মাসুদ আলম : রাজধানীর দক্ষিণখানে ১৩ বছরের এক কিশোরীকে অপহরণের পর পৈশাচিকভাবে গণধর্ষণ করে হত্যার ঘটনায় জড়িত দুইজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এছাড়া ভিকটিমের বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার করেছে ডিএমপির দক্ষিণখান থানা পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতরা হলো- রবিন হোসেন (৩২) ও মো. রাব্বী মৃধা (২৬)। গত ৩০ জানুয়ারি গাজীপুরের শ্রীপুর থানা এলাকায় সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
সোমবার ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে উত্তরা বিভাগের ডিসি রওনক জাহান বলেন, গত ১৬ জানুয়ারি নিজ বাসা থেকে বের হওয়ার পর ১৩ বছর বয়সী অষ্টম শ্রেণীতে পড়ুয়া কিশোরী নিখোঁজ হয়। পরে এ ঘটনায় ১৯ জানুয়ারি দক্ষিণখান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন নিখোঁজ কিশোরীর বাবা।
পরবর্তীতে তিনি স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় জানতে পারেন, ১৬ জানুয়ারি বিকেলে দক্ষিণখানের জয়নাল মার্কেটের সামনে থেকে কয়েকজন মিলে কিশোরীকে একটি প্রাইভেটকারে উঠিয়ে অপহরণ করে নিয়ে গেছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে ২৭ জানুয়ারি দক্ষিণখান থানায় একটি অপহরণের মামলা দায়ের করেন তিনি।
ডিসি আরও বলেন, মামলাটি তদন্তকালে কিশোরীর মোবাইল নম্বরের সূত্র ধরে তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় গত ৩০ জানুয়ারি রবিন হোসেন ও রাব্বী মৃধাকে গাজীপুরের শ্রীপুর থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে গ্রেফতার করে দক্ষিণখান থানা পুলিশ। গ্রেফতারকৃতদের গত ৩১ জানুয়ারি বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ডের আবেদন করলে আদালত তাদের দুইদিনের পুলিশ রিমান্ড মঞ্জুর করেন। পুলিশ রিমান্ডে গ্রেফতারকৃতদের উক্ত ঘটনার বিষয়ে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে রোববার সকালে হাতিরঝিল এলাকার রাস্তার ঢাল হতে ওই কিশোরীর বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার করা হয়।
তিনি বলেন, কিশোরীকে হত্যার দায় স্বীকার করে রবিবার আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করেছে গ্রেফতারকৃত রবিন হোসেন ও রাব্বি মৃধা। জবানবন্দিতে তারা বলে, ঘটনার দিন তারা ভিকটিমকে ফাঁদে ফেলে মহাখালীর একটি বাসায় নিয়ে যায়। এরপর তারা ভিকটিমের হাত, পা ও মুখ কাপড় দিয়ে বেঁধে পাঁচজন মিলে ধর্ষণ করে। পৈশাচিকভাবে ধর্ষণের ফলে কিশোরীটি মারা গেলে লাশ গুম করার পরিকল্পনা করে রবিন ও রাব্বি। পরবর্তীতে তারা লাশটিকে বস্তাবন্দী করে ঘটনার দিন মধ্যরাতে মহাখালী থেকে রিকশায় করে হাতিরঝিলের রাস্তার ঢালে ফেলে দেয়।
মামলার সুষ্ঠু তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। গণধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় জড়িত অন্যান্যদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :