শিরোনাম
◈ আসছেন জাতিসংঘের মহাসচিব: গুরুত্ব পাবে রোহিঙ্গা সংকট ও মানবাধিকার প্রসঙ্গ   ◈ ভূমিকম্পের আভাস: ঢাকায় তাৎক্ষণিক ২ লাখ মানুষের প্রাণহানির শঙ্কা ◈ মাগুরায় ধর্ষণের শিকার শিশুটির সর্বশেষ অবস্থা জানাল আইএসপিআর ◈ ৪৮টি থানা এলাকায় পুলিশের সহায়ক হিসেবে কাজ করবে অক্সিলারি ফোর্স ◈ আ. লীগের নেতা-কর্মীরা নিষিদ্ধ হলে কোথায় যাবে? ◈ বুয়েটে চান্সপ্রাপ্ত মেধাবী ছাত্র শান্ত বিশ্বাসের পাশে তারেক রহমান ◈ আমরা ৫ আগষ্টের পর নতুন একটি শব্দ শুনতে পাচ্ছি মব কালচার : ইশরাক  ◈ কুয়েটে রাজনীতিতে জড়ালে আজীবন বহিষ্কার ও ছাত্রত্ব বাতিল ◈ হাবীবুল্লাহ বাহার কলেজের সাবেক উপাধ্যক্ষ নিজ বাসায় খুন ◈ সিএমএইচে চিকিৎসাধীন মাগুরায় ধর্ষণের শিকার শিশুটি লাইফ সাপোর্টে

প্রকাশিত : ১১ মার্চ, ২০২৫, ০২:৪০ রাত
আপডেট : ১১ মার্চ, ২০২৫, ০৪:০০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

৪৮টি থানা এলাকায় পুলিশের সহায়ক হিসেবে কাজ করবে অক্সিলারি ফোর্স

পুলিশের কাজে সহায়তার জন্য ‘অক্সিলারি ফোর্স’ নিয়োগ দিবে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। পুলিশের এই ইউনিটের ৪৮টি থানা এলাকায় এই ফোর্স সহায়ক হিসেবে কাজ করবে। একজন পুলিশ সদস্য যে দায়িত্ব পালন করেন ঠিক একই দায়িত্ব পালন করবে   অক্সিলারি ফোর্সের সদস্যরা। তাদের কাছে গ্রেপ্তারের ক্ষমতাসহ পুলিশ আইনগতভাবে যেসব প্রটেকশন পায় একই রকম প্রটেকশন তারাও পাবে। ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলীর এমন ঘোষণার পর থেকে অক্সিলারি ফোর্স নিয়ে নানা আলোচনা হচ্ছে। তারা কীভাবে কাজ করবে, দায়িত্ব কী হবে, কী ধরনের ক্ষমতা থাকবে। বেসরকারিভাবে নিয়োগ পাওয়া এই সদস্যদের হাতে পুলিশের ক্ষমতা দিলে এর অপব্যবহার নিয়ে শঙ্কার কথাও কেউ কেউ বলছেন। বিশ্বের বিভিন্ন শহর বা নগর পুলিশে এই ধরনের সহায়ক পুলিশ নিয়োগের রীতি থাকলেও দেশে এর আগে সরাসরি পুলিশি ক্ষমতা দিয়ে বেসরকারি কাউকে পুলিশে নিয়োগের নজির নেই। ফলে এ নিয়ে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। 

ডিএমপি’র সূত্রগুলো জানিয়েছে, ডিএমপি অর্ডিন্যান্স ১৯৭৬ অনুযায়ী কমিশনার অক্সিলারি ফোর্স নিয়োগ দিচ্ছে। শপিংমল ও আবাসিক এলাকার বেসরকারি নিরাপত্তাকর্মীদের পাশাপাশি স্থানীয় ব্যক্তিদেরও এই ফোর্সে যুক্ত করা হচ্ছে। আপাতত ঈদ পর্যন্ত নিরাপত্তা কার্যক্রম চালাতে অন্তত ৫০০ সদস্যের অক্সিলারি ফোর্স নিয়োগ দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। তবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পরেও এই ফোর্সের কার্যক্রম চালু রাখার চিন্তাভাবনা রয়েছে ডিএমপি’র। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন পৃথিবীর অন্যান্য দেশের মতো ঢাকায়ও যদি এমনটা করা হয় তবে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। তাদেরকে গ্রেপ্তারি ক্ষমতা দিলে কিছু ক্ষেত্রে নেতিবাচক সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। তবে নিয়োগের আগে অবশ্যই সেই বিষয়গুলো ভাবতে হবে। কাদেরকে নিয়োগ দেয়া হবে, তারা ঠিক কী কী কাজ করতে পারবে। অক্সিলারি সদস্যরা যাতে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত থাকেন সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে। তাদের পুলিশ বাহিনীর মতো প্রশিক্ষণ, দক্ষতা কিংবা দায়বদ্ধতার জায়গাগুলো থাকবে না। এমনকি তাদের কোনো ধরনের অস্ত্র দেয়া হবে কি না সেটি নিয়েও আইনে স্পষ্ট করে কিছু বলা নেই। এছাড়া সারা দেশে এখন রাজনৈতিক অস্থিরতা চলছে। যাদেরকে নিয়োগ দেয়া হবে তারা যেন কোনোভাবেই রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত না হন। যদি হন তবে মূল উদ্দেশ্যই সফল হবে না। 

