বুধবার সকাল ১০টায় সাবেক মন্ত্রী আনিসুল হক, ফারুক খান, দীপঙ্কর তালুকদার, পুলিশের সাবেক এসপি তানভীর সালেহীন ইমনসহ অন্যান্য আসামিদের ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এমএ আজহারুলের আদালতে তোলা হয়। এ সময় তাদের গায়ে পুলিশের জ্যাকেট, হাতে হাতকড়া পরা ছিল। ১০টা ৮ মিনিটে বিচারক এজলাসে আসেন। এরপর একে একে আসামিদের গ্রেফতার দেখানোর আবেদন ও রিমান্ড শুনানি শুরু হয়।
যুবদল নেতা শামীম হত্যা মামলায় পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক সাবেক প্রতিমন্ত্রী দীপঙ্কর তালুকদারকে সাত দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন আদালত। এ রিমান্ড কার্যকর করতে আদালত থেকেই যেন নিয়ে যাওয়া হয় সে বিষয়ে দীপঙ্করকে পরামর্শ দেন সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।
পুলিশ কর্মকর্তা তানভীর সালেহীন ইমনের ৭ দিন রিমান্ড নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেওয়ার পর উত্তরায় ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি কলেজের শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল মাহিন (১৬) হত্যা মামলায় সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের ৫ দিনের রিমান্ড নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন আদালত।
এরপর পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক সাবেক প্রতিমন্ত্রী দীপঙ্কর তালুকদারের রিমান্ড বিষয়ে শুনানি শুরু হয়। তদন্ত কর্মকর্তা ৭ দিন রিমান্ড আবেদন করেন। আসামিপক্ষ রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
শুনানি শেষ হলে দীপঙ্কর তালুকদার তার আইনজীবীকে ডেকে জিজ্ঞাসা করেন, ‘রিমান্ড কবে নিবে?’ জবাবে আইনজীবী বলেন, ‘এটা বলতে পারছি না’। তখন দীপঙ্কর আইনজীবীকে বলেন, ‘আজকে নিবে না?’ একথা বলার সময় পাশেই ছিলেন সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। এ সময় আনিসুল কাছে এসে দীপঙ্করকে বলেন, ‘আজকে এখান থেকেই (রিমান্ড) নিতে বলেন, কারাগার থেকে নিলে হয়রানি বেশি’। তখন আইনজীবীকেও ইশারায় বলেন- তিনি যেন আইওকে (মামলার তদন্ত কর্মকর্তা) একথা বলেন। উত্তরে আইনজীবী বলেন, ‘জ্বী- আমি কথা বলছি’।
শুনানি শেষে তাদের সবাইকে চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের গারদখানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
এর আগে গত ১০ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর সোবহানবাগ থেকে তাকে গ্রেফতার করে ডিবি পুলিশ। সেদিন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের মতিঝিল জোনাল টিমের সাব-ইন্সপেক্টর ফেরদৌস আলম তার সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। তবে মূলনথি না থাকায় রিমান্ডের বিষয়ে শুনানি হয়নি। নথি প্রাপ্তি সাক্ষেপে রিমান্ডের বিষয়ে শুনানির জন্য রাখেন আদালত।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা গেছে, ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচি অনুযায়ী ঢাকায় মহাসমাবেশ ডাকা হয়। মহাসমাবেশকে পণ্ড করার জন্য একই দিনে আওয়ামী লীগ পালটা সমাবেশ ডাকে। বিএনপি নেতাকর্মীদের হত্যা ও গুম করার উদ্দেশ্যে পুলিশের সহায়তায় মহাসমাবেশে হামলা চালানো হয়। হামলায় যুবদল নেতা শামীম নিহত হন। এ ঘটনায় ২০২৪ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর রাজধানীর পল্টন থানায় একটি মামলা করা হয়।
আপনার মতামত লিখুন :