শিরোনাম
◈ তিতুমীরের শিক্ষার্থীরা মহাখালীতে আটকে দিলেন ট্রেন ◈ থানায় না গিয়ে অনলাইনে মামলা দায়েরের ব্যবস্থা চালুর নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার  ◈ ‘জনগণের সাড়া না পেয়ে অনলাইনে হরতাল-অবরোধ করছে আওয়ামী লীগ’ (ভিডিও) ◈ ১১ দাবি নিয়ে এবার মতিঝিলের রাস্তায় শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীরা  ◈ ঘন কুয়াশার কারণে ঢাকায় নামতে না পেরে ৬ ফ্লাইটের সিলেট ও কলকাতায় অবতরণ ◈ রুপির দাম রেকর্ড নিম্নমুখী, ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের ফলে বিশ্বব্যাপী বাণিজ্য যু.দ্ধের আশঙ্কা ◈ বর্তমান পদ্ধতিতে ভোটার তালিকা নিয়ে জালিয়াতির সুযোগ নেই: ইসি সানাউল্লাহ (ভিডিও) ◈ তিতুমীর কলেজের সামনে ফের সড়ক আটকাল শিক্ষার্থীরা ◈ দুর্বার রাজশাহীর মালিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে, পাওনা পরিশোধের আশ্বাস ◈ ‌‘ আন্দোলন করার লোক কোথায়? আপনার দলের নেতাকর্মীরা তো এখন পলাতক’

প্রকাশিত : ০৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ০২:১৪ দুপুর
আপডেট : ০৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ০৫:০০ বিকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

পুরস্কার নেওয়ার পরেই তো ‘বেইজ্জতটা’ করল: সলিমুল্লাহ খান

বিতর্ক আর সমালোচনা যেন পিছু ছাড়ছে না এবারের বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারের। এবার সেই সমালোচনায় যোগ দিয়েছেন খোদ পুরস্কারপ্রাপ্তদের একজন, লেখক অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান।

রোববার এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেছেন, বাংলা একাডেমি যদির ‘আদব-কায়দা না জানে’, তাদের কী করার আছে!

এবার বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার ঘোষণার পর নামের তালিকায় কয়েকজনকে নিয়ে বিতর্ক তৈরি হলে সেই তালিকা স্থগিত করে বাংলা একাডেমি। তারপর তিনজনের নাম বাদ দিয়ে বাকিদের রেখে নতুন করে পুরস্কারের তালিকা ঘোষণা করা হলে তা নিয়েও সমালোচনা হয়।

শনিবার বিকালে অমর একুশে বইমেলার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সাতজনের হাতে এবারের বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার তুলে দেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। সে সময় উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। সভাপতিত্ব করেন বাংলা একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক। স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম।

এরপর অতিথিদের পেছনে পুরস্কারপ্রাপ্তদের দাঁড় করিয়ে সারা হয় পুরস্কারের ফটোসেশন পর্ব।

এবার প্রবন্ধ/গদ্যে পুরস্কার পাওয়া সলিমুল্লাহ খানও ছিলেন পেছনে দাঁড়ানো পুরস্কারপ্রাপ্তদের কাতারে। ওই ছবি নিয়ে নতুন করে সমালোচনা শুরু হয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

পুরস্কার নেওয়ার পরদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাকিম চত্বরে জাতীয় কবিতা পরিষদের এক অনুষ্ঠানে এসে ক্ষোভ ঝেড়েছেন সলিমুল্লাহ খান।

তিনি বলেন, “গতকাল বাংলা একাডেমির পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান নিয়ে অনেকে ট্রল করছে। আমাকে জিজ্ঞেস করছে, ছাত্রদের সামনে বসিয়ে আপনারা পেছনে দাঁড়িয়েছিলেন কেন।

“আমি বলেছি, তারা ক্ষমতার প্রতীক হিসেবে বসেছে। বাংলা একাডেমি যদি মানুষকে সম্মান প্রদর্শন করতে না জানে, আমরা তাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করব নাকি? তাদের আদব-কায়দা যদি না থাকে আমরা কী করব?”

