শিরোনাম
◈ জাতীয় পরিচয়পত্রের অসুন্দর ছবিটি ঘরে বসেই বদলাবেন যেভাবে ◈ বাংলাদেশ হয়ে সেভেন সিস্টার্সে যাওয়ার রেল প্রকল্প স্থগিত করলো ভারত ◈ ‘৫ বছরে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে খরচ ২৩০০ কোটি, তা ৭০০ কোটিতে নামানো সম্ভব’ ◈ নারী সংস্কার কমিশনের কিছু সুপারিশ কোরআন-হাদিসের লঙ্ঘন, বললেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ◈ রামপালের চেয়ে ৬০% কম: মাতারবাড়ী বিদ্যুৎকেন্দ্রে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম ৮.৪৫ টাকা ◈ সোনার খোঁজে নেপাল যা‌চ্ছে বাংলাদেশ টেবিল টেনিস দল ◈ সংসদীয় সংস্কারে রাষ্ট্রপতির স্বাধীন সিদ্ধান্তের পক্ষে বিএনপি, ২২ এপ্রিল তৃতীয় দফা বৈঠক ◈ ডিসেম্বরে নির্বাচন আদায়ে সোচ্চার বিএনপি, সর্বদলীয় জনমত গঠনে জোর, চলছে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ ◈ সিলেটে বাংলা‌দেশ অলআউট ১৯১ রা‌নে, দিন শে‌ষে জিম্বাবুয়ের সংগ্রহ বিনা উই‌কে‌টে ৬৭ ◈ সংসদ সদস্যদের দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে ভোট দেওয়ার সুযোগ চায় বিএনপি: চারটি বিষয়ে ব্যতিক্রম প্রস্তাব

প্রকাশিত : ২২ জানুয়ারী, ২০২৫, ০৫:০৯ বিকাল
আপডেট : ০৯ এপ্রিল, ২০২৫, ০৭:০০ সকাল

প্রতিবেদক : নিউজ ডেস্ক

গায়েবি মামলা প্রত্যাহার হচ্ছে, গুরুত্ব পাচ্ছে তিন বছর আগে ও পরের মামলা

মহসিন কবির: আওয়ামী লীগ ফ্যাসিস্ট সরকার ১৫ বছরে বিভিন্ন সময়ে বিরোধী নেতাকর্মীদের নামে মামলা দায়ের করেছে। এসব মামলায় প্রতিনিয়ত আদালতে হাজিরা দিতে হচ্ছে। অবশেষে মামলা পত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।  

জানা গেছে, বিরোধী নেতাকর্মীদের নামে দায়ের হওয়া ২ হাজার ৫০০ গায়েবি ও হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার করা হচ্ছে। বিশেষ করে ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে-পরে দায়ের হওয়া মামলা গুরুত্ব দিয়ে প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল জানিয়েছেন, সাইবার সিকিউরিটি আইনে দায়ের করা স্পিচ অফেন্স সংক্রান্ত সব মামলার মধ্যে ৩৩২টি মামলার বিচার কার্যক্রম চলছে। ৫৭টি মামলা তদন্তাধীন রয়েছে। এরই মধ্যে ১১৩টি মামলা প্রত্যাহার করা হয়েছে। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সব মামলা প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে। একই সঙ্গে সাইবার সিকিউরিটি আইন সংস্কারেরও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ নিয়ে তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় কাজ করছে।

হয়রানিমূলক মামলার বিষয়ে আইন উপদেষ্টা বলেন, দেশের ২৫ জেলায় আড়াই হাজার রাজনৈতিক হয়রানিমূলক বা গায়েবি মামলা চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব মামলায় লাখ লাখ মানুষকে আসামি করা হয়েছে। এসব গায়েবি মামলা চিহ্নিত করতে আমরা ৪টি ভাগে ভাগ করেছি। প্রথমত, মামলাগুলো পুলিশ করেছে কিনা। দ্বিতীয়ত, এসব মামলার বেশির ভাগই ছিল বিস্ফোরক ও অস্ত্র আইনে, পুলিশের ওপর হামলা ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়া। তৃতীয়ত, এসব মামলায় অনেক বেশি আসামি অর্থাৎ অজ্ঞাতনামা হাজার হাজার আসামি থাকে। চতুর্থত, বিরোধী দলগুলোর বড় কোনো সমাবেশের আগে বা পরে এবং ফ্যাসিস্ট সরকারের সময়ে তিনটি ভুয়া জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ও পরে করা মামলাগুলো আমলে নেওয়া হয়েছে। এসব প্রবণতাকে আমলে নিয়ে ২৫ জেলায় ২ হাজার ৫০০ মামলা চিহ্নিত করা হয়েছে। আশা করছি, ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে বাকি মামলাগুলো প্রত্যাহার করা সম্ভব হবে।

আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বছরে দায়ের করা রাজনৈতিক তথা গায়েবি মামলার তালিকা চেয়ে জেলা ও মহানগরের পাবলিক প্রসিকিউটর বরাবর চিঠি দেয় আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়। চিঠিতে মামলার পূর্ণাঙ্গ তথ্য ও বর্তমান অবস্থা জানতে চাওয়া হয়।

গত ২ ডিসেম্বর মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের সলিসিটর অনুবিভাগ থেকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, ২০০৯ সালের ৬ জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট পর্যন্ত বিশেষ করে ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ও পরে রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও অন্যদের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মামলা করা হয়; যা গায়েবি মামলা নামে পরিচিত। এসব মামলার সঠিক ও পূর্ণাঙ্গ তথ্য না থাকায় প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না।

চিঠিতে আরও বলা হয়, ছক আকারে মামলার তালিকা পাঠাতে হবে। তাতে মামলার বাদীর নাম-পরিচিতির পাশাপাশি বর্তমান অবস্থা এবং মামলা তদন্তাধীন না বিচারাধীন, সে বিষয়ে তথ্য থাকতে হবে।

মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের সলিসিটর অনুবিভাগ (জিপি-পিপি শাখা) সূত্র জানায়, সব জায়গা থেকে মেইলের মাধ্যমে মামলার তালিকা পাঠানো হয়। পরে মেইলগুলো চেক করে দ্রুত পূর্ণাঙ্গ তালিকা তৈরি করা হয়।

জানা গেছে, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা নিয়ে রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয়। এ লক্ষ্যে গত সেপ্টেম্বর মাসে দুটি কমিটি গঠন করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ। এর মধ্যে একটি জেলা পর্যায়ের কমিটি, অন্যটি মন্ত্রণালয় পর্যায়ের কমিটি। রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের জন্য আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে জেলা পর্যায়ের কমিটির সভাপতি জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আবেদন করতে বলা হয়। জেলা কমিটির কাছ থেকে সুপারিশপ্রাপ্তির পর সেসব পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা এবং প্রত্যাহারযোগ্য মামলা চিহ্নিত করে তালিকা প্রস্তুত করা ও মামলা প্রত্যাহারের কার্যক্রম গ্রহণ করবে মন্ত্রণালয় পর্যায়ের কমিটি।

রাজনৈতিক মামলার বিষয়ে আইনজ্ঞরা বলেছেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা দায়েরে আইনি প্রক্রিয়ার অপব্যবহার করা হয়েছে। সুতরাং সরকারের এ উদ্যোগ সম্ভাব্য অন্যায় সংশোধনের একটি উপায়। সরকারকে স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়