জুলাই-আগস্টে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের মামলায় আসামিদের পক্ষে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়েছেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না। মৃত্যুর গুজবের মধ্যে আজ মঙ্গলবার হাসপাতাল থেকে আদালতে হাজির হন তিনি। তাঁর বাসায় হুমকি দেওয়া হচ্ছে জানিয়ে আদালতের কাছে নিরাপত্তা চেয়েছেন তিনি।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ বেশ কয়েকজন আসামির বিরুদ্ধে আজ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত প্রতিবেদন জমার দিন ধার্য ছিল। কিন্তু প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে সময়ের আবেদন করলে বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল দুই মাস সময় দেন।
শুনানিতে হাজির হয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেন, ‘আমি হাসপাতাল থেকে এসেছি। আসামিদের সঙ্গে মামলার বিষয়ে আলোচনা করতে চাই।’ আদালত তাঁর আবেদন মঞ্জুর করেন।
একপর্যায়ে তিনি বলেন, ‘আজ সকালে সামাজিক মাধ্যমে আমার মৃত্যুর খবর রটানো হয়েছে। আমি চাই যাতে স্বাভাবিক মৃত্যু হয়; ইমানের সঙ্গে যেন মৃত্যু হয়। আমার বাসায় হুমকি আসে। যদি ট্রাইব্যুনালের কিছু করার থাকে, আশা করি সেটি দেখবেন।’
শুনানিতে আদালতকে ‘মাই লর্ড’ বা ‘লর্ডশিপ’ সম্বোধন করা নিয়ে আপত্তি জানান মানবাধিকার নিয়ে বরাবর সোচ্চার আইনজীবী জেড আই খান পান্না।
আদালতের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনারা বাধ্য করছেন লর্ডশিপ বলতে। আমার লর্ডশিপ একজন। মানুষ মানুষের প্রভু হতে পারে না।’
তখন ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমরা সব পরিবর্তন করেছি, কেন মাই লর্ড পরিবর্তন হবে না। আমি ব্যক্তিগতভাবে এটি পছন্দ করি না। আপনারা বিকল্প যেকোনো শব্দ ব্যবহার করতে পারেন।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সাবেক ১১ মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীসহ ১৬ জনকে আজ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
তাঁদের মধ্যে ছিলেন সাবেক মন্ত্রী আনিসুল হক, আমির হোসেন আমু, শাহজাহান খান, কামরুল ইসলাম, লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খান, আব্দুর রাজ্জাক, রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনু, কামাল আহমেদ মজুমদার, গোলাম দস্তগীর গাজী, ডা. দীপু মনি ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। এর বাইরে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান ও তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী এবং আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক ও সাবেক স্বরাষ্ট্রসচিব জাহাঙ্গীর আলম।
মঙ্গলবার রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। সঙ্গে ছিলেন প্রসিকিউটর গাজী এম এইচ তামিম, বি এম সুলতান মাহমুদ ও তারেক আব্দুল্লাহ।
চিফ প্রসিকিউটরের আবেদনে মামলার প্রতিবেদন জমা দিতে আগামী ২০ এপ্রিল পর্যন্ত সময় দেন আদালত।
আপনার মতামত লিখুন :