শিরোনাম
◈ কত টাকা বেতন পাবেন এমপিওভুক্ত দেড় হাজার এবতেদায়ী মাদ্রাসার শিক্ষকরা? ◈ জুলাই গণহত্যার মামলা আইসিসিতে পাঠানোর পরামর্শ টবি ক্যাডম্যানের ◈ কারা থাকছেন এমপিদের ‘ন্যাম ভবনে’  ◈ এএসপি পদে পদোন্নতি পেলেন ১৪ পুলিশ পরিদর্শক ◈ স্ত্রী-কন্যাসহ খায়রুজ্জামান লিটনের বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা ◈ ইরান একের পর এক নতুন অস্ত্র প্রদর্শন করছে , নিচ্ছে কঠোর প্রস্তুতি ◈ ট্রাম্পের ‘লাস্ট ওয়ার্নিং’ এর তীব্র প্রতিক্রিয়ায় যা বলল হামাস! ◈ ফেব্রুয়ারিতে রেমিট্যান্স সবচেয়ে বেশি এসেছে যেসব দেশ থেকে, যা জানাগেল ◈ এনআইডি সেবা নিয়ে দোটানায় সরকার ◈ যে কারণে স্বাধীনতা পুরস্কার গ্রহণ করবেন না বদরুদ্দীন উমর

প্রকাশিত : ০৭ মার্চ, ২০২৫, ০১:২৯ রাত
আপডেট : ০৭ মার্চ, ২০২৫, ০৩:৫০ রাত

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

কারা থাকছেন এমপিদের ‘ন্যাম ভবনে’ 

কয়েক মাস আগেও মানিক মিয়া এভিনিউয়ের পাশে ‘সংসদ সদস্য ভবনগুলোতে’ ছিল অন্যরকম চিত্র। এসব ভবনে ব্সবাস করতেন সংসদ সদস্য ও তাদের পরিবার। এসব ভবনেই এমপি-মন্ত্রীদের আত্মীয়-স্বজন ছাড়াও বিভিন্ন তদবির নিয়ে ছুটে আসতেন নেতাকর্মীরা। সবসময় থাকতো মানুষের আনাগোনা। বিকালে শিশুদের খেলাধুলা, হৈ-হুল্লোর ও কোলাহল বিরাজ করতো। তবে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বদলে যায় চিত্র। চকচকে এই এলাকায় নেমে আসে নিরবতা, রাত হলে যা ভূতুরে রূপ নিতো। তবে সম্প্রতি রাতে এসব ভবনের কয়েকটি ফ্ল্যাটে নিয়মিতই আলো জ্বলতে দেখা যাচ্ছে। তাই কৌতুহলী অনেকেরই প্রশ্ন, সংসদ এখন অকার্যকর, তাহলে এমপিদের এসব ভবনে থাকছেন কারা?

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঢাকায় আন্তর্জাতিক সংগঠন জোট-নিরপেক্ষ আন্দোলন বা নন অ্যালায়েন্ড মুভমেন্টের (ন্যাম) সম্মেলনকে কেন্দ্র করে নব্বইয়ে দশকের শেষদিকে ‘ন্যাম ভবন’ তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়। মূলত এই সম্মেলনের অতিথিদের থাকার জন্য রাজধানীর তিনটি এলাকা মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ, নাখালপাড়া ও মিরপুরে তৈরি করা হয় এসব ভবন। পরবর্তী সময়ে অষ্টম জাতীয় সংসদে ‘ন্যাম ভবনের’ সব ফ্ল্যাট সংসদ সদস্যদের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়। 

এর মধ্যে শেরেবাংলা নগরের মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে রয়েছে ছয়টি ভবন। যেখানে ফ্ল্যাট রয়েছে ২৪০টি। এসব ফ্ল্যাটে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে নামে মাত্র ভাড়া দিয়ে বসবাস করতেন এমপিরা। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, গত ৫ আগস্টে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের দিন দুপুর থেকেই পরিস্থিতি আঁচ করতে পেরে কোনোরকমে সেখান থেকে নিরাপদ গন্তব্যে চলে গেছেন মন্ত্রী-এমপিদের স্বজনরা। অবশ্য সংসদ অধিবেশন না থাকায় অধিকাংশ এমপি আগে থেকেই নিজ এলাকায় অবস্থান করছিলেন। সরকার পতনের খবরের পর ছাত্র-জনতা সংসদ ভবন, গণভবনে ভাঙচুর চালানোর পাশাপাশি এসব ভবনেও ব্যাপক ভাঙচুর চালায়। এরপর থেকেই এক-দেড় মাস দুয়েকজন কর্মচারী ছাড়া সেখানে কেউ ছিলেন না।