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ অর্ডিন্যান্স-১৯৭৬ এর দ্বিতীয় অধ্যায়ে এই অক্সিলারি ফোর্স নিয়োগের কথা বলা আছে। ১০ ধারায় ১-উপধারায় বলা হয়, যখন মনে হবে যে বাহিনীর সহায়তার প্রয়োজন, তখন পুলিশ কমিশনার যে কোনো ব্যক্তিকে বাহিনীকে সহায়তা করার জন্য সহায়ক পুলিশ অফিসার হিসেবে নিয়োগ করতে পারেন। উপধারা-২-এ বলা হয়, প্রত্যেক সহকারী পুলিশ অফিসার নিয়োগপ্রাপ্ত হবেন এবং নির্ধারিত ফর্মে একটি সনদ পাবেন। ২-উপধারার (খ)তে বলা হয়েছে, অন্য যে কোনো পুলিশ কর্মকর্তার মতো সহায়ক পুলিশ কর্মকর্তার একই ক্ষমতা এবং দায়মুক্তি থাকবেন। পাশাপাশি একই দায়িত্ব পালনের জন্য দায়ী থাকবেন এবং একই শাস্তির জন্য দায়ী থাকবেন। তারা অন্য যে কোনো পুলিশ অফিসারের মতো একই কর্তৃপক্ষের অধীন হবেন। যদিও এই ধারায় অক্সিলারি ফোর্সের সদস্যরা গ্রেপ্তারি ক্ষমতা বা তদন্ত ক্ষমতা পাবেন কি না, তা স্পষ্ট করে বলা নেই।
পুলিশের সূত্রগুলো বলছে, ডিএমপি’র অধ্যাদেশ অনুযায়ী কমিশনার প্রয়োজন মনে করলে পুলিশকে সহায়তার জন্য যে কোনো ব্যক্তিকে যে কোনো সময় ‘অক্সিলারি পুলিশ অফিসার’ হিসেবে নিয়োগ দিতে পারবেন। পুলিশের মতোই তাদের দায়িত্ব ও ক্ষমতা থাকবে। তারা যদি আইনের ব্যত্যয় ঘটায় বা অপরাধ করেন, তবে পুলিশের ক্ষেত্রে যে ধরনের শান্তির কথা বলা আছে, তাদের ক্ষেত্রেও একই শাস্তির বিধান থাকবে। ডিএমপি অধ্যাদেশের ১০ ধারা প্রয়োগ কীভাবে হবে, এ-সংক্রান্ত কোনো বিধিমালাও নেই। ফলে এই মুহূর্তে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোন কোন বিষয়কে প্রাধান্য দেয়া হবে, সেটি ঠিক করা হচ্ছে।

ডিএমপি জানিয়েছে, ঢাকার ৫০টি থানার মধ্যে ৪৮টি থানায় এই  অক্সিলারি ফোর্স নিয়োগ করা হবে। প্রাথমিক পর্যায়ে ছোট থানা হওয়াতে আদাবর ও ক্যান্টনমেন্ট থানায় এই কার্যক্রম চালু হবে না। বাকি ৪৮ থানায় প্রাথমিকভাবে গড়ে ১০ জন করে সদস্য কাজ করবেন। প্রাথমিকভাবে এই নিয়োগের কোনো মেয়াদ থাকবে না। নিয়োগকারী তা নির্ধারণ করবেন। তবে তাদের কোনো বেতন বা ভাতা দেওয়া হবে না। শুধু সার্টিফিকেট দেওয়া হবে। নিয়োগ পাওয়া সদস্যরা স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সহায়তা করবেন। আদাবর থানায় অক্সিলারি ফোর্স না থাকার কারণ হিসাবে ডিএমপি জানিয়েছে, রমজানে শপিংমল ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানকে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে। এছাড়া বড় থানা এলাকাগুলোকে প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। এই হিসাবে আদাবর থানাটি ছোট ও এই এলাকায় উল্লেখযোগ্য কোনো শপিংমল নাই। আদাবর থানায় যে পরিমাণ পুলিশ সদস্য রয়েছে তাদের পক্ষেই দায়িত্ব পালন সম্ভব। 

ডিএমপি’র মিডিয়া শাখার ডিসি তালেবুর রহমান বলেছেন, পুলিশ যেমন দায়িত্ব পালন করে, সহযোগী ফোর্স ঠিক একইভাবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা, আটক বা নিয়মিত টহলের মতো দায়িত্বগুলো পালন করতে পারবে। তবে তারা কোনো ধরনের তদন্ত করতে পারবে না। নিয়োগ পেতে যাওয়া পুলিশের সহায়ক এই ফোর্সের সদস্যদের হাতে একটি ব্যান্ড থাকবে, যা তাদের পরিচয় নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে। আইন অনুযায়ী একজন পুলিশ সদস্য যে দায়িত্ব পালন করেন, সেই একই দায়িত্ব পালন করবেন অক্সিলারি ফোর্সের সদস্যরা। তাদের গ্রেপ্তারের ক্ষমতা থাকবে এবং পুলিশ আইনগতভাবে যে প্রোটেকশন পায়, ঠিক একই রকম প্রোটেকশন পাবে ফোর্সের সদস্যরা। উৎস: মানবজমিন।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়