শরীফ শাওন: শিক্ষাক্ষেত্রে নানা বাধা বিপত্তির কথা উল্লেখ করে প্রতিকারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বারবার ফিজিক্যাল মাস্টারপ্ল্যানের পাশাপাশি একাডেমিক মাস্টারপ্ল্যানের কথা বলেছেন। তারপরও আমরা তা করছি না। আমরা মাস্টারপ্ল্যান করার জন্য বারবার তাগাদা দিচ্ছি।
বুধবার দুপুরে রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে উচ্চ শিক্ষায় অ্যাক্রেডিটেশন বিষয়ক সম্মেলন ও অ্যাক্রিডিটেশন প্রক্রিয়ার উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, আমরা যেখানে জীবনব্যাপী শিক্ষার কথা বলছি, তবে শিক্ষার বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেওয়াল তুলছি কেন? নির্দিষ্ট বয়সের পর আর ভর্তি হওয়া যাবে না, বেশি ভর্তি পরীক্ষা দেওয়া যাবে না, এক বিষয়ে ভর্তি হবার পর অন্য বিষয়ে পড়া যাবে না। এসকল বিষয় কেন বলছি, সেটা আমার বোধগম্য নয়। আইন বিষয়ে পড়ার পর আমি চাইলে ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়ব, ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়ার পর আমি চাইলে সাহিত্য নিয়ে পড়ব, কিন্তু কেন আমি পড়তে পারব না। আমাদের কেন দেয়াল তুলতে হবে!
এসকল দেওয়াল তোলার কারণে অনেকের পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ১৮ বছর বয়সে সিদ্ধান্ত নিলাম আমি সাহিত্য, পদার্থবিজ্ঞান বা রসায়ন নিয়ে পড়ব। ছয় মাস, এক বছর, তিন বছর পর আমার মনে হল আমি এই বিষয়ে পড়তে চাই না। কিন্তু আমার সামনে পথ খোলা নেই। আমাকে ধরে নিতে হবে, এটা আমার ব্রেক অফ স্টাডি। সারা বিশ্বে এটা পারলে বাংলাদেশে কেন পারবে না।
দীপু মনি জানান, আমরা শিক্ষার্থীদের সার্টিফিকেট দিচ্ছি, সেটা তার জীবনে বা কর্মজগতে কতটা কাজে লাগাতে পারছে, এ বিষয়গুলো দেখার দায়িত্ব আমাদের। কাজেই কর্মজগতের চাহিদার বিষয় আমাদের মাথায় রাখতে হবে।
শিক্ষাব্যবস্থা পরিবর্তনে গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১০০ বছর আগে যেসকল বিষয় চালু ছিলো, আজকের দিনে সেই বিষয়গুলো কতটুকু প্রাসঙ্গিক তা আমাদের দেখতে হবে। শিক্ষার পরিবেশ বিবেচনায় না নিয়ে আমরা শুধু শিক্ষার্থী ভর্তি করে যাচ্ছি। কত বেশি শিক্ষার্থী ভর্তি করতে পারছি, সেটা নিয়ে ব্যস্ত আমরা। দীপু মনি বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমাদের নিজেদের তৈরি করতে হবে।
সেক্ষেত্রে শিক্ষায় গুণগত মান আমাদের অর্জন করতেই হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। আমাদের আন্তর্জাতিক মানের সাথে সামঞ্জস্য রাখতে হবে। সেজন্য অ্যাক্রিডিটেশন প্রক্রিয়া অনেক বেশি জরুরি। অ্যাক্রিডিটেশন একটা ফলপ্রসূ প্রক্রিয়া। শুধু বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মান নির্ণয় হবে এমনটি নয়, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও সেলফ অ্যাসেসমেন্টের মধ্যে দিয়ে অনেক কিছু শিখবে। নিজেদের ছাড়িয়ে যাবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অ্যাক্রিডিটেশন প্রক্রিয়ায় এলে খুব দ্রুত সুফল পাবে।
আপনার মতামত লিখুন :