গত বুধবার (৫ মার্চ) সন্ধ্যার পর সেখানে গিয়ে দেখা গেলো, চারিদিকে এখনও সুনসান ও ভূতুরে পরিবেশ। দুই-তিন জন পুলিশ সদস্য নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছেন। ছয়টি ভবনের মধ্যে ১ ও ৩ নং ভবনের কয়েকটি ফ্ল্যাটে আলো জ্বলছে। আর বাকিগুলোতে অন্ধকার।

এই ভবনগুলোতে কারা থাকছেন জানতে চাইলে কেয়ারটেকার হুমাযূন কবির বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এ দুটি ভবনের কয়েকটি কক্ষে সেনাবাহিনী ও পুলিশের অস্থায়ী ক্যাম্প রয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘কিছু কিছু কক্ষে বিগত সরকারের এমপিদের স্বজনদের কিছু আসবাবপত্র ও মালামাল রয়েছে। সেগুলো নিয়ে যাওয়ার জন্য তাদের চিঠি দিলেও সংশ্লিষ্টদের পরিবারের পক্ষ থেকে কেউ আসেননি। এর মধ্যে কয়েকজন সংসদ সদস্যের আত্মীয়রা এসে কিছু জিনিসপত্র নিয়ে গেছেন। আর বেশিরভাগই রয়ে গেছে।’

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন অভ্যর্থনা কর্মী জানান, সম্প্রতি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে কর্মরত রাষ্ট্রপক্ষের কয়েকজন প্রসিকিউটরও সেখানে থাকছেন।

ন্যাম ভবনের দেখভালের দায়িত্বে রয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ বিভাগ। অবশ্য এ ব্যাপারে জানতে লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক সচিব ড. হাফিজ আহমেদ চৌধুরীকে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি।

পরে এ বিষয়ের সত্যতা জানতে যোগাযোগ করা হলে প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আমরা সুপ্রিম কোর্টের কাছাকাছি নিউ মার্কেট বা বেইলি রোডে কোনও সরকারি বাসভবন চেয়েছিলাম। কিন্তু সেখানে কোনও বাসা ফাঁকা নেই। আর এই ভবনগুলো (ন‍্যাম ভবন) দীর্ঘদিন পরে থাকায় কোনও রাজস্ব আসছে না। সবকিছু বিবেচনায় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের আবাসন দফতর থেকে পুরো বাসা ভাড়া দেওয়া সাপেক্ষে এখানে থাকার অনুমতি দিয়েছেন। আমরা যা বেতন পাই, তা থেকে ভাড়া কর্তন করা হয়। তবে দূরবর্তী হওয়ায় অনেক প্রসিকিউটর এখানে আর ওঠেননি।’

ভবনের দায়িত্বে রয়েছে সংসদ সচিবালয়, তাহলে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় কীভাবে বরাদ্দ দিয়েছে; বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, সংসদ সদস‍্যরা চলে যাওয়ার পর সংসদ সচিবালয় এর দায়িত্ব গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের কাছে ছেড়ে দিয়েছে।

আরেক প্রসিকিউটর বিএম সুলতান মাহমুদ বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, ওখানে প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম ও ব‍্যারিস্টার মঈনুল করিম বসবাস করছেন। তারা মন্ত্রণালয়ের (গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়) অনুমতি নিয়েই সেখানে বসবাস করছেন। তাদের নামে মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দপত্রও আছে। বিধি অনুসারে তাদের বেতন থেকে ভাড়াও কেটে নেওয়া হয়।

এই ভবনে নিজেও বরাদ্দ পেয়েছিলেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সেখানে আমাকেও বাসা দিয়েছিল। কিন্তু যাতায়াতে দূরে হওয়ায় আমি সেখানে উঠিনি।’ উৎস: বাংলাট্রিবিউন।

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়