৫টি মামলা রয়েছে।