শিরোনাম
◈ যৌথ বাহিনীর অভিযানে ঢাকা মেডিক্যালে আটক অর্ধশতাধিক (ভিডিও) ◈ ভারতে শেখ হাসিনার ৭ মাস, যেসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে জনগণ ◈ যে কারণে সামরিক ফ্লাইট স্থগিত করল ট্রাম্প প্রশাসন ◈ গত কয়েক দিন ধরে বেড়েছে অগ্নিদুর্ঘটনা, যে সতর্কবার্তা দিল সেনাবাহিনী ◈ লন্ডনে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের ওপর হামলার চেষ্টা (ভিডিও) ◈ নারী শ্রমিকদের মাতৃত্বকালীন ছুটি ১২০ দিন করা হচ্ছে: শ্রম উপদেষ্টা ◈ চাঁদপুরে রমজান উপলক্ষে কার্ড ছাড়াই দেয়া হচ্ছে টিসিবির পন্য ◈ অপরাধ বৃদ্ধিতে তরুণদের মনে ক্ষোভ ও বিস্ময়! ◈ সরকারি যানবাহনের চালকরা আইন অমান্য করলেই ব্যবস্থা: গণবিজ্ঞপ্তি ◈ এবার মুশফিককে নিয়ে মাশরাফির আবেগঘন পোস্ট

প্রকাশিত : ০৬ মার্চ, ২০২৫, ০১:৪১ রাত
আপডেট : ০৬ মার্চ, ২০২৫, ০৪:০০ দুপুর

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

প্রথম দ্বিপক্ষীয় সফরে চীন যাচ্ছেন ড. ইউনূস: বৈঠকে গুরুত্ব পাবে যেসব বিষয় 

ঢাকা ও দিল্লির মধ্যে অস্বস্তিকর সম্পর্ক এবং যুক্তরাষ্ট্রে ডোনাল্ড ট্রাম্প রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব নেওয়ার প্রেক্ষাপটে চীন সফরে যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ২৮ মার্চ বেইজিংয়ে চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করবেন প্রধান উপদেষ্টা। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের পাশাপাশি ক্রমপরিবর্তনশীল ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়েও দুই নেতার মধ্যে আলোচনা হতে পারে। বৈঠকে গুরুত্ব পেতে পারে চীনের রাষ্ট্রপতির তিন বৈশ্বিক উদ্যোগ– গ্লোবাল ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভ, গ্লোবাল সিকিউরিটি ইনিশিয়েটিভ, এবং গ্লোবাল সিভিলাইজেশন ইনিশিয়েটিভ। সবকিছু মিলিয়ে এই সফরকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিচ্ছে ঢাকা। খবর: বাংলাট্রিবিউন।

এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার চীন সফরকে আমরা অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখছি। এই সফরের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘এবারের সফরে চীনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং ও প্রধান উপদেষ্টার মধ্যে বেইজিংয়ে বৈঠক হবে। এছাড়া বাউ ফোরাম ফর এশিয়া কনফারেন্সে বক্তব্য রাখবেন প্রধান উপদেষ্টা।’

উল্লেখ্য, চীনের হাইনান প্রদেশে ২৫ থেকে ২৮ মার্চ অনুষ্ঠেয় বাউ (বিওএও) ফোরাম ফর এশিয়া কনফারেন্সে যোগ দেওয়ার জন্য প্রধান উপদেষ্টাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। পরবর্তীতে চীনের রাষ্ট্রপতির সঙ্গে বৈঠকের বিষয়টি চূড়ান্ত হওয়ার পরে বাউ (বিওএও) ফোরাম কনফারেন্সে প্রধান উপদেষ্টা যোগ দেবেন বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। উভয়পক্ষ রাজি হলে এবারের সফরে একাধিক চুক্তি সই হতে পারে বলে জানিয়েছে একাধিক সূত্র।

আরেকজন কর্মকর্তা জানান যে গত জানুয়ারিতে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন চীন সফর করেন এবং দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০তম বার্ষিকী উপলক্ষে উচ্চপর্যায়ের সফরের বিষয়ে আলোচনা করেন।

এছাড়া বছরজুড়ে দুই দেশ বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান করবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার চীন। এছাড়া দেশটির বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ রয়েছে বাংলাদেশের প্রতি। এবারের সফরে বিনিয়োগ সম্পর্ক গুরুত্ব পেতে পারে।’

