শিরোনাম
◈ আরাকান আর্মির কাছে জিম্মি ২৬ জেলেকে ফেরত আনল বিজিবি ◈ ঈদের চাঁদ দেখা যাবে কবে, জানাল আবহাওয়া অধিদপ্তর ◈ এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন হলে বছরে ৮ বিলিয়ন ডলার ক্ষতি হতে পারে : সিপিডি ◈ শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে আনা নিয়ে জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে আলোচনা হয়নি: উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন ◈ প্রবল বৃষ্টিতে রক্তের মতো লাল সমুদ্র সৈকত, ভিডিও ভাইরাল ◈ বাংলাদেশের আগামী নির্বাচন পৃথিবীতে নজির সৃষ্টি করবে: জাতিসংঘ মহাসচিব ◈ জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে সেনাপ্রধানের সাক্ষাৎ ◈ জাতীয় ঐক্য ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়েছে: জাতিসংঘ মহাসচিবের সঙ্গে বৈঠক শেষে জামায়াতের নায়েবে আমির ◈ কী ঘটেছিল সেদিন আছিয়াদের বাড়িতে, জানালেন সারজিস ◈ গণপরিষদের মাধ্যমেই সংবিধান সংস্কার করতে হবে: নাহিদ ইসলাম (ভিডিও)

প্রকাশিত : ১৫ মার্চ, ২০২৫, ১১:৫৩ দুপুর
আপডেট : ১৫ মার্চ, ২০২৫, ০৮:০৫ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় রোহিঙ্গাদের যে বার্তা দিলেন ড. ইউনূস (ভিডিও)

রোহিঙ্গা শরণার্থীদের উদ্দেশে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় বক্তব্য দেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসছবি: প্রধান উপদেষ্টার ফেসবুক পেজ থেকে

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গতকাল ১৪ই মার্চ শুক্রবার কক্সবাজারের উখিয়ায় শরণার্থীশিবিরে প্রায় এক লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীর সঙ্গে ইফতার করেছেন। এ সময় রোহিঙ্গা শরণার্থীদের উদ্দেশে অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় বক্তব্য দেন।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘জাতিসংঘ মহাসচিব অনারার হাছে দুঁরি আইস্যেদে, অনারার এক্কানা সাহস অইবার লাই। আবার দুনিয়ার সামনে লড়াই গরিবু, যাতে অনারারে শান্তিপূর্ণভাবে অনারার দেশত পৌঁছাই দিত পারে। ইয়ান মস্ত বড় খুশির হতা। এই খুশির হতা আজিয়া আঁরা অনুভব গরির। আঁরা তাঁরে (আন্তোনিও গুতেরেস) ভীষণভাবে ধন্যবাদ জানাই।’ (জাতিসংঘ মহাসচিব আপনাদের কাছে এসেছেন আপনাদের সাহস দেওয়ার জন্য। শান্তিপূর্ণভাবে আপনাদের দেশে পৌঁছে দিতে তিনি লড়াই করবেন। এটি মস্তবড় খুশির কথা। এই খুশির কথা আজ আমরা অনুভব করছি। আমরা তাঁকে ভীষণভাবে ধন্যবাদ জানাই।)

প্রধান উপদেষ্টা চট্টগ্রামের ভাষায় আরও বলেন, ‘তাঁরে কি হনঅ দেশত আনিত ফারেন না, তার দেশত। বনজঙ্গলর ভিতর ঢুকাইত পারিব না? পাইত্তো নঅ। তাঁরা সরকারঅর বড় বড় হর্তা অলর লই হতা কঅই। এ জঙ্গলর ভিতর যনর হতা নঅ। তেই (আন্তোনিও গুতেরেস) হষ্ট গরি আইস্যে। নিজে রোজা রাইক্কে আজিয়া অনারারলাই।’ (তাঁকে কি কোনো দেশ আনতে পারছে তাঁদের দেশে? বনজঙ্গলে ঢোকাতে পারবে? পারবে না। তাঁরা সরকারের বড় বড় কর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন। এই জঙ্গলের ভেতর যাওয়ার কথা নয়। তিনি কষ্ট করে এসেছেন। আজ আপনাদের জন্য নিজে রোজা রেখেছেন।)

ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘তাঁরে (আন্তোনিও গুতেরেস) আঁরা বারেবারে যিয়ান বুঝাইতাম চাইর, তা অইল, ঈদ আইলে আঁরা বেয়াগ্গুন যাই দাদা–দাদির হবর জিয়ারত গরি। নানা–নানির হবর জিয়ারত গরি। আত্মীয়স্বজনর হবর জিয়ারত গরি। এই মানুষগুইন এডে আইয়েরে ঈদগান গরিবদে এই সুযোগ পাইত নঅ। ইতারার হবর জিয়ারত গরিবার হনঅ সুযোগ নাই। তাঁরে অনারা এক্কান দাওয়াত দঅন। দাওয়াত দিবেন যে কিল্লাই; সাম্মোর বছর ঈদর সমত যেন অনারার বাড়ির মইধ্যে তেঁই (আন্তোনিও গুতেরেস) আইয়ে। ইয়ুর মইধ্যে এহত্র হঅন এবং দাদা–দাদির হবরঅর মইধ্যে যাইয়েনে তাঁরে সংবর্ধনা দঅন।’ (তাঁকে (আন্তোনিও গুতেরেস) আমরা বারবার যেটি বোঝাতে চাইছি, তা হলো, ঈদ এলে আমরা সবাই দাদা–দাদির কবর জিয়ারত করি। নানা–নানির কবর জিয়ারত করি। আত্মীয়স্বজনের কবর জিয়ারত করি। এই মানুষগুলো (রোহিঙ্গা শরণার্থী) এখানে এসে সে সুযোগ পাচ্ছে না। তাঁদের কবর জিয়ারত করার সুযোগ নেই। তাঁকে (আন্তোনিও গুতেরেস) আপনারা দাওয়াত করুন। সামনের বছর ঈদের সময় যেন আপনাদের বাড়িতে তিনি আসেন। আপনাদের বাড়িতে একত্র হন এবং দাদা–দাদির কবর জিয়ারত করে তাঁকে সংবর্ধনা দেন।)

প্রধান উপদেষ্টা রোহিঙ্গাদের উদ্দেশে বলেন, ‘আঁরা এতুগ্গুন মানুষ আইস্যি। তাঁরে আঁরা বুঝাইর, অনারাও বুঝাইতেন লাইগ্গুন। কেউ আঁরারে আইয়েরে ভাত হাবাই যঅক, ইয়ান ত আঁরা ন চাই। আঁরারতো নিজর ক্ষমতা আছে। ধনসম্পদ আছে, জায়গা–সম্পত্তি আছে। আঁরাতো গরিত পারির। আঁরারে দেশত যাইত ন দে বলি, আঁরা মাইনষর বোঝা অই গেইগই। আঁরার পুয়া ছা বড় অইতো চার। দাদা–দাদির হবরঅর পাশে, নিজর ঘরর পাশে, আত্মীয়স্বজনর পাশে; ইয়ান আঁরা ন পারির। তাঁরে (আন্তোনিও গুতেরেস) আঁরা বুঝাইর।’ (আমরা এত মানুষ এসেছি। তাঁকে আমরা বুঝিয়েছি। আপনারাও বুঝাচ্ছেন, কেউ আমাদের এসে ভাত খাইয়ে যাক, তা আমরা চাই না। আমাদের নিজেদেরই ক্ষমতা আছে। ধনসম্পদ আছে। জায়গা–সম্পত্তি আছে। আমরাও করতে পারি। কিন্তু আমাদের দেশে যেতে দেওয়া হচ্ছে না। আমরা এখন মানুষের বোঝা হয়ে গেছি। আমাদের ছেলেমেয়ে দাদা–দাদির কবরের পাশে, নিজের ঘরের পাশে, আত্মীয়স্বজনের পাশে বড় হতে চায়; কিন্তু আমরা তা পারছি না। তাঁকে এসব বিষয় আমরা বোঝাব।)

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘হবরগান বেগ্গুনঅরে দঅন যে, আঁরারে সুযোগ্গান দঅন, যাতে আঁরা নিজর বাড়িত ফিরি যাইত পারি। দুনিয়ার মানুষরে এই হতা বুঝঅম পরিবঅ। তেঁই (আন্তোনিও গুতেরেস) এ দায়িত্ব নিজে লইয়ে। হাজার রহমর দায়িত্ব তাঁর। হডে যুদ্ধ অর, হডে কী অর; বেগ্গিনর দায়িত্ব তাঁর। এত কিছুর ভিতরে অনারার দায়িত্ব হত গুরুত্ব সহকারে তেঁই বিবেচনা গরের, ইয়ান বুঝিত পাইত্তে লাইগ্গুনত। হত গুরুত্ব দিয়ে তেঁই।’ (আপনারা ফিরে যেতে চান, এই খবরটা সবাইকে দিন। দুনিয়ার মানুষকে এই কথা বুঝতে হবে। তিনি (আন্তোনিও গুতেরেস) এই দায়িত্ব নিয়েছেন। হাজার রকমের দায়িত্ব তাঁর। কোথায় যুদ্ধ হচ্ছে, কোথায় অন্য কিছু হচ্ছে; সব কিছুই তাঁকে দেখতে হয়। এতকিছুর ভেতরে আপনাদের দায়িত্ব তিনি গুরুত্ব সহকারেই  বিবেচনা করছেন। এটি আপনারাও বুঝতে পারছেন।)

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়