ভ্যাট বৃদ্ধির ফলে মানুষের ওপর চাপ সৃষ্টি হয়েছে বলে স্বীকার করেছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। তবে কিছু প্রতিবন্ধকতার কারণে এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে বলে জানান তিনি। একই সঙ্গে অভিযোগ করেন, অনেক ব্যবসায়ী বাস্তবে যতটা না ভ্যাট বেড়েছে, তার চেয়ে বেশি হারে পণ্যের দাম বাড়াচ্ছেন।
আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ে অর্থনৈতিক বিষয়–সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সভা ও সরকারি ক্রয়–সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন অর্থ উপদেষ্টা। তিনি জানান, আগামী বাজেটে ভ্যাট সংক্রান্ত বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করা হবে এবং তখন এ বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ সিদ্ধান্ত দেওয়া হবে।
সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন খাতে ভ্যাট ছাড় দেওয়া হচ্ছিল, যা আর উৎসাহিত করতে চান না। এর ফলে কিছু পণ্যের দাম বেড়েছে এবং কিছু মানুষ কষ্টে পড়েছে। তবে সরকারের মূল লক্ষ্য মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখা।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, মূল্যস্ফীতি সহনীয় পর্যায়ে আসতে আরও দুই থেকে তিন মাস লাগতে পারে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানি অব্যাহত রাখার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, এবং জুন মাস নাগাদ মূল্যস্ফীতি ৬ থেকে ৭ শতাংশে নেমে আসতে পারে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
অর্থ উপদেষ্টা আরও বলেন, টাকার সরবরাহ বেশি থাকা, সরবরাহ ব্যবস্থায় সমস্যা এবং অন্যান্য অর্থনৈতিক কারণেও মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। তবে সরকার নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ বাড়াতে আমদানির উদ্যোগ নিচ্ছে এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা করে বৈদেশিক মুদ্রার সরবরাহ নিশ্চিত করার চেষ্টা করছে। চাল, ডাল, সয়াবিন তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানি নির্বিঘ্ন রাখতে সরকার কাজ করছে।
ভ্যাট বৃদ্ধির পেছনে অর্থনৈতিক অবস্থা এবং আর্থিক খাতে অনিয়মের প্রভাব রয়েছে বলে মনে করেন তিনি। বিশেষ করে ব্যাংক খাতের দুর্নীতি এবং অর্থ চুরির কারণে কঠোর ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারত। বর্তমানে মাত্র ১২টি ব্যাংক কার্যকরভাবে পরিচালিত হচ্ছে, বাকিগুলো সংকটের মধ্যে রয়েছে।
এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় অন্তর্বর্তী সরকার অর্থ সংস্থানের বিভিন্ন উপায় খুঁজছে। বিশেষ তহবিল গঠন করে সিএমএসএমই খাতে ঋণপ্রবাহ বৃদ্ধির পরিকল্পনাও রয়েছে বলে জানান অর্থ উপদেষ্টা।
আপনার মতামত লিখুন :