ক্রমপরিবর্তনশীল ভূ-রাজনীতি : কূটনীতিতে চিরস্থায়ী বলে কিছু নেই। আজকে যে দেশ বন্ধুভাবাপন্ন বা কম বন্ধুভাবাপন্ন, কাল হয়তো স্বার্থ বা অন্য কারণে দৃষ্টিভঙ্গি বা অবস্থানের পরিবর্তন হতে পারে। যেমন ২০২৪-এর ৫ আগস্টের আগে বাংলাদেশের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করেছে ভারত। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল কিছুটা কম উষ্ণ। কিন্তু এখন পরিস্থিতি ভিন্ন। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক কিছুটা অস্বস্তিকর এবং যুক্তরাষ্ট্রের বাইডেন প্রশাসনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক ছিল চমৎকার এবং ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গেও যোগাযোগ বাড়াচ্ছে ইউনূস সরকার। ইতোমধ্যে ট্রাম্পের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বন্ধু ইলন মাস্কের সঙ্গে টেলিফোনে আলাপ হয়েছে প্রধান উপদেষ্টার।

এ বিষয়ে সাবেক একজন কূটনীতিক বলেন, ‘বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের মাত্রা ও গভীরতা নির্ভর করে ঢাকার জাতীয় স্বার্থ এবং ওইসব দেশের আগ্রহের ওপর।’

উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের বিভিন্ন উন্নয়নশীল কর্মকাণ্ডে আগ্রহ দেখাচ্ছে চীন। আবার বাংলাদেশের সঙ্গে ব্যবসায়িক সম্পর্ক বাড়াতে আগ্রহী যুক্তরাষ্ট্র। উভয়ক্ষেত্রে জাতীয় স্বার্থ বিবেচনা করে সরকার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে এবং নেবে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে জ্বালানি ক্রয় বা ইলন মাস্কের সঙ্গে ব্যবসায়িক যোগাযোগ বাড়ানোর বিষয়ে ইতোমধ্যে সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’

ভারতের সঙ্গে অস্বস্তিকর সম্পর্কের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে পটপরিবর্তনের আগেও বাংলাদেশিদের ভিসা প্রদানে কোনও সমস্যা ছিল না ভারতের। বছরে ১৫ লাখেরও বেশি ভিসা ইস্যু করা হতো। এর একটি বড় অংশ ছিল মেডিক্যাল ভিসা এবং সেটিও এখন অনেক সংকুচিত।’

তিনি বলেন, ‘ভারতীয়রা কেন এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে সেটির ব্যাখ্যা তারাই দিতে পারবে। কিন্তু বাংলাদেশিরা তাদের মতো করে পরিবর্তিত পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেবে এবং নিচ্ছে।’

মেডিক্যাল ট্যুরিজম : ভিসা ইস্যুর মাধ্যমে একটি দেশ আরেকটি দেশের ওপর বড় ধরনের প্রভাব রাখতে পারে। এর বড় উদাহরণ ভারত। বাংলাদেশিদের একটি বড় অংশ পর্যটক হিসেবে ছাড়াও চিকিৎসার জন্য ভারতে যেতো এবং কূটনীতিকে এটি প্রভাববিস্তারকারী বড় একটি উপাদান। বর্তমানে ভারতীয় ভিসা সংকুচিত হওয়ার কারণে বাংলাদেশ বিভিন্ন দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। এ বিষয়ে এগিয়ে এসেছে চীন এবং বাংলাদেশ থেকে মেডিক্যাল টুরিস্টের প্রথম দলটি আগামী ১০ মার্চ চীনের কুনমিংয়ের উদ্দেশ্যে রওনা হবে।

এ বিষয়ে আরেকজন সাবেক কূটনীতিক বলেন, ‘নতুন বাস্তবতার আলোকে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সহযোগিতার ধরন পরিবর্তন করছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। বাংলাদেশ চীনকে অনুরোধ করছে বাংলাদেশিদের চিকিৎসার জন্য কুনমিংয়ে তিনটি হাসপাতাল নির্ধারিত করে দেওয়ার জন্য এবং বেইজিং সেই অনুরোধে সাড়া দিয়েছে।’

চীনের চিকিৎসা ব্যবস্থার ওপর বাংলাদেশিরা সন্তুষ্ট হলে সেখানে আরও মেডিক্যাল ট্যুরিজম বাড়বে এবং এর ফলাফল হিসেবে কোমল শক্তির বহিপ্রকাশ হিসেবে চীনের প্রভাব বাংলাদেশে বৃদ্ধি পেতে পারে বলে তিনি জানান। 

 

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়