সমালোচনার জবাবে অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান বলেন, “লোকজন বলছে, আপনি পুরস্কার নিলেন কেন? আরে…পুরস্কার নেওয়ার পরেই তো বেইজ্জতটা করছে।”

বাংলা একাডেমি এবং আয়োজকদের সমালোচনা করে লেখক বলেন, “এখানেও দাসত্বের অবসান করতে হবে। দাসত্বের অবসান করতে হলে সবাইকে এক করতে হবে।

“সকলেই যদি আমরা সমান না হই, তাহলে আমরা এক হব না। ২৪ এর আন্দোলনের মূল বৈশিষ্ট্য ছিল বৈষম্যবিরোধী, এটা ‘সাম্য’ কথাটারই একটি অনুবাদ।”

‘স্বাধীনতা, সাম্য ও সম্প্রীতি: বাংলাদেশের কবিতা’ শীর্ষক আলোচনার মূল বক্তব্যে সলিমুল্লাহ খান সাহিত্যের নানা বিষয়েও কথা বলেন।

জাতীয় কবিতা পরিষদের এ আয়োজনে তিনি বলেন, “কবিতা হল পুরোনো পরিচিত কথার নব রূপায়ণ ও নব নির্মাণ। আমাদের কবিরা অতীতেও অনেক কবিতা লিখেছেন, এর দীর্ঘ ইতিহাস আছে। তবে সম্প্রতি জুলাই আন্দোলনে আমাদের কবিতা মঞ্চ থেকে দেয়ালে চলে গেছে।”

কবিতা পরিষদের ইতিহাস বর্ণনা করে তিনি বলেন, “এরশাদ সাহেব এশীয় কবিতা উৎসব করছিলেন। এর প্রতিরোধে দেশের কবিরা রাস্তায় জাতীয় কবিতা পরিষদ গড়ে তোলে।

“তখন কবি শামসুর রাহমানসহ অন্যান্য নেতৃস্থানীয় কবিরা ছিলেন। এরশাদ সাহেবের সঙ্গে প্রশংসিত কবি আল মাহমুদ, ফজল শাহাবুদ্দিন, সৈয়দ আলী আহসান ছিলেন। ওই প্রেক্ষিতেই কবিতা পরিষদ গড়ে ওঠে। তারপর কবিতা পরিষদের মাঝখানে একটি অভ্যুত্থান হয়। সেখান থেকে নতুন দল গায়ের জোরে ক্ষমতা দখল করে। ২০২৪ সালের আন্দোলনের তাদের ক্ষমতাচ্যুতি ঘটেছে এবং কবিতা পরিষদ পুনরায় গড়ে উঠছে।”

তার মতে, “কবিতায় একইসঙ্গে দুটো জিনিস চাই। কবিতাকে একই সঙ্গে নতুন হতে হবে এবং চিরস্মরণীয় হতে হবে।

“কবিতা পরিষদ যদিও মৃত সংগঠন, এটির স্লোগানটা বেশ জীবিত হয়ে উঠেছে। পুরোনো জিনিস মাঝেমধ্যে জীবিত হয়ে উঠে। কাজী নজরুলের কবিতা যেমন জীবিত হয়ে উঠেছে দেয়ালের মধ্যে।"

কবিদের লক্ষ্য কবিতাকে ‘স্লোগানে পরিণত করা’ মন্তব্য করে তিনি বলেন, “সব কবি তার কবিতাকে স্লোগানে পরিণত করতে চান। সবাই একটা বিখ্যাত লাইন লিখতে চায়। যেমন, ‘এখন যৌবন যার, যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়’ কবিতার লাইনটি স্লোগানে পরিণত হয়েছে।”

সলিমুল্লাহ খানের বক্তব্যে উঠে আসে সমাজ ও রাজনৈতিক কাঠামোর নানা সমালোচনাও।

তিনি বলেন, “গত স্বৈরাচারী আওয়ামী সরকারের স্লোগান ছিল ‘উন্নয়ন না গণতন্ত্র’। তারা বলেছিল গণতন্ত্র নয়, উন্নয়ন।

“একে তারা বিকল্পে পরিণত করেছিল। তারা বলেছিল, শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প নেই। ছেলেমেয়েরা জবাব দিয়েছে বিকল্প- ‘আমি, তুমি ও আমরা’। এটিই নতুন একটি কবিতা হয়ে উঠেছে। যদি ‘সেন্স’ থাকে তাহলে বুঝতে পারব, কবিতাটা কোথায়। একটা জবাবের মধ্যে কবিতা রচিত হয়েছে।”

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বক্তব্যে অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক। তিনি বলেন, গোটা দক্ষিণ বিশ্বে বাংলা ভাষা তুলনামূলকভাবে ‘অনেক উন্নত’৷

“আমাদের কবিরা যদি অসাধারণ, ‘ক্ল্যাসিক’ ও কালজয়ী কিছু লেখেন, তবে কেউ কেউ সেখানে উত্তীর্ণ হতে পারেন। সেটা আমাদের ভাষা ও জাতির জন্য অসাধারণ কৃতিত্বের কাজ হবে।”

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন লেখক মঞ্জুরুর রহমান ও কুদরতে খোদা। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সোহরাব হাসান।

সূত্র : বিডিনিউজ২৪

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়