বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিতে আনোয়ার হোসেন পাটোয়ারী হত্যায় মিরপুর মডেল থানার মামলায় সাবেক মন্ত্রী ও জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেননকে ফের ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিএম ফারহান ইশতিয়াকের আদালত এ আদেশ দেন। এদিন সকাল ১০ টার দিকে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় ক্ষমতাশালী এই দুই শরিক দলের নেতাদের কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। কড়া পুলিশি নিরাপত্তায় তাদের আদালতে এনে কাঠগড়ায় রাখা হয়। কাঠগড়ায় আসার পরই ইনু ও মেনন তাদের আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলতে থাকেন।
এ সময় হাসানুর হক ইনু তার আইনজীবী মোহাম্মদ সেলিমকে বলেন, ‘আগামীকাল বিয়ের অনুষ্ঠান (ভাতিজির) হওয়ার কথা। আমি কারাগারে আছি। বিয়ে যেন আটকে না থাকে। তাদেরকে বলে দিও, আমি কারাগারে থাকলেও বিয়ের অনুষ্ঠান যেন করে ফেলে। শুভ কাজে দেরি করার দরকার নেই।’
কার বিয়ের কথা বলছিলেন জানতে চাইলে আইনজীবী বলেন, ‘হাসানুল হক ইনুর ভাতিজির বিয়ে।’
এছাড়া আইনজীবীদের কাছে তিনি নিজের বিভিন্ন মামলার বিষয়ে খোঁজ খবর নেন। আমেরিকা থেকে আসা এক ব্যক্তি ইনুর সঙ্গে কথা বলতে কাঠগড়ার পাশে দাঁড়ান। এ সময় পুলিশ বুঝতে পেরে তাকে সরিয়ে দেন। আইনজীবী সেলিম জানান, সরিয়ে দেওয়া ব্যক্তি ইনুর রাজনৈতিক একজন কর্মী।
এরপর এদিন ইনু ও মেননের বিরুদ্ধে আনোয়ার হোসেন পাটোয়ারী হত্যায় মিরপুর মডেল থানার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক নাসির উদ্দিন সরকার তাদের ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। এ সময় ইনুর আইনজীবী আদালতে শুনানিতে বলেন, আন্দোলনের সময় আসামি ইনু এমপি ছিলেন না। আন্দোলনের সময় তিনি কোনো হত্যার নির্দেশ দেননি। বরং তিনি যৌক্তিক আন্দোলনের পক্ষে ছিলেন। আসামি ইনু পাকিস্তান পিরিয়ডে নামকরা ফুটবলার ছিলেন। তিনি গোলরক্ষক ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি খেলা ছেড়ে বঙ্গবন্ধুর ডাকে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। তিনি একজন খ্যাতিমান বর্ষিয়ান রাজনীতিবীদ। তার বয়স হয়েছে। তাকে জামিন দেন।
এ সময় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী রিমান্ডের জোর দাবি জানান। শুনানি শেষে বিচারক তাদের তাদের তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
রিমান্ডের আদেশ শুনে হাসেন ইনু। এরপর তাদের হাতে হাতকড়া, বুকে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট ও মাথায় হেলমেট পরিয়ে হাজতখানায় নেওয়া হয়।
নিয়ে যাবার সময় সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনুকে কালবেলা থেকে প্রশ্ন করা হয়, আপনি নাকি খেলোয়াড় ছিলেন। এর উত্তরে তিনি বলেন, ‘কি আর বলবো, যেই লাউ সেই কদু।’
পরে এ সাংবাদিক তাকে প্রশ্ন করেন। আপনি কোন পক্ষে। উত্তরে তিনি মুচকি হেসে বলেন, ‘আমি লাউ, কদু দুটিরই বিপক্ষে’। এরপর তার পাশে আইনজীবী, পুলিশ ও সাংবাদিকের মাঝে হাসির রোল পড়ে যায়। হাতে থাকেন ইনু ও মেননও।
এ সময় মেননের কোনো বক্তব্য আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি আর কি বলব’।
এদিকে মামলা সূত্রে জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ৫ আগস্ট মিরপুর গোল চত্বর এলাকায় গুলিতে নিহত হন আনোয়ার হোসেন পাটোয়ারী। এ ঘটনায় তার বাবা আল আমিন পাটোয়ারী মিরপুর মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন। উৎস: কালবেলা।
আপনার মতামত লিখুন :