বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মুনতাসির আল জেমি জেলখানা থেকে পালিয়েছেন। গত ৫ আগস্টের পরে এ ঘটনা ঘটলেও ৬ মাস পর আজ সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বিষয়টি জানানো হয়েছে বলে জানান আবরার ফাহাদের ছোট ভাই ও বুয়েট ছাত্র আবরার ফাইয়াজ।
আজ সন্ধ্যায় ফেসবুকে দেয়া এক পোস্টে তিনি এ তথ্য জানান। ফেসবুকের পোস্টে আবরার ফাইয়াজ লিখেন, ‘আবরার ফাহাদ হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত আসামি জেমি জেলখানা থেকে পালিয়ে গেছে ৫ আগস্টের পরে। অথচ আমাদের জানানো হচ্ছে আজকে, যখন ওর আইনজীবী কোনো যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করতে আসেনি তখন। ফাসির আসামির তো কনডেমন সেলে থাকার কথা ছিল, সে পালায় কীভাবে! পালানোর পরেও এ তথ্য বাইরে না আসা তো এটাই প্রমাণ করে যে, তাকে ধরতেও কোনো চেষ্টা করা হয়নি। পূর্বে থেকেই আরো ৩জন পলাতক আছে।
পোস্টের নিচে তিনি আসামির নাম-ঠিকানাও দিয়েছেন। যেখানে উল্লেখ করা হয়— মুনতাসির আল জেমি, পিতা-আব্দুল মজিদ, মাতা- জোসনা বেগম, ঠিকানা: ৫/১ বাউন্ডারি রোড, নতুন বাজার, কোতোয়ালি, ময়মনসিংহ।
ফাঁসির আসামি মুনতাসির আল জেমি কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি ছিলেন।
২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর রাতে বুয়েটের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবরার ফাহাদকে ছাত্রলীগের একদল নেতাকর্মী পিটিয়ে হত্যা করেন। হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার দায়ে ২০২১ সালের ৮ ডিসেম্বর বুয়েটের ২০ শিক্ষার্থীকে মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত। এ মামলায় আরও পাঁচ শিক্ষার্থীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
নিম্ন আদালতের রায় খতিয়ে দেখতে ডেথ রেফারেন্স হিসেবে ২০২২ সালের ৬ জানুয়ারি মামলার নথি হাইকোর্টে পৌঁছায়। গত বছরের ২৮ নভেম্বর হাইকোর্ট বেঞ্চে এ বিষয়ে শুনানি শুরু হয়।
আজ সোমবার বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিতকরণের জন্য নিম্ন আদালতের নথি) এবং এ মামলায় দণ্ডিত আসামিদের দায়ের করা আপিল শুনানি শেষে এটি কিউরিয়া অ্যাডভাইজারি ভল্ট (অর্থাৎ যেকোনো দিন রায় ঘোষণা করা হবে) হিসেবে রেখে দেন।
আবরার ফাইয়াজ যমুনা নিউজকে জানায়, শুনানিতে আসামিপক্ষের কোনো আইনজীবী আদালতে ছিল না, তা দেখে আদালত বিষয়টি জানতে চান। তখন রাষ্ট্রপক্ষ হাইকোর্টকে জানায় মুনতাসির আল জেমি ৬ আগস্ট জেল থেকে পালিয়েছে। উৎস: যমুনা টেলিভিশন।